উত্তম মেষপালক ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লীতে গত ২৫ জুলাই (রববিার) ২০২১ খ্রিস্টাব্দে দাদা-দাদী ও প্রবীণদের নিয়ে বিশেষ সমাবেশ ও খ্রিস্টযাগ অনুষ্ঠিত হয়। এই দিবসটি পূণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস প্রথমবারের মত পালন করার জন্য বিশ্ববাসীকে আহ্বান করেন। এই দিবসটির মূলসুর হল‘ আমি সবর্দাই তোমাদের সঙ্গে আছি’ (মথি ২৮:২০)।
এই ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লীর বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রায় ৭২ জন দাদা-দাদী ও প্রবীণগণ অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া প্রায় ৩০০ জন খ্রিস্টভক্ত খ্রিস্টযাগে অংশগ্রহণ করেন। খ্রিস্টযাগের শুরুতেই প্রবীণদের নিয়ে শোভাযাত্রা করে গির্জায় প্রবেশ করা হয়। শ্রদ্ধেয় পাল-পুরোহিত ফাদার ইম্মানুয়েল কে. রোজারিও পবিত্র খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন এবং সহকারী পাল-পুরোহিত শ্রদ্ধেয় ফাদার উত্তম রোজারিও ও ফাদার সুরেশ পিউরীফিকেশন সহার্পি ত খ্রিস্টযাগে অংশগ্রহণ করেন।

পাল-পুরোহিত উপদেশ সহভাগিতায় বলেন, ‘পূণ্য পিতা পোপ ফ্রান্সিস প্রথমবারের মত বিশ্ব দাদা-দাদী ও প্রবীণ দিবস উদযাপন করার জন্য আহ্বান করেন। প্রবীণ ও দাদা-দাদীরা হলেন আমাদের গুরুজন, তাই আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব হল এই ‘ তাদের প্রতি ভালবাসা ও যত্নশীল হওয়ার মনোভাব গড়ে তোলা।’ ধর্মপল্লীতে আমাদের পরিবারেরই একজন, হয়তো কারো বাবা-মা, দাদা-দাদী, নানা-নানী ও আত্মীয় স্বজন। তাই তাদেরকে কোন ভাবেই অবহেলা করা ঠিক নয় । আমরা যেন কখনো তাদের প্রতি খারাপ আচরণ না করি  বরং তাদের প্রতি  স্নেহ-ভালবাসা -যত্ন ও যথাযথ সম্মান করি’। মূলসুরের উপরে সহভাগিতায় ফাদার উত্তম বলেন, ‘আমরা প্রতিবন্ধী ভাইবোনদেরকে কখনো ছোট মনে করবো না বরং তাদের যত্নে ও সেবায় সবাইকে এগিয়ে যাবো। তাদের ভালবাসা ও যত্ন করলে তারা পরিবার, সমাজ, মণ্ডলি ও দেশে নিজেদের মর্যাদা লাভ করতে পারবে। আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হল তাদের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করা’।

প্রবীণদের পক্ষে মি: গাব্রিয়েল হাঁসদা বলেন, ‘আমরা আজ আনন্দিত ও কৃতজ্ঞ কারণ পূণ্য পিতা আমাদের জন্য একটি দিবস উদযাপনের জন্য ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা প্রবীণ, বয়সের ভাড়ে ক্লান্ত , কাজ করতে পারি না! কিন্তু এই শেষ বয়সে আমাদের ছেলেমেয়ে ও নাতি-নাতনীদের কাছে শুধু এইটুকুই চাওয়া- আমরা যেন অন্তত একটু যত্ন ও ভালবাসা পাই। আমাদের ছোট ছোট প্রয়োজনগুলো যেন তারা বুঝতে পারে। আমরাও পরিবারে সকলের সাথে আনন্দে থাকতে চাই।’

একজন বয়স্ক দাদী অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘ আমরা প্রত্যেকজনই সৃষ্টিকর্তার ভালবাসার সন্তান। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি যেন এই প্রবীণ বয়সে আমাদের সন্তান ও নাতি-পুতিদের দ্বারা ভালবাসা, যত্ন ও সাহায্য পাই। আমদের আর কিছুই চাওয়ার নেই।’

এছাড়াও রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপস ভবনসহ অধিকাংশ ধর্মপল্লীতে ও প্রতিষ্ঠানে দাদা-দাদী দিবসটি পালন করা হয়।

-বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার

Please follow and like us: