কভিড- ১৯, গত ডিসেম্বরে চীনের উহান সিটি থেকে শুরু করে এখন বৈশ্বিক সংকট তৈরি করেছে। এই সংকট একদিন থাকবে না কিন্তু এর রেশ থেকে যাবে। ইতিহাস মনে রাখবে- এমন সভ্যতার যুগে একটা ভাইরাসের কাছে মানুষ কতো অসহায়, এখনো কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষেধক নেই। করোনা ভাইরাসের ছোবল যতোই দীর্ঘ হচ্ছে ততোই আলোচিত হচ্ছে পরবর্তী বিশ্ব নিয়ে। বিজ্ঞজন মনে করছেন- বড় রকমের একটা পরিবর্তন আসবে বিশ্বে আসার অপেক্ষায়। আজকের সভ্যতার মধ্যে বেশ কিছু যোগ বিয়োগ হবে। এই আলোচনাগুলোর মধ্যে- চিকিৎসা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, অর্থনীতি, রাজনীতি ও ধর্মকর্ম অন্যতম। আজকের আলোচনায় এই বিষয়গুলোর উপর কিছু অভিমত পাঠকদের কাছে তুলে ধরছি।
উহান সিটি পুরো লক ডাউন রেখে চীন যখন ভাইরাস মুক্ত হওয়ার জন্য তলে তলে নানা প্রস্তুতি এবং সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলো- বিশ্ব ভেবেছিলো এটা আর তেমন কী, ওদের সমস্যা ওরা বুঝবে। এই প্রস্তুতি এবং সিদ্ধান্ত না নেওয়ার খেসারত দিতে হচ্ছে অনেক দেশকে। তবে শেষ পযর্ন্ত উপায় না পেয়ে, জনগণের চাপে পড়ে তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। বহুদিন ধরে আমরা দেখে আসছি সরকারকে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে বছরের পর বছর সময় লাগে, আলোচনা লাগে, বিদেশ সফর লাগে। এবার দেখলাম করোনা ভাইরাসের কারণে নীতিনির্ধারকদের কিছু সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগেনি, ভেন্টিলেটর কেনার জন্য বিদেশ সফর লাগেনি। কতো অল্প সময়ের মধ্যে হাসপাতাল তৈরি, ভেন্টিলেটর আমদানিসহ আনুসঙ্গিক উপকরণগুলো জোগাড় করা সম্ভব হয়েছে, ভেবে দেখুন।
উন্নয়নশীল বা মধ্য-আয়ের দেশগুলোতে কয়টা উপযুক্ত হাসপাতাল আছে এবং সেখানে কতো হাজার রোগিকে সেবা দেওয়া সম্ভব ? বাংলাদেশের মতো ঘনবসতী দেশে লক ডাউন হতে পারতো বড় ধরণের প্রতিরোধ এবং হাসপাতালের বিকল্প ব্যবস্থা। মহামারির গুরুত্ব না ভেবে শুধু ছুটি, লক ডাউন, এগুলোর কথা বলা হয়েছে কিন্তু কোনো সমন্বয় দেখা যায়নি। হাতে বহু সময় থাকতেও সময়টা কাজে লাগেনি। এখন দেশে দেশে যে রেড জোন, ইয়েলো জোনের ফরমূলা আসছে, এটা তেমন কার্যকর পদক্ষেপ মনে হয় না। এই জোনভিত্তিক সিদ্ধান্তটা শুরুতে নিলে কিছুটা কার্যকর হতো। এখন বিধায়করা বুঝেছেন, সিদ্ধান্ত নেওয়া শুধু আলোচনা নয়, কালক্ষেপণ নয়- রাষ্ট্রের কল্যাণ জড়িত। সারা পৃথিবীতেই চিকিৎসা সেবায় ভবিষ্যতে অনেক পরিবর্তন আসবে।
এই করোনা ভাইরাস নিয়ে বহু উন্নত দেশে নিজেদের সুরক্ষা নিয়ে অধিক ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে। এটা একটা দায়িত্বশীল রাষ্ট্রের কাজ, সেটা ঠিক আছে- কিন্তু গোটা মানব জাতির ভবিষ্যৎ বাদ দিয়ে নয়। নানা অনৈক্য ও অজুহাত দেখিয়ে জোট থেকে বেরিয়ে গেলে বৈশ্বিক বিপদ আরো ঘনিয়ে আসে- এই শিক্ষাটাও এবার কম হয়নি। আজকের বিশ্বটা অনেক আগেই অভ্যস্থ হয়ে গিয়েছিলো সর্ম্পক রেখে এবং জোট বেঁধে চলার। মহামারির কারণে প্রতিবেশীকে বাদ দিয়ে নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে বিপদ আরো ডেকে এনেছে। করোনা সংকট, এই অনৈক্যের মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতার পাঠটা আবার শিখিয়ে দিয়ে গেলো। কভিড- ১৯ সংকট একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বোঝাপড়ার অভাবে, ঐক্যের অভাবে চীন থেকে উৎপত্তি হওয়া এই ভাইরাস আমেরিকা ঠেকাতে পারেনি। অনৈক্যের কারণে মহামারিটা হাতে সময় নিয়ে থাবা বসাতে পেরেছে মানবজাতিকে এবং দেরি হলেও ঐক্যের উপলব্ধিতে আসছে। অনেকে আবার উল্টো কথা বলছেন। তাদের ভাষায়, এই উপলব্ধিটা ঠিকই আসবে তবে দেরিতে কার্যকর হবে। তার আগে সংকটকালে দেশের যে আর্থিক ক্ষতি হয়ে গেছে তা থেকে উদ্ধারের তাগিদে অনেক দেশ আত্মমুখী হয়ে পড়ছে। সেই সাথে বিশ্বের বড় বড় আর্থিক সহায়তা সংস্থাগুলো অর্থের অভাবে তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে আনছে।
করোনা মহামারির কারণে আফ্রিকান দেশগুলোতে আর্থিক সংকট আরেকটা মহামারি হিসেবে দেখা দিতে পারে। বিশ্বের অন্যত্রও মিশ্র সংকট দেখা দিবে। বিশেষ করে তেল নির্ভর ও শিল্প নির্ভর দেশগুলো মহাসংকটে পড়বে। এশিয়ার অনেক দেশে প্রবৃদ্ধি ইতিমধ্যে ৮ থেকে ২/৩-এ নেমে এসেছে। তবে কৃষিপ্রধান দেশগুলোতে প্রবৃদ্ধি যেখানে গিয়ে ঠেকুক না কেনো- উৎপাদনে অনুকূল পরিবেশ থাকলে বেশি বেগ পেতে হবে না।
দেশে বেকার সমস্যা বৃদ্ধি পেলে সরকারবিরোধী নানা ধরনের বিপ্লপ দেখা দিতে পারে। এতে করে রাজনৈতিক পরিবর্তন আসতে পারে। সেই সাথে স্বৈরাচারী সরকার, একনায়কতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র এমনকী রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণ একতাবদ্ধ হতে পারে। অতীতে দেখা গেছে বিশ্বে প্রতিটি পরিবর্তনের সাথে সাথে গণতন্ত্রের আন্দোলনও জোরদার হয়েছে। করোনা পরবর্তী বিশ্বে গণতন্ত্রের একটা ধাক্কা আসবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত। অন্যদিকে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে নতুন করে আর একটি শরণার্থী ঢেউ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নিশ্চিত করে বলা যায়। জাতীয়তাবাদ বৃদ্ধি পাবে- যদিও এটা একটা জটিল সমীকরণ মনে হতে পারে। গত এক দশকে ইউরোপের বেশ কিছু দেশে উগ্র জাতীয়তাবাদ বৃদ্ধির ইংগীত পাওয়া গেছে। কেউ কেউ মনে করছেন, জাতীয়তাবাদ একটা দেশের রাজনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে- যার অর্থ, দেশটি অন্য দেশের প্রভাবমুক্ত থাকবে এবং সে নিজের দেশের বিষয়টি আগে ভাববে। এই অবস্থায় আবারও অনৈক্যের বিষয়টি এসে যায়। এই জাতীয়তাবাদের সাথে অনেক রাষ্ট্র বিজ্ঞানী বর্ণবাদের বিষয়টিও ভেবে দেখতে চান। তারা বলতে চান- একই বর্ণের মানুষ পৃথিবীর যেখানেই ছড়িয়ে থাকুক না কেনো, তাদের মধ্যে “ব্ল্যাক লাইভস্ ম্যাটারের” মতো এসোসিয়েশন বা সংগঠন গড়ে উঠবে। এই রকম একটা সংহতির মুভমেন্ট গত কিছুদিন ধরে সারা বিশ্বজুড়ে দেখে আসছি। এটাও দেখেছি, সংহতির আন্দোলন কীভাবে সহিংসতায় রূপ নেয়। তবে বিশ্ব একটা ভালো দিকের জন্যও অপেক্ষা করছে যে, বিশ্ব থেকে বর্ণবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতার প্রবণতা কমের দিকে থাকবে।
প্রযুক্তির ব্যবহার বলতে আর সামরিক দিকটা বিবেচনায় থাকবে না। আপদকালীন সময়ে প্রযুক্তির নজরদারি কোনো কোনো দেশে বেশ কাজ দিয়েছে। চীন, দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। সংকটকালে যেসব দেশ প্রযুক্তির ব্যবহার সর্ম্পকে ততো গুরুত্ব দেয়নি, সে দেশগুলোতেও প্রযুক্তি গুরুত্ব পাবে। চীন দেশে কীভাবে স্মার্টফোন ব্যবহার করে মানুষকে প্রযুক্তির আওতায় এনেছে- এটা উদাহরণ হয়ে থাকবে। অনেকে গলায় লকেট পরে, কেউ আবার ক্রুশ পরে, এগুলোর মধ্যেদিয়েও প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে করে সরকার প্রতিটি মানুষের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। প্রযুক্তির কারণে আমি আমার শরীর সর্ম্পকে বা আমার মানসিক অবস্থান সর্ম্পকে যা জানি, সরকারও তাই জানতে পারবে। প্রযুক্তির কারণে ব্যক্তির গোপনীয়তা সরকারের আমলে এসে গেলে, স্বাস্থ্য রক্ষার কারণে জনগণকে তা মানতে হবে। প্রযুক্তি যদি আমার স্বাস্থ্য ঝুকি ২৪ ঘন্টা ধরে দেখিয়ে যেতে পারে, তবে সেই সাথে কোন্ অভ্যাস বা অনিয়মগুলো আমাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে সেটাও জানতে পারবো। প্রযুক্তি আবার অনেক কিছু ঠিকঠাক উপস্থাপন করতে পারে। যেমন- সারা জীবন এই হাত ধোয়ার অভ্যাস ছিলো কিন্তু হাত ধোয়ার কৌশল সর্ম্পকে অবগত ছিলাম না। কিন্তু এই সংকটের সময় তথ্য প্রযুক্তি ঠিকঠাকভাবে দেখালো কীভাবে হাত জীবানুমুক্ত করতে হয়।
প্রযুক্তি কী শুধু সরকার, জনগণকে নজরদারির মধ্যে আনার জন্য ব্যবহার করবে ? যুগটা কিন্তু এখন সম্পূর্ণ অন্যরকম। প্রযুক্তি ব্যবহারে জনগণ কিন্তু সরকার থেকে অনেক এগিয়ে। সুতরাং বিষয়টা এমনভাবে বলা যায় যে, এই সময়ে সরকারের প্রযুক্তি যেমন জনগণকে তার নজরদারির আওতায় সার্বক্ষণিকভাবে রাখতে পারে- একইভাবে জনগণও চাইলে সরকারের পুরো কার্যক্রম নজরদারির আওতায় আনতে পারে। মোট কথা, সামনের দিনগুলোতে প্রযুক্তি অনেক কিছু আরো সহজ করে দেবে।
বিশ্ব বাণিজ্যের সাথে আধিপত্যবাদ প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। বিশ্ব বাণিজ্য, আধিপত্যবাদ এবং রাজনীতি- এই তিন আত্মাকে কিছুতেই আলাদা করা সম্ভব নয়। শক্তিশালী দেশগুলো নরম দেশগুলোতে তাদের সস্তা জাতীয় পণ্য সরবরাহের মধ্যদিয়ে হেফাজতে রাখার একটা ধারা যুগ যুগ ধরে চলে আসছিলো। বিপদে আপদে পাশে দাঁড়ানো, অস্ত্রপাতি দিয়ে সাহায্য করা এবং বুদ্ধি পরামর্শ দেওয়া। কিন্তু এই করোনা ভাইরাসের কারণে নিজের গোয়াল সামাল দেওয়াই যখন কঠিন, তখন অন্যকে নিয়ে আর ভাবে কে। এই শিক্ষা নিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলো অদূর ভবিষ্যতে স্বনির্ভর হয়ে উঠার প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হবে। অন্যদিকে বিশ্ব বাণিজ্যের মুরুব্বিদের মধ্যে নীতি বিরোধের কারণে পারস্পরিক বাণিজ্যে অচলাবস্থায় পড়বে। পাশাপাশি সরকারের থিংক ট্যাংক আরো শক্তিশালী হবে। এই যুগে একটা দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধান কেমন চরিত্রের, বুদ্ধি কতো, তার চেয়ে বেশি গুরুত্ব বহন করে সরকারের থিংক ট্যাংক। সরকারের এই থিংক ট্যাংক গোষ্ঠীটাই আসলে দেশ চালায়।
উপাসনালয়ে মানুষের উপস্থিতি দিয়ে ঈশ্বরভক্তের হার আমলে আনা যাবে না। সাহায্য করা, সেবা করা, ভালোবাসা এগুলোও তো ধর্মের শিক্ষা, মানব ধর্ম। পশ্চিমা বিশ্বে অনেকেই গির্জায় যায় না বলে অভিযোগ শুনি, কিন্তু এই জনকল্যাণ কাজগুলো তারা করে থাকেন। পশ্চিমা দেশে করোনার কারণে একটা ভিন্ন চিত্রও দেখা গেছে। রাস্তায় রাস্তায় হাটু গেড়ে প্রার্থনার চিত্র, পবিত্র সাক্রামেন্ত নিয়ে শোভাযাত্রা, লক ডাউনের কারণে, গির্জাঘর বন্ধ থাকার কারণে ঘরের দেওয়ালে মাথা ঠেকিয়ে প্রার্থনা করার দৃশ্য দেখে অনেকে অনুকরণ করেছেন। দেবালয় বন্ধ থাকলে কী হবে, ঈশ্বরের শ্রবনশক্তি তো আর বন্ধ নয়।
এই সংকটকালে ক্যাথলিক চার্চের একটা উদ্যোগকে বিশ্বের মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছেন। আর সেটি হলো অনলাইন বা স্ট্রিমিং খ্রিস্টযাগ। পোপ ফ্রান্সিস নিজেও ভাটিকান সিটি থেকে অনলাইন প্রার্থনা পরিচালনা করেছেন। পরিবারের প্রতি পোপ তাঁর বাণীতে বলেছেন, “এমনকী সামাজিক মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে অন্যদের আশার বাণী শুনাতে পারি।” কিন্তু একটা প্রশ্ন ইতিমধ্যে অনেকে করে ফেলেছেন- চার্চ এই সুযোগ কতোদিন দিবে? চার্চ হয়তো ভাবছেন, লক ডাউন পুরো উঠে গেলে এই অনলাইন খ্রিস্টাযাগও উঠে যাবে। কারণ চার্চে গিয়ে প্রার্থনায় অংশগ্রহণে একটা মনোযোগ থাকে, কিন্তু ঘরে বসে সম্ভব নয় মেলা কারণে। পোপ এই বিষয়ে ইতিমধ্যে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। এই করোনা ভাইরাসকালে, লক ডাউন, সামাজিক দূরত্ব ও গৃহবন্দির কারণে মানুষ নিজের দিকে তাকানোর সুযোগ পেয়েছে। সবাই একসাথে অসহায় হয়ে যাওয়া, তথা মৃত্যু চিন্তা মানুষকে ধর্মের আঙ্গীনায় যেতে অনুপ্রাণিত করেছে।
তবে একটা বিষয় নিয়ে চার্চের কপালে ভাঁজ পড়েছে। বিবাহ সংস্কার কী তাহলে পরীক্ষার মুখে গিয়ে দাঁড়াবে ? করোনা ডিভোর্স বলে একটা ভোক্যাবেলারি আর্ন্তজাতিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। চলতি শতাব্দির প্রথম দশকেও দেখা গেছে পশ্চিমা বিশ্বে খ্রিস্টমাস হলিডে’র পর বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদনটা বেড়ে যেতো। দ্বিতীয় দশকে এসে সামগ্রিক বিবেচনায় এই আবেদনের হার অনেকাংশে কমেছে। এখন শতাব্দির তৃতীয় দশকে এসে করোনা ডিভোর্সের হার বেড়ে যাওয়ার আশংকা তৈরি হচ্ছে। পোপ ফান্সিস করোনা ভাইরাসকালে নারী কর্মীদের প্রতি তাঁর বাণীতে বলেন, “এই গৃহবন্দি অবস্থাকালীন সময়ে নারীরা গৃহসন্ত্রাসের (Domestic violence) শিকার হতে পারেন।” এই প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন,“নারীরা যেসব সংকট মোকাবেলা ক’রে এমন অবস্থায় বসবাস করছে, তা তাদের জন্য অত্যন্ত ভারী দায়িত্ব, ফলে তাদের উপর সন্ত্রাসের একটা ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে।” এই করোনা মহামারিকালে আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যমে নারীদের উপর সন্ত্রাসের ঝুঁকিগুলো কী হতে পারে, তা বলার চেষ্টা করেছে। যেমন- দীর্ঘ সময় এক ঘরে থাকার কারণে মানসিক অবসাদ, শারীরিক নির্যাতন, একে অন্যের প্রতি টান কমে যাওয়া, মতের বিরুদ্ধে গর্ভধারণ, চাকুরী না থাকার কারণ, সন্তানদের নিয়ে ভবিষ্যৎ ভাবনা, বয়স্কদের জীবন নিয়ে আশংকা, ইত্যাদি। পরিবার নিয়ে যারা পালকীয় কাজ করেন তাদের মতে, এই সংকটকালে এবং সংকটউত্তরকালে বিবাহ বিচ্ছেদ আবেদনের বড় অংশ আসবে নারীদের কাছ থেকে।
এই করোনা মহামারিকালে যেমন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে মৃত্যু থেমে নেই, তেমনি সীমান্ত বিবাদ নিযে যুদ্ধের আয়োজনও থেমে নেই। এই বিশ্বটা পুরোপুরি শান্ত না হলে পুরো আশ্বাস নিয়ে বলা সম্ভব নয়- শেষমেষ কোন্ পরিবর্তনটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। পাঠকদের প্রতি রইলো শুভেচ্ছা।

Please follow and like us: