ভূমিকা
বর্তমানে অনেক দেশের কাথলিক মণ্ডলির খ্রিস্টভক্তদেরমধ্যে অনেকের কাথলিক মণ্ডলি থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার প্রবনতা লক্ষ্য করা যায়। ইউরোপ, আমেরিকা ও অষ্ট্রেলিয়ার অনেক মানুষই এখন নিজেদেরকে কাথলিক মণ্ডলি ত্যাগ করা “প্রাক্তন সদস্য” বলে দাবী করেন। তাদের যুক্তি হল কাথলিক চার্চ বা মণ্ডলি অতীতে অনেক সামাজিক অন্যায্যতা ও মানবতা-বিরোধী পাপের সঙ্গে জড়িত ছিল; বা কোন কোন ক্ষেত্রে এখনও জড়িত আছে। মানব সভ্যতা উন্নয়নে, শিক্ষা-দীক্ষায়, বর্তমান জগতে ন্যায্যতা ও শান্তি স্থাপনে ও পৃথিবীতে ভালবাসার সংস্কৃতি স্থাপনে এককভাবে সব চাইতে বেশী কার্যকর অবদান রেখেছে ও এখনও রেখে যাচ্ছে। পৃথিবীর আর কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান কাথলিক চার্চের মত এত অবদান রেখেছে বলে দাবী করতে পারবে না। এই নিয়ে কাথলিক মণ্ডলির সর্বস্তরের খ্রিস্টভক্তরাই গর্বিত। তবে কাথলিক মণ্ডলির নিকট অতীতে যেসকল কলঙ্কজনক বিষয় সংঘটিত হয়েছে বা এখনও যে কিছু কিছু অন্যাযতা ও পাপের ঘটনা বেড়িয়ে আসছে, তার জন্য কাথলিক মণ্ডলির অতীত গৌরব অনেকটাই ম্রান হতে চলেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মত আমাদের দেশের অনেক খ্রিস্টভক্ত এখন আর গীর্জা প্রার্থনা করে না বা নামে মাত্র ধর্মকর্ম করে। এখন অনেকেই প্রশ্ন করেন, এত পাপ ও কলঙ্কজনক ঘটনা জানার পরে কিভাবে কাথলিক মণ্ডলির সদস্য থাকা যায়?
কাথলিক মণ্ডলির পাপ ও কলঙ্ক
এই প্রশ্ন অবশ্যই যৌক্তিক ও গুরুত্বপূর্ণ। অতীতের ইতিহাসে বা বর্তমানেও কাথলিক মণ্ডলির অনেক পাপ আছে যার কারণে এই প্রশ্ন করা যেতেই পারে। কাথলিক চার্চের এই পাপের তালিকায় আছে: অন্যায্যতার কারণে বিভিন্ন স্থানে তদন্ত ও বিচারে দোষী সাব্যস্ত হওয়া, দাস প্রথার প্রতি সমর্থন দেওয়া, ঔপনিবেশিক শাসনের সময় মণ্ডলির ভূমিকা, বর্ণপ্রথার সঙ্গে এর সম্পর্ক, নারী অধিকার দমনে মণ্ডলির ভূমিকা, অতীতে ও বর্তমানে অব্যহত অন্যায্যতা দেখেও কিছু না বলা বা না করা, সাদা চামড়ার প্রাধান্য (White Supremacy), পূজিবাদী নীতিকে (Capitalism) সমর্থন করা, সৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীকে সমর্থন করা, ইত্যাদি। তাছাড়া নিকট অতীতে যাজকদের যৌন কেলেঙ্কারী (Clergy Sex Scandal) ও বিশেষভাবে শিশুদের যৌন নির্যাতন (Pedophilia) কাথলিক মণ্ডলির ভাবমূর্তি কলঙ্কিত করেছে। অতি সম্প্রতি কানাডায় কয়েকটি বন্ধ হয়ে যাওয়া কাথলিক স্কুলে আদিবাসী শিশুদের গণকবর আবিষ্কার কাথলিক মণ্ডলিকে জবাবদিহীতার মুখোমুখি দাড় করিয়েছে। কাথলিক মণ্ডলিকে এইসব কারণে সমালোচনা করতে গিয়ে অনেকে তার দোষগুলিকে অতিরঞ্জিত করে এবং কঠোর ও ভারসাম্যহীন ভাষা প্রয়োগ করে সত্য; কিন্তু তা হলেও কাথলিক মণ্ডলি উপরোক্ত অভিযোগগুলি অস্বীকার করতে পারবে না বা এগুলির দায় এড়াতে পারবে না।
মণ্ডলি একাই শুধু পাপী ও দোষী নয়
তবে এমন সব দোষের জন্য মণ্ডলি একাই যে দায়ী, তা কিন্তু নয়। এমন অভিযোগ পৃথিবীর অনেক দেশের বিরুদ্ধেই আনা যাবে। আমাদের দেশও তার ব্যতিক্রম নয়। ইউরোপ, আমেরিকা ও অষ্ট্রেলিয়ার মানুষ কিভাবে এমনসব দেশে বসবাস করতে পারে, যেগুলির ইতিহাস বর্ণ বৈষম্য (Racism), দাসপ্রথা (Slavery), ঔপনিবেশিকতা (Colonialism), আদিবাসীদের গণহত্যা (Genocide), ধনী-দরিদ্রদের মধ্যে অসাম্য (Inequality), অভিবাসন প্রত্যাশীদের (Immigrants) প্রতি দেশের সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া, বৈষম্য ও ঘৃণার সংস্কৃতি, ইত্যাদির দোষে দুষ্ট? এশিয়া আফ্রিকার দেশগুলি কি এইসব দোষ থেকে মুক্ত? তা বলা যাবে না। আমাদের দেশসহ এশিয়ার দেশগুলিতেও বর্ণপ্রথা বা জাতিভেদ, নব্য দাসপ্রথা, গণহত্যা, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের জন্য রক্তপাত, ধনী-দরিদ্রের মধ্যে প্রকট বৈষম্য, ইত্যাদির মত ইতিহাস রয়েছে। তাহলে শুধু কাথলিক মণ্ডলির বিরুদ্ধে অভিযোগের তর্জনী তোলা কতটা যুক্তি-যুক্ত? কারণ আমরা যে সকল দেশে বসবাস করছি, সে সকল দেশ আর সকল জাতিই নির্বিশেষে এইসব বা সমরূপ পাপের দ্বারা দুষ্ট। কাথলিক মণ্ডলি নিজের অপরাধ স্বীকার করলেও, সেইসব অপরাধ মণ্ডলির মাত্র অল্প কিছু সদস্যই করেছে, সকলে নয়। অপর দিকে মণ্ডলির আরও অনেক বেশী সদস্য মানবতার সেবায় জীবনপাত করেছে; তাঁদের আধ্যাত্মিক জীবন, তাঁদের ত্যাগস্বীকার, মানবসেবায় তাঁদের অবদান, পৃথিবীকে আরও বেশী বাসযোগ্য ও সুন্দর করার তাদের নিরন্তর প্রচেষ্টা, ইত্যাদি কাথলিক মণ্ডলির ভাবমূর্তি জাজ্বল্যমান করে তুলেছে। মণ্ডলির মধ্যেই অনেক মানুষ সাধু ও সাধ্বী হয়েছে। তাই মণ্ডলির যে সকল সদস্য তাদের পাপের দ্বারা কাথলিক মণ্ডলিকে কলুষিত করেছে, তাদের দায় কাথলিক মণ্ডলি নিবে কেন? তাদের ব্যক্তিগত পাপের দায় তাদেরই, কাথলিক মণ্ডলির নয়। তাহলে আমি যে কাথলিক মণ্ডলিতে থেকে যাব তার কারণ ও যুক্তি আছে।
আমি কেন কাথলিক?
প্রথমত: কাথলিক মণ্ডলি হচ্ছে আমার মা, যে আমাকে নতুন জীবন ও ভালবাসার ভাষা শিক্ষা দিয়েছে। সে আমাকে শিক্ষা দিয়েছে বিশ্বাস, ঈশ্বর সম্পর্কে আমাকে জ্ঞান দিয়েছে, ঈশ্বরের বাণী শুনিয়েছে, প্রার্থনা করতে শিখিয়েছে, আমাকে সাক্রামেন্ত বা পুণ্য সংস্কারসমূহ দান করেছে, সদগুণ অর্জনের পথ দেখিয়েছে এবং আমাকে কিছু জীবন্ত সাধু ও সাধ্বীর সংস্পর্শে জীবন কাটাতে আমাকে সাহায্য করেছে। তার মাধ্যইে আমি জানতে পেরেছি যে মণ্ডলি পাপী থাকলেও সাধুদের সংখ্যাই বেশী। এর অসংখ্য দুর্বল দিক থাকা সত্ত্বেও এখানে থাকার জন্য আমার যথেষ্ঠ ও উপযুক্ত কারণ আছে, যা যথেষ্ঠ কল্যাণকর ও পবিত্র। তাই তো নৈতিকভাবে আমি কাথলিক মণ্ডলিরই উপর আস্থা রাখি, যে-আস্থা আমি অন্য কোন ধর্মে বা সমাজে রাখতে পারি না – আমার আত্মা এখানকারই বাসিন্দা। অন্য ধর্মের বা সংস্কৃতির মানুষদের সঙ্গে উপাসনা করতে, সংলাপ করতে ও সহাবস্থান করতে আমার কোন কোন সমস্যা নেই। তা সাচ্ছন্দেই করতে পারি, যে কাথলিক মণ্ডলিতে আমি বেড়ে উঠেছি সেখানেই আমি বাড়ীতে থাকার বা মাতৃভাষায় কথা বলার মত তৃপ্তি ও আনন্দ পাই।
দ্বিতীয়ত: কাথলিক মণ্ডলিতে অনেক পাপী আছে,তা অস্বীকার করার উপায় নেই, কিন্তু তা সত্ত্বেও আমি এই মণ্ডলির নির্ভীক ধর্মশহীদ, পবিত্র সাধু-সাধ্বী, অসংখ্য উদারপ্রাণ ও মহান ব্যক্তি রয়েছেন যারা আমার জন্য আদর্শ। আমি এইসব মহাপ্রাণ, উদার, পবিত্র আদর্শবান ব্যক্তিদের অনুকরণ ও অনুসরণ করব, পাপীদের নয়। যারা পাপ করে মণ্ডলির সর্বাঙ্গে কলঙ্ক লেপন করেছে, তারা ঈশ্বর ও মণ্ডলির আইন অমান্য করেছে – তাদের আহ্বানের জীবনে উপযুক্তভাবে সাড়া দিতে ব্যর্থ হয়েছে। নৈতিকভাবে আমি তো ব্যর্থদের অনুসরণ করতে পারি না। আমারও অনেক ব্যর্থতা রয়েছে; কিন্তু তা সত্ত্বেও আমি যারা তাদের জীবনে সফল হয়েছে, আমি তাদেরই অনুসরণ করব।
সবশেষে একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করতে চাই। আমি মণ্ডলিতে থাকব, কারণ মণ্ডলিই আমার জীবনে সবকিছু। মণ্ডলি ত্যাগ করে আমি কোথায় যাব? এর চেয়ে ভাল স্থান কোথায় পাব? সত্য বলতে কি আমার মনে হয়, মণ্ডলির চেয়ে ভাল স্থান আমার জন্য আর নেই। মণ্ডলির পাপ ও কলঙ্কের কথা মনে হলে মণ্ডলি ছেড়ে যাওয়ার ইচ্ছা আর ধর্মশহীদ ও সাধুসাধ্বীদের সংসর্গে থাকার বাসনা – এই দুইয়ের পরস্পর-বিরোধী অবস্থায় আমরা বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত নিব, এটাই স্বাভাবিক। যীশুর চ্যালেঞ্জপূর্ণ মনপরিবর্তনের উপদেশ শুনে সকলেই যখন চলে যাচ্ছিল, তখন যীশু তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞেস করলেন, “… কি তোমরাও কি চলে যেতে চাও?” পিতর সব শিষ্যদের হয়ে উত্তর দিলেন, “… আমরা যেতাম, কিন্তু আমরা কোথায় কার কাছে যাব, প্রভু! আমাদের তো এর চেয়ে ভাল জায়গা আর নেই! আপনি যা-ই বলুন, অনন্ত জীবনের বাণী – সে তো আপনার কাছেই আছে” (যোহন ৬:৬০-৭১)।
সাধু পিতর আসলে কি বলতে চেয়েছেন তা হলো, “প্রভু যীশু, আমরা তোমাকে বুঝতে পারি না, আর যা বুঝতে পারি তা আমাদের ভাল লাগে না। তা সত্তে¡ও অন্য কোথাও চলে যাওয়ার চেয়ে, আপনার সঙ্গেই আমরা ভাল আছি; আপনিই আমাদের সব”। একইভাবে কাথলিক মণ্ডলিই আমাদের সব। আমরা আর কোথায় যাব, কোথায় পাব এর চেয়েও ভাল একটি আশ্রয়? মানুষ হিসাবে আমরা ‘আধ্যাত্মিক’ কিন্তু তাই বলে আমরা সকলেই তো আর সন্ন্যাসী নই। তবে যদি কেউ বলে, ‘এমন এক অপবিত্র ধর্মীয় গোষ্ঠীর সঙ্গে আমি থাকব না’, তা হবে স্বার্থপরের মত পালিয়ে যাওয়ার শামিল। এমন লোকের জন্য তা কোন ক্রমেই ভাল হবে না। একা আমরা কিছুই করতে পারি না; কিন্তু যদি আমরা সমষ্টিগতভাবে সত্যের অনুসন্ধান করি ও সেবা করি তাহলে আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছা ও পকিল্পনা অনুসারে কাথলিক মণ্ডলি আপন মহিমায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারব। মণ্ডলিকে নিয়ে আমরা একা কোন স্বপ্ন দেখে তা পূরণ করতে পারব না; আমরা সকলে মিলে যদি মণ্ডলির জন্য একটি স্বপ্ন দেখি তা পূরণের দায়িত্বও আমাদের সকলের। আমরা সকলে মিলে সেই আদর্শ ও পবিত্র মণ্ডলি, যা আমরা চাই, গড়ে তোলার স্বপ্ন পূরণ করতে পারব। আমি এর বাইরে মণ্ডলিকে দেখতে পারি না।
অন্য কোন নিষ্কলঙ্ক ও পবিত্র মণ্ডলি নেই
কাথলিক মণ্ডলি ত্যাগ করে আমরা কোন মণ্ডলিতে যাব? কোথায় পাব সেই পবিত্র, নিষ্কলঙ্ক ও আদর্শ মণ্ডলি যেখানে আমরা যেতে পারি? এমন মণ্ডলি তো কোথাও পাব না; কারণ এমন কোন দেশ, ধর্ম ও মণ্ডলি নেই যার অতীত বা বর্তমান কোন না কোন পাপের দ্বারা বিদ্ধ নয় বা কলঙ্কিত নয়! আমরা সকলেই যেহেতু এই মণ্ডলির সদস্য, কাথলিক মণ্ডলির সকল দোষ ও কলঙ্কের দায়ও আমাদের নিতে হবে, এটাই আসল ও ন্যায্য পথ। কাথলিক মণ্ডলির ইতিহাস, আমাদেরই ইতিহাস; মণ্ডলির পাপ আমাদেরই পাপ; মণ্ডলির পরিবার আমাদেরই পরিবার। এটাই আমাদের স্থায়ী পরিবার। অনেকেই বর্তমানে বলে, ‘আমি পূর্বে কাথলিক ছিলাম’; এমন লোকের সংখ্যা পশ্চিমের দেশগুলিতে বেড়েই চলেছে। কাথলিক মণ্ডলি ত্যাগ করার তাদের অনেক কারণ আছে; তবে তা ঈশ্বরের উপর বিশ্বাসের সংকট থেকে নয়, বরং মণ্ডলি-কেন্দ্রিক। পরবর্তীতে তা ঈশ্বরের উপর তাদের বিশ্বাসের সংকট হয়ে দাড়ায়।
উপসংহার
সম্প্রতি বিভিন্ন দেশে কাথলিক যাজকদের দ্বারা শিশুদের যৌন নির্যাতন, কাথলিক মণ্ডলির উচ্চ পর্যায়ের কার্ডিনাল, বিশপ ও যাজকগণের মণ্ডলির অর্থ তসরুফ এবং কানাডায় প্রাক্তন কাথলিক স্কুলে গণকবরের সন্ধান লাভের মত কেলেঙ্কারীগুলি প্রকাশ হওয়ার ফলে কাথলিক মণ্ডলির বিশ্বাস যোগ্যতা (Credibility) ও ভাবমূর্তি (Image) প্রশ্নের মধ্যে পড়ে। এইসব কেলেঙ্কারী ও পাপের জন্য অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা হয়েছে ও হচ্ছে; তাদের শাস্তিও হচ্ছে। কাথলিক মণ্ডলির এতসব পাপ ও কেলেঙ্কারী দেখেও বিশ্বাসী ভক্ত হিসাবে আমাদের মন খারাপ হওয়াই স্বাভাবিক। তবে এইসব পাপ ও কেলেঙ্কারী ধর্মে বা কোন দেশে নেই? মণ্ডলির বিশ্বাসীদের আহ্বান হলো পবিত্রতার পথে চলা; কিন্তু মণ্ডলির কোন ভক্ত বা সদস্য যদি তা পালন করতে ব্যর্থ হয় বা তা পালন না করে, কাথলিক মণ্ডলিতো তার জন্য দায়ী নয়!
তবে যা-ই হোক, আমরা ঐশবাণীর সুশৃঙ্খল ব্যাখ্যা (Exegesis), প্রেরিতশিষ্যদের আমল থেকে আজ পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্ন ঐতিহ্য (Tradition ) এবং মণ্ডলির কর্তৃপক্ষের ধারাবাহিক শিক্ষা মালা (Magisterium), কাথলিক পোপগণের নৈতিক কর্তৃত্ব (Moral Authority), ইত্যাদি কাথলিক মণ্ডলির বাইরে আর কোথায় পাব? পৃথিবীতে অনেক দেশ আছে, ধর্ম আছে, সংস্কৃতি আছে এবং সংস্থা আছে কিন্তু কাথলিক মণ্ডলির মত জগতের অগ্রগতিতে, মানব সভ্যতা উন্নয়নে, ভালবাসার সংস্কৃতি ও শান্তি আনয়নে, আর এমনকি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে কাথলিক মণ্ডলির মত এত বিশাল অবদান আর কার আছে? পৃথিবীকে মানব জাতির আরও অধিক বাসযোগ্য করার জন্য কাথলিক মণ্ডলির নিরন্তর প্রচেষ্টা কারও অবিদিত নয়। ধর্ম ও সংস্কৃতির বিভেদ ও রাজনৈতিক কুটকৌশলের বেড়ি ডিঙ্গিয়ে মানব জীবনের মর্যাদা রক্ষার জন্য, বিপন্ন মানবতাকে পথের দিশা দিতে, ধনী গরীবের বৈষম্য দূর করে ন্যায্যতা স্থাপনে, দরিদ্রদের ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠির পক্ষ সর্মথন করে, শিক্ষা বিস্তার করে জগতের বিবেককে জাগ্রত করতে, স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আর্তমানবতার সেবা দিয়ে, ইত্যাদি আরও অনেকভাবে কাথলিক মণ্ডলি যে ভালবাসা, ন্যায্যতা ও শান্তির এক পৃথিবী গড়তে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আমরা তার জন্য গর্বিত হব না কেন? তাই কাথলিক মণ্ডলির কিছু বিভ্রান্ত সদস্যের পাপ ও কেলেঙ্কারী থাকা সত্তে¡ও আমি কাথলিক মণ্ডলিতেই থাকব। কারণ আমি কাথলিক মণ্ডলির অগণিত সাধু সাধ্বীগণ, ধর্মশহীদগণ, মহামানবগণ এবং সৎ ও সরলপ্রাণ অসংখ্য খ্রিস্টভক্তগণের সঙ্গেই থাকতে চাই।

বিশপ জের্ভাস রোজারিও

 

Please follow and like us: