যিশু বাউলের কাব্য কথা
‘ভাই’ বিকাশ
সেই এক যুগ আগে মরণ ব্যাধি
ক্যান্সার বাসা বেঁধেছিলো তোমার দেহে
সকলের প্রচেষ্টা সাধনা; চিকিৎসা-প্রার্থনার অবসানে
মহা প্রভুর ডাকে, তোমার প্রাণহীন নিথর দেহ
আমাদের মাঝে; শোকের মাতম আমাদের সবাকার হৃদয়ে।
পিতা মাতার সাত সন্তানের কনিষ্ঠ সন্তান তুমি
অতি আদরের বিকাশ বাবু; সুশ্রী-সুন্দর দেহের গড়ন
তীক্ষ্ণ মেধা মনন নিয়ে তোমার এগিয়ে চলা;
বিদ্যালয়ে পড়াশোনা; মনের নিভৃত কক্ষে ‘যাজক হবার স্বপ্ন বোনা’।
‘বিকাশ তুমি বিকশিত’ ফাদার বিকাশ হিউবার্ট নামেই পরিচিত-
ধরেন্ডা ধর্মপল্লীর কমলাপুর গ্রামে তোমার জন্ম
অভিবাসন যাত্রায় তুমি বোর্ণী ধর্মপল্লীর বাগডোব গ্রামের বাসিন্দা
বাড়ন্ত কিশোর হিসাবে-পিতামাতা-আত্মীয় স্বজনের সাথে আগমন।
বিদ্যা লাভ ধ্যান-জ্ঞান ও বেড়ে উঠার সাথে সাথে
যাজক হবার স্বপ্ন দৃঢ় হতে থাকে, মন-অন্তরের গভীরে
সাধনার সিঁড়ি বেয়ে যাজকীয জীবন গঠন, শিক্ষা-অধ্যয়ন শেষে,
তুমি অভিষিক্ত যাজক প্রভুর দ্রাক্ষাক্ষেত্রে
বিশাল জনপদ রাজশাহী ধর্মপ্রদেশে।
তোমার পথ চলা ধর্মপল্লী থেকে ধর্মপল্লীতে
উদারতা-বিশ্বাস-ভালবাসা, আধ্যাত্মিকতা, জ্ঞান-ভান্ডার
ও কৃতজ্ঞতা ডালি নিয়ে, আর সবটুকুই তুমি দিয়েছ
উজার করে, গুণ্য করেছো নিজেকে ভক্ত বিশ্বাসী আপামর জনতার জন্যে।
বিকাশ তোমার সহজাত ডাক; ‘দাদা, ভাই’ আরো কত কিছু
মধুর ভাষণে, দিলখোলা আহ্বানে তুমি সবার প্রিয় ফাদার বিকাশ
পুষে রাখা ক্যান্সারের সাথে তোমার যুদ্ধ শেষে
তুমি নিজেকে সঁপে দিয়েছো পরম পিতার কোলে
ওপারের ‘মাটির ঘরে’ ঘুমাও তুমি একাকি ঔষধপত্র সব রেখে।
তোমার সখের বাগ-বাগিচা, পানের বাটা, পশু-পক্ষী
হারমোনিয়াম, কম্পিউটার ; ধর্মপল্লীতে ফিরে তীব্র আকাংঙ্ক্ষা
সাক্ষী রইলাম আমরা, ঘুমাও তুমি মহাঘুমে
তোমার স্বপ্ন পুরণের সতীর্থ পথিক আমরা
জেগে আছি তোমার স্বপ্ন পুরণে সর্বদা।