গত ১২ নভেম্বর রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপ ভবনে ধর্মপ্রদেশীয় যাজকবর্গের অধিবেশনের শেষে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ফাদার দিলীপ এস. কস্তা রচিত “বাংলাদেশে খ্রিস্টমণ্ডলি পরিচিতি” বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন বিশপ জের্ভাস রোজারিও। অনুষ্ঠানে বিশপসহ ধর্মপ্রদেশে কর্মরত সকল পুরোহিত উপস্থিত ছিলেন।
ফাদার দিলীপ এস. কস্তা, “বাংলাদেশ খ্রিস্টমণ্ডলি পরিচিতি” বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন তার সর্বশেষ বই। “বাংলাদেশে খ্রিস্টমণ্ডলি পরিচিতি” শিরোনাম থেকে বুঝা যায় বইটি কোন্দিকে দৃষ্টি দিয়েছে। “বাংলাদেশে খ্রিস্টমণ্ডলি পরিচিতি” গ্রন্থটি রয়েছে মোট ৫টি অধ্যায়। বাংলাদেশ খ্রিস্টমণ্ডলিকে ঘিরে প্রতিটি অধ্যায় আবর্তিত হয়েছে। যেমন- ১. ভৌগোলিক আবিস্কার ও ভারতীয় উপমহাদেশে বাণীপ্রচার, ২. পুর্তগীজদের আগমন, অবদান এবং পূর্ববঙ্গে বাণীপ্রচার ও অগ্রগতি, ৩. বাংলাদেশ মণ্ডলির বিবশ^াসের পরিপক্কতার দিকে যাত্রা, ৪. বাংলাদেশ স্থানীয় মণ্ডলির অগ্রগতি, এবং ৫. বাংলাদেশ কাথলিক মণ্ডলির অবদান ও বিবিধ তথ্য। বইটি সুপাঠ্য এবং সেই সাথে বাংলাদেশ খ্রিস্টমণ্ডলি পরিচিতি সম্পর্কে রয়েছে অনেক অজানা তথ্য।
ফাদার দিলীপ এস. কস্তার কস্তা জন্ম- বর্তমান নাটোর জেলার মারীয়াবাদ কাথলিক ধর্মপল্লীর পারবোর্ণী গ্রামে ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে। পড়ালেখার হাতেখড়ি স্থানীয় সেন্ট মেরীস প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। যাজক হওয়ার দৃঢ় প্রত্যাশা নিয়ে ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে দিনাজপুর সাধু যোসেফ মাইনর সেমিনারিতে প্রবেশ করেন। দিনাজপুর পাঠ শেষ করে তিনি ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে ঢাকাস্থ বনানী পবিত্র আত্মা উচ্চ সেমিনারিতে প্রবেশ করেন। যাজকীয় জীবনের প্রস্তুুতি, সাধনা, দর্শন ও ঐশতত্ত্ব অধ্যায়ন শেষে ৩০ ডিসেম্বর ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে নিজ ধর্মপল্লীতে যাজক পদে অভিষিক্ত হন। ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে রোমের গ্রেগরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘খ্রিস্টমন্ডলীর ইতিহাসে’ লাইসেন্সিয়েট ডিগ্রী অর্জন করেন। ২০০৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি পবিত্র আত্মা উচ্চ সেমিনারীতে ‘খ্রিস্টমন্ডলীর ইতিহাস’ বিষয়টির উপর অধ্যাপনা করে আসছেন। যাজকীয় জীবন ও পালকীয় কাজের বিচিত্র অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ লেখকের মন ও সত্ত্বা।
গ্রামীণ পরিবেশে বেড়ে ওঠা লেখকের সত্ত্বা জুড়ে এখনও গ্রামীণ ছবি জীবন্ত ও প্রাণবন্ত। লেখকের চিন্তা-চেতনা, বিশ্বাস-বোধ ও ভালোবাসায় খ্রিস্টমন্ডলী, মানুষ-সমাজ, মানব উন্নয়ন, মান্ডলীক শিক্ষা ও সমকালীন বাস্তব দিকগুলোই প্রাধান্য পেয়ে থাকে। যাজকীয় জীবনের আধ্যাক্তিকতা ও পালকীয় কাজের পাশাপাশি তাঁর লেখালেখির কাজটি অনেকটা শখের, নেশার ও পরিতৃপ্তির। সত্ত্বার গভীর তাগিদ ও বোধ থেকে লেখকের লেখা উৎসারিত ও প্রবাহিত। লেখকের প্রকাশিত গ্রন্থগুলো হল : ১. জীবন ধ্যানে নিঃশব্দ পদাবলী ( কাব্যগ্রন্থ, ২০০৯) ২. খুঁজি তারে নীরবে নিভৃতে ( কাব্যগ্রন্থ, ২০১৫) ৩. বেঁচে আছি তাঁরই নিমগ্ন ধ্যানে (কাব্যগ্রন্থ, ২০১৬) ৪. আলোকিত জীবন সন্ধানে (প্রবন্ধ সংকলন, ২০০৮) ৫. যাজকত্ব : ঐশ নিমন্ত্রণে আত্মসমর্পণ ( প্রবন্ধ সংকলন, ২০১০) ৬. বনলোকে বোর্ণী মারীয়াবাদ ধর্মপল্লী ( ইতিহাসগ্রন্থ, ২০১৯ ) এবং ৭. প্রণাম মারীয়া : দয়াময়ী মাতা (গবেষণাগ্রন্থ, ২০২০)। আমরা লেখকের উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করি।
-ফাদার বাবলু কোড়াইয়া
ফাদার দিলীপ এস. কস্তার বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
Please follow and like us: