ফাদার বাবলু কর্ণেলিউস কোড়াইয়া

ফাদার কর্ণেলিউস মুরমু এবং আমি, আমরা এক অপরকে ‘মিতা’ বলেই ডাকতাম। ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে পোষ্ট মেট্রিক কোর্স থেকেই আমাদের মিতা বলার যাত্রা শুরু। কিন্তু গত ৪ আগষ্ট মিতার মিতালী সাঙ্গ করে চলে গেল মাটির ঘরে। তার জীবনের শেষ ঠিকানায়। বিগত বছরগুলো তাকে আমি অনেক কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি। যার কারণে হৃদয়ের সখ্যতা ও মিতালী অনেক বেশী ছিল। তা অনেক সময় অন্যদের কাছে ধরা না পড়লেও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কেউ আমাদের এই বন্ধুত্বকে ছিন্ন করতে পারেনি। তাই তার এ অকাল প্রয়াণে আমি সত্যিই খুব মর্মাহত ছিলাম। তার অসুস্থ্যতার সময় অনেকবার যিশুকে বলেছি, প্রভু, তুমি আমার মিতাকে অন্তত:পক্ষে হাফ সেঞ্চুরীই করতে দাও। তার এই অসুস্থ্যতার সময়ে অনেকবার ফোনে ও ব্যক্তিভাবে আলাপ করার সুযোগ হয়েছিল। প্রতিটি আলাপেই সে আমাকে বলত মিতা আমি দেরীতে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে যে ভুলটি করেছি তা তুমি কখনও করবে না। একবার সেও আমাকে বলল, দেখতো মিতা, তুমি কত বছর যাবত অসুস্থ্যতায় ভোগছ কিন্তু আমার মত এত কাহিল তো হওনি। অথচ আমি একবার অসুস্থ্য হয়েই আর উঠতে পারছি না। তার কথা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলে সান্ত্বনা দেবার মিথ্যা চেষ্টা করতাম এবং বলেছি, মিতা তুমি ভাল হয়ে উঠবে একদম ভয় পেয়ো না, মনে সাহস রাখো। কিন্তু এ সত্য আমি জানতাম যে, ক্যান্সার নামক মরণব্যাধি তাকে কুড়ে কুড়ে শেষ করে দিচ্ছে। তবে এ সত্যটা, তাকে কোনদিনই বলতে বা বুঝতে দিতাম না। জানতাম হয়তো বা কিছুদিনের মধ্যেই নিভে যাবে মাটির এ জীবন প্রদীপ, ধুলায় মিশে যাবে তার এ দেহ। তবু বেঁচে থাকার বা বাঁচিয়ে রাখার এক অদম্য প্রচেষ্টা সবার মাঝেই। সত্যটাকে সত্য বলে গ্রহণ না করে কেবল প্রার্থনা করে প্রভুকে বলতাম, প্রভু তুমি আমার মিতাকে বাঁচতে দাও। শেষবার ঢাকায় যাবার আগে যখন রাজশাহী এসেছিল। এর ঠিক একদিন পরে ফোন করে আমাকে বলেছিল, মিতা তুমি আসো, একটু আলাপ করব, আমার ভাল লাগছে না। আমি ফোনটা কেটে দিয়েই তার সঙ্গে দেখা করতে বিশপ হাউসে গেলাম। দেখামাত্র আমাকে বলেছিল, আমার অবস্থা বেশী ভাল না। সারা শরীরে প্রচন্ড ব্যথার কারণে, আমি গত রাতে একটুও ঘুমাতে পারিনি। তাছাড়া গলায় ব্যাথা, আমার খুব ক্ষুধা পেয়েছে কিন্তু কিছুই খেতে পারছি না। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম ডাক্তারের সাথে এব্যাপারে কোন আলাপ করেছ। সে আমাকে একটা ঔষধের নাম দিয়ে বলল। ডাক্তার আমাকে বলল এই ঔষধটা খেতে কিন্তু তাও নাকি খুঁজে পাচ্ছে না। তাই আমি তার কাছ থেকে ঔষধের নামটি চেয়ে নিয়ে আমার এক মুসলিম বন্ধুকে ফোন দিয়ে বললাম তুমি যেভাবেই পার এই ঔষধের ব্যবস্থা করে দাও। কারণ আমার মিতা খুবই অসুস্থ্য, সে কিছুই খেতে পারছেন না। অনেক খোজাখুজির পর সে ঔষধটা পেয়ে আমাকে ফোন করে বলল ফাদার ঔষধটা পেয়েছি তবে এর দাম বাজার মূল্য থেকে অনেক বেশী। আমি জিজ্ঞেস করলাম কত দাম। সে আমাকে বলল ১ পাতা অর্থাৎ ১০ পিস ঔষধের ন্যায্য মূল্য ৩৫০ টাকা কিন্তু দোকানদার বলছে সে কোন মেমো দিতে পারবে না কিন্তু ১০০০ টাকা না দিলে ঔষধ দিবে না। যদিও নায্যতার দাবিতে আমার বিবেক সায় দিতে চায়নি; তবুও প্রেমের দাবির কাছ হার মেনে বললাম। যত টাকাই লাগুক না কেন তুমি ২ পাতা ঔষধ নিয়ে এখনি আস। সে তাই করল। দু’এক দিন পর আবার যখন আমার মিতাকে জিজ্ঞেস করলাম এখন তোমার কেমন লাগছে? এখন কিছু খেতে পারছ? সে আমাকে হাসিমুখে উত্তর দিয়ে বলেছিল হ্যাঁ মিতা আমি এখন খেতে পারছি। তাই মনে একটা শান্তি অনুভব করলাম। এর কিছুদিন পর সে ঢাকায় গেল ডাক্তারী পরীক্ষা করতে। আর এরপরেই হঠাৎ করেই শুনলাম ফাদার কর্ণেলিউসের করুণা পজেটিভ এসেছে। এর কিছুদিন পরে আবার শুনলাম আমার মিতার করুণা নেগেটিভ এসেছে। আর এভাবে একদিন খবর পেলাম মিতা আর নেই, জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দিয়ে পাড়ি দিয়েছেন না ফেরার দেশে।

দিনটা ছিল ৪ আগষ্ট, ধর্মপ্রদেশীয় সকল যাজক এবং সকল পাল-পুরোহিতদের প্রতিপালকের পর্বদিন। তাই, এই দিনে সাধু জন মেরী ভিয়ান্নীর উপর ভিত্তি করে বরেন্দ্রদূতে লেখা আপ-লোড করার জন্য বেশ ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ ফাদার নবীন ফোন করে আমাকে বলল, দাদা, ফাদার কর্ণেলিউস আর নেই। আমি আঁতকে উঠলাম এবং সংবাদটা কেন জানি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। তাকে আবার জিজ্ঞেস করলাম এটা কি আসলেই সঠিক খবর। সে বলল, হ্যাঁ দাদা। সে আমাকে এও বলেছিল যে, দাদা, তুমি বরেন্দ্রদূত নিউজ পোর্টালে খবরটা আপলোড করে দাও। কেন জানি, আমি এই শোক সংবাদটা লিখতে গিয়ে লিখতে পারছিলাম না। বারে বারে মনে হচ্ছিল মিতা মরেনি। না ও এখন মরতে পারে না। প্রভু তুমি কী সত্যিই এটা করতে পারলে? হাজারো চিন্তা মাথার মধ্যে বারবার ঘুর পাক খাচ্ছিল। আর এরই মধ্যে ফাদার নবীন আবার আমাকে ফোন করে বলল, দাদা তুমি কি খবরটা বরেন্দ্রদূত অনলাইনে দিয়েছ। আমি উত্তর দিলাম না। না। না আামি দিতে পারিনি। সে আমাকে বলল ভাল করেছ। ফাদার মারা যায়নি। মনে মনে ঈশ^রকে অনেক ধন্যবাদ দিলাম। এ কারণে সেদিনের দুপুরের খাবারের সময় যে কখন পার হয়ে গেল, টেরই পেলাম না। হঠাৎ করেই ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম প্রায় ২:০০ টা বাজতে চলেছে। তাই ধীর পদক্ষেপে এগিয়ে গেলাম খাবার ঘরের দিকে কিন্তু পাগুলো যেন সামনের দিকে যেতে চাইছে না। তবুও এগিয়ে চললাম। খাবার ঘরে পৌছলাম ঠিকই, তবে মনে কেন জানি কোন শান্তি পাচ্ছিলাম না। খাওয়ার এক পর্যায়ে হঠাৎ পরিমল ফোন করে আমাকে বলল, ফাদার আপনার মিতা আর নেই। আমি বললাম ঠিক খবর তো? কে তোমাকে খবর দিয়েছে? সে উত্তরে বলল ফাদার আন্তনী হাঁসদা। তাই সঙ্গে সঙ্গে অবিশ্বাসী অনুসন্ধানী মন নিয়ে ফাদার আন্তনীকে ফোন করে খবরটি জানতে চাইলাম। তখন বেলা ০২:২৩ মিনিট। ফাদার আন্তনী আমাকে বলল ঠিক ৩ মিনিট আগে সে পরম পিতার কাছে পাড়ি দিয়েছেন। তাই ভাবতে শুরু করলাম বাংলাদেশ ধর্মপ্রদেশীয় যাজক ভ্রাতৃসংঘ তথা রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের পুষ্পবৃক্ষ থেকে ঝড়ে গেল সুভাষিত একটি পুষ্প। ফাদার কর্ণেলিউস মুরমু ছিলেন একজন সদালাপি, নীরব কর্মী ও নিবেদিত প্রাণ। গত কয়েক মাস যাবৎ তিনি ফুসফুসের ক্যান্সার রোগে ভুগছিলেন এবং চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ১৪ জুলাই থেকে Ahsania Mission Cancer Hospital- এ ভর্তি ছিলেন এবং গত দুই দিন থেকে ICU-তে Life Support থেকে ৪ আগষ্ট বেলা ০২:২০ মিনিটে এ ভব সংসার থেকে চিরতরে পাড়ি দিলেন পরম দেশে পরম পিতার গৃহে। তিনি ২৬-১০-১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান সাধু জন মেরী ভিয়ান্নী মুণ্ডুমালা, কিন্তু তৎকালীন রহনপুর সাধু যোসেফের ধর্মপল্লীর অধিনস্থ দিবস্থলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ৩০-১২-২০০৫ খ্রিস্টাব্দে উত্তম মেষপালক ক্যাথিড্রাল গির্জায় প্রয়াত আর্চ বিশপ পৌলিনুস কস্তা কর্তৃক যাজক পদে অভিষিক্ত হন। তারা ৫ ভাই ও ১ বোন। তার বাবাও একজন কাটেখ্রিস্ট মাষ্টার ছিলেন। এমনকি তাঁর বড় ভাই লরেন্স মুরমু দীর্ঘ দিন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশীয় কাটেখিস্ট মাষ্টার হিসেবে কাজ করে ইহ জগৎ ত্যাগ করেছেন। তাছাড়াও তাঁর বড় ভাই ফা: উইলিয়াম মুরমু যিনি রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের একজন ধর্মপ্রদেশীয় যাজক এবং ধর্মপ্রদেশের চ্যাঞ্চেলর হিসেবে কাজ করছেন। সেই সাথে মুশরইল ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত হিসেবে নিয়োজিত আছেন।

শৈশব-বাল্যকাল ও ঐশ আহ্বান

ঈশ্বর তাঁর মহিমা ও প্রশংসার প্রকাশের জন্য যুগে যুগে বিভিন্ন মানুষকে বেঁছে নিয়েছেন। তাদেরই মত একজন হলেন ফা: কর্ণেলিউস মুরমু। তিনি ছিলেন অতি সাধারণ ও সহজ-সরল একজন মানুষ। পরিবারের ভাই-বোনদের মধ্যে তিনি ছিলেন সকলের ছোট। তিনি ছোট্ট বেলা থেকেই বাঁশের বাঁশি বাঁজাতে ভালবাসতেন এবং ফুটবল খেলার প্রতি তার অনুরাগ ছিল প্রবল। সেই সাথে তিনি নিজস্ব কৃষ্টি-সংস্কৃতির বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাঁজাতেও পারদর্শী ছিলেন। যাজক হবার অভিপ্রায়ে ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে দিনাজপুর জ্ঞানসাধনে পোষ্ট মেট্রিক কোর্সে অংশগ্রহণ করার মধ্য দিয়ে তিনি সেমিনারী জীবনে প্রবেশ করেন। যিশু নাম গঠন গৃহে থেকে দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে আই.এ পাশ করেন এবং নটরডেম কলেজ থেকে বি.এ পাশ করেন। অত:পর বনানী পবিত্র আত্মা উচ্চ সেমিনারীতে প্রবেশ করার আগে আহ্বান নির্ণয় কোর্সের জন্য ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে দিনাজপুর ধর্মপ্রদেশের বুলাকিপুরের সেমিনারীতে অবস্থান করেন। এরপর ১৯৯৮-২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বনানী পবিত্র আত্মা উচ্চ সেমিনারীতে যাজক পদ লাভের জন্য পড়াশুনা করেন। ১২ই ফেব্রুয়ারি ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ডিকন পদে অভিষিক্ত হন এবং একই বৎসরের ৩০শে ডিসেম্বর যাজক পদে অভিষিক্ত হন। তার সেমিনারীতে প্রবেশ করার গল্পটি অনেকবার তার কাছ থেকেই শুনা। এসএসসি’র আগ পর্যন্ত সে ছিল বনপাড়া সেন্ট যোফেসের ছাত্র। সে যখন দেখল তার বড় ভাই ফাদার উইলিয়াম সেমিনারীতে আছে। সেও সেমিনারীতে যাবার জন্য তার তৎকালীন পাল-পুরোহিত ফাদার মার্কুশ মারান্ডীর সাথে যোগাযোগ করে তার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ফাদার মার্কুশ তাকে বলে যে, ঠিক আছে তুমি যদি সেমিনারীতে প্রবেশ করতে চাও তাহলে পাল-পুরোহিত বরাবর একটা আবেদন কর। তাই প্রথমবার সে যখন আবেদন পত্র জমা দিতে ফাদার মার্কুশের নিকট গেল এবং জমা দিল তা হাতে নিয়ে বলল না এটা কিছু হয়নি। আবার আরেকটা দরখাস্ত লিখে আগামী সপ্তাহে তুমি আমার কাছে নিয়ে আস। তাই সে আবার ফাদারের কথামত দরখাস্ত নিয়ে মিশনে গেল। এবার তার দরখাস্ত গ্রহণ না করে ফাদার তাকে আবার ফেরত পাঠিয়ে দিলেন। মনে মনে সে অনেক বিরক্তি নিয়ে পরবর্তী সপ্তাহে আবারও সেমিনারীতে যাবার অভিপ্রায়ে দরখাস্ত নিয়ে ফাদারের কাছে জমা দিলেন। ফাদার এবার আর তাকে আশাহত না করে তা গ্রহণ করেন এবং তাকে পোষ্ট মেট্রিক কোর্সে পাঠান। সেই থেকে সে তার নম্রতা, বাধ্যতা ও সরলতা নিয়ে গঠন জীবনে বিশ্বস্ত থেকে জীবন গঠনের মাধ্যমে যাজকপদে অভিষিক্ত হন।

পালকীয় কর্মক্ষেত্র
সেমিনারীয়ান হিসেবে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে আন্ধারকৌঠা ধর্মপল্লীতে তাঁর রিজেন্সি করেন এবং ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে ফৈলজনা ধর্মপল্লীতে ডিকন হিসেবে তার ডাইকোনেট মিনিস্ট্রি করেন। ফৈলজনা ধর্মপল্লীতেই ফা:আঞ্জেলো কান্তন পিমে’র সহকারী হিসেবে তাঁর যাজকীয় জীবন শুরু করেন। সেখান থেকে ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি রমনা সেমিনারীতে এক বৎসর সহকারী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি ঝড়াগোপালপুর ধর্মপল্লীতে স্বর্গীয় ফা: জুলিয়ানের সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ফা: কর্ণেলিউস মূর্মূ ২০১১ খ্রিস্টাব্দে উচ্চ শিক্ষার জন্য ফিলিপাইন যান এবং সেখান থেকে ফিরে এসে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে বেনীদুয়ার ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে মহিপাড়া ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন এবং বৎসরের শেষ নাগাত অসুস্থতার কারণে প্রথমে বিশপস হাউজে এবং পরে ঢাকার কিউর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নেন। সেই থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ঢাকা বনানী সেমিনারী থেকে এবং মাঝে মধ্যে রাজশাহীতে থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করে এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত Ahsania Mission Cancer Hospital- এ ভর্তি থেকে গত ৪ আগষ্ট বেলা ০২:২০ মিনিটে পরম পিতার ঐশ আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইহ জগৎ ত্যাগ করে পরম পিতার দ্বারে উপনীত হন।

ফা: কর্ণেলিউস তাঁর ১৫ বছর ৭ মাস ৭দিন যাজকীয় জীবনে বিশ্বস্তভাবে কাজ করেছেন। সে আমাকে মাঝে রহস্য করে বলত যে, আমি হলাম বয়স্ক ফাদার প্যাট্রন। কারণ ফৈলজানা থেকে শুরু করে বেশীর সময় তার সহকারী পাল-পুরোহিতগণ ছিল বয়োজেষ্ঠ। সে বলত আমি তাদের নিয়ে আনন্দেই আছি। তার যাজকীয় জীবনে তিনি অনেক স্বপ্ন দেখতেন। সান্তাল ভাষা, কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধরে রাখার একটা তীব্র আকাংঙ্খা ছিল। সে সব সময় যোগ ব্যায়াম ও খেলাধুলা করতে পছন্দ করত। তাই যাজক হিসেবে এমন পাল-পুরোহিত হওয়ার পরও অনেক জায়গায় তাকে খেলার মাঠে পাওয়া যেত। তিনি ছিলেন স্বভাবে বিনয়ী ও কোমলপ্রাণ। সেই সাথ তিনি ছিলেন ধৈর্য্যশীল ও কষ্ঠ সহিষ্ণু । তার সেই সাক্ষ্য তিনি মৃত্যুর আগ মুর্হুত পর্যন্ত দেখিয়ে গেছেন। আমাদের দুই মিতার পথ চলার পথে একজন খুব তাড়াতাড়ি চলে গেল। তার এ অকাল প্রয়াণ আমাকে স্মরণ জগতের মিতালী শেষ হলে অন্তকালীন সেই স্বর্গীয় মিতালীতে যেন বিছিন্ন না হই। তাই বলি তুমি পরম পিতার কাছে ভাল থাক এবং স্বর্গীয় বন্ধুতে চির মিতা হয়ে থাকার প্রহর গুনছি। ভাল থেকো মিতা।

Please follow and like us: