গত ১৪ এপিল থেকে চলছে দেশব্যাপী টানা লক্ডাউন। যদিও গত বছরের তুলনায় এবারের লক্ডাউনে অনেক কিছু শিথিল করা হয়েছে। তবুও অভাবী মানুষের অভাব তো আর কমছে না বরং বেড়েই চলেছে। কেননা, করোনা ভাইরাসের বা কভিড ১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে আমাদের দেশেও মৃত্যুর মিছিল অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল। এমনকি কোন কোন দিন মৃত্যুর সংখ্যা দিনে ১০০ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। বেড়ে গিয়েছিল স্বজন হারানোর কান্না ও হাহাকার। তাই তো প্রথমদিক থেকে লক্ডাউনে অভাবী মানুষেরা ঘরে বসে থাকতে চাইছিল না। এমতাবস্থায় দেশের সরকার থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অসহায় অভাবী দরিদ্র পরিবারে পাশে তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এর কোন ব্যতিক্রম ঘটেনি বাংলাদেশ ক্যাথলিক মণ্ডলির ক্ষেত্রেও। তাই বাংলাদেশ বিশপ’স কনেফারেন্সও প্রতিটি কারিতাসের মাধ্যমে প্রত্যেক ধর্মপ্রদেশের ক্যাথলিক খ্রিস্টভক্তদের মাঝে আর্থিক সহায়তা দেবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। রাজশাহী ধর্মপ্রদেশে এ কার্যক্রমটি বাস্তবায়িত করার জন্য কারিতাস রাজশাহী অঞ্চলকে নিদের্শনা দান করা হয়। সেই নিদের্শনানুযায়ী রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ৬টি ধর্মপল্লীতে যথাক্রমে নবাইবটতলা, সুরশুনিপাড়া, মুণ্ডুমালা, দেলুয়াবাড়ী, ভূতাহারা এবং রহনপুর ধর্মপল্লীর মোট ৩০৫টি পরিবারকে ২০০০.০০ টাকা করে সর্বমোট ৬,১০,০০০.০০ টাকা নগদ বিতরণ করার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
এই ত্রাণ কার্যক্রম সম্বন্ধে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ জেভার্স রোজারিও বরেন্দ্রদূত অনলাইনকে জানান, ক্যাথলিক মণ্ডলি সব সময়ই দরিদ্রদের পক্ষ সমর্থন করে থাকে। বর্তমান এ বাস্তবতায় দরিদ্র মানুষদের পক্ষ সমর্থন করা বা তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া আমাদের একটি নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করি। সেই সাথে এও মনে করি যে, এ কঠিন সময়ে সকলকেই নিজ নিজ সামর্থ্য অনুয়ায়ী আর্ত মানবতার সেবাকাজে এগিয়ে আসতে হবে। তাই সমাজের বিত্তবানদেরকে এ কাজে এগিয়ে আসার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি। কভিড মহামারি চলাকালীন সময়ে সকলকে তিনি স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার এবং নিরাপদে থাকার অহ্বান জানান। তিনি বলেন, “প্রার্থনা করি যেন করোনা ভাইরাস থেকে ইশ^র আমাদের প্রত্যেককে মুক্ত ও নিরাপদ রাখেন। বিশেষভাবে আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের জনগণের জন্য প্রার্থনা করি যেন ঈশ^র তাদেরকেও এই চরম মর্হুতে তাদের পাশে থাকেন এবং সকলকে আর্শীবাদ করেন।”
-ফাদার বাবলু কোড়াইয়া