ফাদার সুনীল রোজারিও। খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় কেন্দ্র, রাজশাহী সিটি, বাংলাদেশ।
১৯ জুন ছিলো প্রভু যিশুর হৃদয়ের পর্ব। আজকের মঙ্গলবাণী পাঠের শুরুতেই সাধু মথি বলেন, “হে পিতা, হে স্বর্গমর্ত্যরে প্রভু, আমি তোমার বন্দনা করি, কারণ স্বর্গরাজ্যের এই সমস্ত কথা তুমি জ্ঞনী ও বুদ্ধিমান লোকদের কাছে গোপন রেখেছ আর প্রকাশ করেছ নিতান্ত শিশুদেরই কাছে।” যিশু বলতে চান, সাংসারিক জ্ঞান-বুদ্ধিতে যারা জ্ঞনী-বুদ্ধিমান, তারা অনেক সময় তাদের পান্ডিত্য নিয়ে অহংকার করেন। যুক্তি-তর্ক দিয়ে ঈশ্বরকে বুঝতে চান। তাই যিশুর শিক্ষা তাদের পক্ষে বোঝা সম্ভব হয় না। কিন্তু শিশুর মতো যারা, তাদের হৃদয় নম্্র এবং সরল- তাই তারা ঈশ্বরের কাছ থেকে লাভ করেন বিশেষ ক্ষমতা, আধ্যাক্তিক বোধশক্তি। ফলে তারাই ঐশ রাজ্যের কথা সত্য বলে হৃদয়ে ধারণ করতে পারেন।
রাজশাহী ক্যাথলিক ডাইয়োসিসের মধ্যভিকারিয়ার যাজক, ব্রাদার ও ব্রতধারিনীদের নিয়ে দিনব্যাপী, খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় কেন্দ্রে এই সম্মেলন অুনষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যাজক ও ধর্মীয় ব্রতধারী কমিশনের আহ্বায়ক ফাদার মাইকেল কোড়াইয়া এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশপ জের্ভাস রোজারিও। সকালে সম্মেলনের প্রথম পর্ব শুরু হয় পবিত্র ঘন্টা এবং পবিত্র সাক্রামেন্তের আর্শীবাদের মধ্যদিয়ে।
আজ ছিলো সাধু জের্ভাসের পর্বদিন। দ্বিতীয় পর্বের শুরুতেই কেক কেটে ও বিশপকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। সাধু জের্ভাস হলেন ইটালির মিলান নগরীর প্রতিপালক। দ্বিতীয় পর্ব ছিলো আলোচনা ও সহভাগিতা। এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ফাদার লাজারুস রোজারিও। তিনি খ্রিস্টযাগের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। ফাদার বলেন, “খ্রিস্টাযাগ হলো ভালোবাসা প্রকাশ, যার মধ্যদিয় ভালোবাসা পূর্ণতা লাভ করে।” ফা. লাজারুস করোনা সংকটকালে, কাজের মধ্যদিয়ে খ্রিস্ট বিশ্বাসের প্রমাণ রাখার কথাও উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানের মাঝে অনেকে তাদের জীবন সহভাগিতা করেন। সবশেষে বিশপ জের্ভাস রোজারিও তাঁর সমাপনী বক্তব্যে বলেন যে, যাজক ও ব্রতধারী / ব্রতধারিনী হিসেবে আমাদের খ্রিস্টের সাক্ষ্য বহন করতে হয়। আমাদের কাজ দেখে জনগণ আমাদের উপর তাদের বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে পারেন। আপদকালীন সময়েও আমাদের প্রমাণ করতে হবে, আমরা খ্রিস্টের শিষ্য। এটা করতে গিয়ে আমাদের অন্যের পাশ থাকতে হবে এবং প্রার্থনার মধ্যদিয়ে সংঘবদ্ধ জীবন যাপন করতে হবে।
আজকের এই সম্মেলনে মধ্যভিকারিয়া থেকে বিশপসহ মোট ৩৯জন ফাদার, ব্রাদার ও সিস্টার উপস্থিত ছিলেন। দূপুরের আহারের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
যাজক ও ধর্মীয় ব্রতধারী সম্প্রদায়ের সম্মেলন
Please follow and like us: