ফাদার সুনীল রোজারিও। খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় কেন্দ্র, রাজশাহী সিটি, বাংলাদেশ।
ক্যাথলিকদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা পোপ ফ্রান্সিস, গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি সেবার বিশেষ আহ্বান জানিয়েছেন। গত ৩০ তারিখে ক্যাথলিক গণমাধ্যম কর্মীদের সম্মেলনে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে, যাদের জন্য দয়ার প্রয়োজন তাদের কন্ঠস্বর হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। পোপ, বিশ্ব ক্যাথলিক মিডিয়া কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তারা যেনো তাদের পেশাদারি কর্মের বাইরে “সম্পুর্ণরূপে অন্যের কল্যাণের জন্যও কাজ করেন।” তিনি বলেন, বিশ্বে ক্যাথলিক গণমাধ্যম প্রয়োজন, কারণ “এমন একটি সংঘর্ষময় ও প্রতিকূল সময় এখন যাচ্ছে, যেখানে ক্যাথলিকদেরও রেহাই নেই।” পোপ বলেন, “মানুষের মধ্যে সুসম্পর্ক সৃষ্টি, জীবন রক্ষা করা, দৃশ্য এবং অদৃশ্য দেওয়াল ভেঙ্গে দিয়ে একটি উপযোগী সংলাপ পরিবেশ তৈরি ক’রে- ব্যক্তির সাথে ব্যক্তি এবং সমাজের সাথে সত্যিকার যোগাযোগ সৃষ্টির জন্য গণমাধ্যম কাজ করতে পারে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, মিডিয়ার উচিৎ হবে, “মন্দ থেকে ভালোটা আলাদা করা,” যাতে একটা অনুকূল সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠতে পারে। পোপ পুনরায় জোর দিয়ে বলেন, “একজন প্রকৃত যোগাযোগ কর্মী নিজেকে যে কোনো অবস্থায়, ব্যক্তি ও গোটা মানব পরিবারের কল্যাণের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে পারেন।” তিনি বলেন, “একজন- প্রকৃত অর্থে গণমাধ্যম কর্মী হয়ে উঠতে পারে না, যতক্ষণ সে যা বলেন তার সাথে সত্য যুক্ত না থাকে।” পোপ ফ্রান্সিস বলেন, “এই মহামারিকালে সাধু পলের কথাই সত্য যে, সব মানুষই একে অন্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত।” তিনি বলেন, “আমরা গত কয়েকটি মাস ধরে অভিজ্ঞতা করে আসছি যে, মিডিয়া কীভাবে মানুষকে কাছে নিয়ে আসছে, দূরত্ব ঘুচিয়ে দিচ্ছে, সম্ভাব্য তথ্য তুলে ধরছে এবং সত্যের দিকে মানুষের হৃদয় মন উন্মুক্ত করে দিচ্ছে।”
পোপ বলেন, “সব ধরণের যোগাযোগের উৎস হলো ত্রিত্ব পরমেশ্বর, যার মধ্যদিয়ে আমরা উত্তম জীবন সহভাগিতা করি এবং অন্যের সাথে সেই জীবন সম্পদ সেবার মাধ্যমে এক হয়ে উঠি।” ক্যাথলিক গণমাধ্যমের বড় ভূমিকা হলো, যেখানে দেখা যাবে সংঘর্ষ ও বিরোধ, যেখানে গরিব জনগোষ্ঠী কষ্টের মধ্যে বসবাস করছে, সেখানেই সহযোগীতা তৈরি করার জন্য তাদের কণ্টস্বর হয়ে উঠতে হবে।” তাঁর মতে, ক্যাথলিক গণমাধ্যম হলো, “ঐক্যের চিহ্ন” তাই যেখানে এর অভাব রয়েছে, সেখানেই তাদের দাঁড়াতে হবে। কারণ, “আমরা একই আত্মা দ্বারা দীক্ষিত এবং এক দেহ।
ক্যাথলিক প্রেস এসোসিয়েশন ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইয়ো অঙ্গরাজ্যের কলম্বাস সিটিতে গঠিত হয়েছিলো। এই সংগঠনের রয়েছে ২২৫টি প্রকাশনা এবং ৬০০ ব্যক্তি সদস্য। এই করোনা ভাইরাস মহামারিকালে এই গণমাধ্যম সংগঠনের যারা আক্রান্ত হয়েছেন এবং যারা জীবন বিপন্ন ভেবেও কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছন। পোপ আশা প্রকাশ করে বলেছেন যে, আগামী দিনগুলোতেও তারা একইভাবে মানুষের সেবায় এগিয়ে যাবেন।

Please follow and like us: