গত ০৪ থেকে ০৯ অক্টোবর, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় সেবাকেন্দ্রে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশীয় যুব কমিশন এবং কারিতাস রাজশাহী অঞ্চলের আয়োজনে নেতৃত্ব ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ধর্মপ্রদেশের বিভিন্ন ধর্মপল্লী থেকে ও সাধু পিতরের সেমিনারীর সেমিনারীয়ানসহ মোট ৪২ জন অংশগ্রহণ করে। এ প্রশিক্ষণের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল “পিতর অর্থাৎ পাথর এই পাথরের উপরই আমি আমার মণ্ডলি গড়ে তুলব (লুক)।” উক্ত কর্মসূচীর উদ্বোধনী খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন শ্রদ্ধেয় ফাদার উইলিয়াম মুরমু, চ্যাঞ্চেলর রাজশাহী ধর্মপ্রদেশ। তিনি নেতৃত্ব ও দক্ষতা অর্জন এবং প্রশিক্ষণের গুরুত্বের উপর তার উপদেশ বাণী রাখেন। সেই সাথে উল্লেখ করেন যে, খ্রিস্ট হল আমাদের আদর্শ নেতা। তাই খ্রিস্টের প্রেম, ভালবাসা ও সেবার আদর্শই হবে আমাদের খ্রিস্টীয় নেতৃত্বের মূল বিষয়বস্তু। অতঃপর রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ভিকার জেনারেল ফাদার ইম্মানুয়েল কানন রোজারিও “দায়িত্বশীল নেতা, নেতৃত্বের ধারণা ও বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে তার উপস্থাপনা প্রদান করেন। সেই সঙ্গে তিনি পবিত্র বাইবেলের আলোকে নেতৃত্ব কীরূপ হওয়া প্রয়োজন তারও দিক নির্দেশনা দেন। নেতৃত্বের বাস্তবতা: সংকট, সম্ভাবনা ও প্রয়োজনীয়তা এ বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন মিঃ অসীম ডি ক্রুশ, কারিতাস রাজশাহী। ফাদার যোহন উত্তম রোজারিও যুব নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা: পবিবার, সমাজ, মণ্ডলি ও দেশ এ বিষয়ের উপরের উপস্থাপনা দেন। সু-সম্পর্ক গড়ে তুলি এই প্রতিপাদ্য বিষয়টিকে কেন্দ্র করে Development Communication সম্পর্কে আলোকপাত করেন, রাজশাহী কারিতাস অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক মিঃ সুক্লেশ জর্জ কস্তা। Core Humanitarian Standards বিষয়ে আলোকপাত করেন মিঃ দিপক এক্কা। মিঃ চয়ন হিউবার্ট রিবেরু, পরিকল্পনানুসারে জীবন যাপন করি: এ প্রতিপাদ্য বিষয়ে একজন নেতা কীভাবে Facilitation skill বাড়াতে পারে সে সম্পর্কে এবং একই সঙ্গে তিনি SDG Issues: Plan of church & Government বিষয়ের উপরে প্রশিক্ষণার্থীদের ক্লাস দেন । Social Analysis: Indignus, Women এ বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন মিসেস লিনা রোজারিও। Child protection and safe guard বিষয়টির উপর বিশেষ ভাবে আলোকপাত করেন মিস লুচিয়া মার্ডী, কারিতাস রাজশাহী।
প্রশিক্ষণের শেষ দিনে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ধর্মপাল বিশপ জের্ভাস রোজারিও’র সাথে অংশগ্রহণকারীদের এক মত বিনিময় অনুষ্ঠান করা হয়। এতে অংশগ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে বিশপ মহোদয়ের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন প্রশিক্ষণার্থীগণ এবং তাদের প্রতিটি প্রশ্ন বিশপ মহোদয় গুরুত্ব সহকারে শুনেন এবং উত্তর প্রদান করেন। পরে প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে সার্টিফিকেট বিতরণ করেন বিশপ জের্ভাস রোজারিও।
এরপরে সমাপণী খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ জের্ভাস রোজারিও। তার সহর্পিত খ্রিস্টযাগে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশীয় যুব কমিশনের সমন্বয়কারী ফা: নবীন পিউস কস্তা ও ফা: উত্তম রোজারিও। খ্রিস্টযাগের উপদেশে বিশপ মহোদয় বলেন-যুবক-যুবতীগণ আমাদের মণ্ডলির প্রাণ বা সম্পদ। তাই, এ যুব সমাজকে রক্ষণাবেক্ষণ করতে যুব নেতৃত্বের দরকার। আর তোমরা এ বিষয়ে বেশ কয়েকদিন যাবত প্রশিক্ষণ নিয়ে যা কিছু অর্জন করেছ তা তোমাদের বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করে ভবিষ্যৎ মণ্ডলিকে খ্রিস্টের আদর্শ মণ্ডলি হিসেবে গড়ে তুলবে। এটাই তোমাদের কাছে আমার প্রত্যাশা। আমি চাই, তোমাদের সমস্ত মেধা, সময়, শক্তি ও সামর্থ্য দিয়ে মণ্ডলির সকল কাজে এগিয়ে যাও। যেন তোমাদের কাছ থেকেই আগামী প্রজন্ম ভাল জীবন ও যুব নৈতিকতার আদর্শ নিয়ে বিকশিত হতে পারে এক সম্ভাবনাময় ভাবী-যুবামণ্ডলি ।