গত ১৫ জানুয়ারি, রোজ শনিবার ২০২২ খ্রিস্টাব্দে সাধু যোসেফের ধর্মপল্লী রহনপুরে শ্রদ্ধেয় ফাদার বার্ণাড টুডু-এর যাজকীয় জীবনের ২৫ বছরের পূর্তি উপলক্ষ্যে রজত জয়ন্তী উৎসব উদযাপন করা হয়। জুবিলী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিস্বরূপ গত ১৪ জানুয়ারি বিকাল ৫:৩০ মিনিটে গীর্জায় পবিত্র সাক্রামেন্তের আরাধনা করা হয়। ১৫ জানুয়ারি খ্রিস্টযাগের আগে শ্রদ্ধেয় ফা: বার্ণাড টুডুসহ তার সহপাঠি জুবিলী উদযাপনকারী ফা: বার্ণাড রোজারিও, ফা: দিলীপ এস.কস্তা ও ফা: সুশান্ত ডি.কস্তাকে দারাম করে গীর্জা প্রাঙ্গণে নিয়ে আসা হয়। অত:পর সান্তালি কৃষ্টি অনুযায়ী প্রথমে তাদের পা ধোঁয়ানো হয় এবং পরে ফুলের মালা ও গানের মধ্যদিয়ে পবিত্র খ্রিস্টযাগের জন্য প্রস্তুত করা হয়। শোভাযাত্রা করে জুবিলী উদযাপনকারী ফাদারগণ, বিশপ মহোদয় ও অন্যান্য ফাদারগণ বেদী প্রান্তে উপণীত হন। এরপর ২৫ বছরের ২৫টি প্রদীপ প্রজ্জলন করেন পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ জের্ভাস রোজারিও ও এ বছর জুবিলী উদযাপনকারী চার জন ফাদার।
জুবিলীর এই মহা খ্রিস্টযাগে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপ জের্ভাস রোজারিও, ১৮ জন ফাদার বেশ কয়েকজন সিস্টার এবং বিভিন্ন গ্রামের প্রার্থনা পরিচালকগণসহ খ্রিস্টভক্তগণ। জুবিলীর মহা খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন জুবিলী উদযাপনকারী ফাদার বার্ণাড টুডু। তিনি তার উপদেশে যাজকীয় জীবনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকে তার জীবনের সুখ-দুঃখ ও আনন্দের সহভাগিতা করেন। বিশেষভাবে তার যাজকীয় জীবনের বিনা দোষে তিন মাসের কারাবন্দি অবস্থাকে সাধু পৌলের জীবনের কারাবন্দির সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, এই অভিজ্ঞতা যদিও কষ্টের ছিল তবুও সাধু পৌলের দিকে তাকিয়ে আমার এই দুঃখ-কষ্টকে অনেকাংশেই সাধু পৌলের চেয়ে কম বলেই মনে করি।
খ্রিস্টযাগের শেষে বিশপ মহোদয় এ বছরের জুবিলী উদযাপনকারী চারজন ফাদারকেই শুভেচ্ছা অভিনন্দন জানান। বিশেষভাবে ফা: বার্ণাড টুডুকে তার শুভেচ্ছা অভিনন্দন জ্ঞাপন করে বলেন; সত্যিই ফা: বার্ণাড টুডু’র জীবনের জন্য আমরা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। তার এই সুদীর্ঘ ২৫টি বছর শুধুমাত্র আনন্দেরই ছিল না, ছিল যিশুর ক্রুশের বোঝাও। আমরা তার উপদেশ বাণীতে শুনেছি তার জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু কষ্টের কথা। তারপরেও তিনি বিশ্বস্তভাবে তার যাজকীয় সেবাকাজ করে আজকের এই দিনে উপণীত হয়েছেন। আজকে আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই এবং প্রার্থনা করি যেন আগামী দিনগুলিও তিনি বিশ্বস্ততার সাথে ঈশ্বরের ইচ্ছা পূর্ণ করে মঙ্গলবাণী প্রচার করার কাজে সদা তৎপর থাকতে পারেন। বিশেষভাবে আজকে তার স্বর্গীয় মা-বাবার জন্যে প্রার্থনা করি; যেন ঈশ্বর তাদেরকে চিরশান্তি ও অনন্ত বিশ্রাম দান করেন।
খ্রিস্টযাগের পরপরই রজত জুবিলী উদযাপনকারী ফাদার বার্ণাড টুডুকে ঘিরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এছাড়াও জুবিলী উদযাপনকারী ফা: বার্ণাড টুডুকে প্রীতি উপহার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে ফা: বার্ণাড টুডু’র পরিবারে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়।
বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার