ফাদার সুরেশ পিউরীফিকেশন
বিগত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ খ্রিস্টাব্দে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেবকের আহবানঃ “কৃতজ্ঞ হও” এ মূলসুরকে কেন্দ্র করে উত্তম মেষপালক ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লীতে অনুষ্ঠিত হলো পালকীয় কর্মশালা ২০২১ খ্রিস্টাব্দ। উক্ত কর্মশালায় ফাদার, সিস্টার ও খ্রিস্টভক্তসহ ৭০ জন উপস্থিত ছিলেন। প্রথমেই রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ভিকার জেনারেল ও ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার ইম্মানুয়েল কানন রোজারিও, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের চ্যাঞ্চেলর ও মুশরইল ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার উইলিয়াম মুর্মু, কারিতাস রাজশাহী এর আঞ্চলিক পরিচালক মি: সুক্লেশ জর্জ কস্তা, ধর্মপল্লীর পালকীয় পরিষদের সহ-সভাপতি মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেন এবং প্রার্থনার মধ্য দিয়ে এই কর্মশালা শুরু হয়।
পাল-পুরোহিত তাঁর উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, ‘আজকের এই পালকীয় কর্মশালায় আপনারা যারা অংশগ্রহণ করেছেন সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। আজকের এই কর্মশালার মূলসুর হল দায়িত্বপ্রাপ্ত সেবকের আহবানঃ “কৃতজ্ঞ হও” আমরা সৃষ্টির সকল কিছুই উপভোগ করার এবং ঈশ্বরের সকল সৃষ্টির যত্ন করা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পেয়েছি। এ সকল দায়িত্ব পালন করতে আমরা অনেক বার ব্যর্থ হয়েছি। কারণ, ঈশ্বরের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ নই। আমরা কৃতজ্ঞ হলে ঈশ্বরের উপহারের জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাতাম, তাঁর সকল সৃষ্টিকে সম্মান, যত্ন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করতাম। তাই ,আপনাদের প্রতি আহ্বান এই কর্মশালার মধ্যদিয়ে যে পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন তা শুধু কথায় নয় নিজ নিজ গ্রামে, ব্লকে বা মহল্লায় বাস্তবায়ন করার মধ্যদিয়ে ধর্মপল্লীর প্রতি তথা ধর্মপ্রদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেন।
দায়িত্বপ্রাপ্ত সেবকের আহবানঃ “কৃতজ্ঞ হও” এই মূলসুরের আলোকে রাজশাহী কারিতাস এর আঞ্চলিক পরিচালক মি: সুক্লেশ জর্জ কস্তা বলেন,‘ আমরা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে ঈশ্বরের কাছ থেকে অনেক অনেক আশির্বাদ-অনুগ্রহ ও দান পেয়েছি। মণ্ডলির কাছ থেকেও অনেক কিছু পেয়েছি যার জন্য আমাদেরকে প্রতিনিয়ত ঈশ্বরের প্রতি ও মণ্ডলির প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা আবশ্যকীয় দায়িত্ব। তাই, আমরা যেন নিজ নিজ কৃষ্টি-সংস্কৃতির রীতি-নীতি অনুসারে যেন এই কৃতজ্ঞ হওয়ার মনোভাব গড়ে তুলি।
ফাদার উইলিয়াম মুর্মু বলেন, আমরা যেন আমাদের সন্তানদের মঙ্গলসমাচারের উপযুক্ত শিক্ষা ও নৈতিক গঠন দান করি। পরিবারে, সমাজে ও স্থানীয় মণ্ডলিতে “কৃতজ্ঞ হওয়ার” সংস্কৃতি গড়ে তুলি”।
মি: গাব্রিয়েল হাঁসদা বলেন, ‘আমাদের জীবন, সকল সৃষ্টি-কৃষ্টি, বিশ্ব-ব্রহ্মান্ড, পরিবার, সমাজ ও মণ্ডলির মধ্যে যা কিছু আছে সবই ঈশ্বরের দান। ঈশ্বর প্রতিনিয়ত আমাদের প্রয়োজনীয় সব কিছুই দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু, আমরা অনেকবার ঈশ্বরের প্রতি ও মণ্ডলির প্রতি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, মণ্ডলির বিরোধিতা করি, অখ্রিস্টীয় ও অনৈতিক জীবন-যাপন করি, অসহযোগিতার মনোভাব পোষণ করি যা শোভনীয় নয়। তাই, খ্রিস্টবিশ্বাসী হিসেবে আমাদেরকে আরও ভাবতে হবে এবং ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে হবে। বিশ্বাসের গভীরতা দেখিয়ে আন্তরিকতার সাথে দানশীল হতে হবে ও মণ্ডলির কাজে সহযোগিতা করতে হবে। এটাই হবে কৃতজ্ঞতার প্রকাশ।
এরপর বিভিন্ন গ্রামভিত্তিক দলীয় আলোচনার মাধ্যমে ধর্মপল্লীর জন্য সুন্দর ও অর্থপূর্ণ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। শেষে পাল-পুরোহিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে কর্মশালার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।