গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, রোজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯:৩০ মিনিটে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের মধ্য ভিকারিয়ার সাধু লুইসের ধর্মপল্লী, কলিমনগরের হলরুমে ১ জন বিশপ, ১৯ জন ফাদার, ১২ জন সিস্টার ও ৩২ জন খ্রিস্টভক্তদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয় মধ্য ভিকারিয়ার সভা।
প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, মঙ্গলসমাচার থেকে পাঠ ও ধর্মপল্লীর মেয়েদের ভক্তিমূলক নৃত্যের মধ্য দিয়ে সভার আরম্ভ হয়। এছাড়াও মধ্য ভিকারিয়ায় কর্মরত নবাগত ফাদার-সিস্টারদের জন্য ছিল ফুলের শুভেচ্ছা। ভিকারিয়ার সভা সঞ্চালক ফাদার হেনরী পালমা মধ্য ভিকারিয়ার ধর্মপল্লীগুলোর ‘সিনোডালিটি’র উপর প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করার অনুরোধ জানালে ফাদার প্যাট্রিক গমেজ তা তুলে ধরেন। ফাদার প্যাট্রিক গমেজ পরিবার, সমাজ ও মণ্ডলির উপর জোর আরোপ করে বলেন, পরিবারের চ্যালেঞ্জপূর্ণ বাস্তবতায় সিনোডালিটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় সিনোডালিটির জন্য সমাজ ও মণ্ডলিতে পরিবার থেকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। ধর্মপল্লীর বৃত্তে সবাই দায়িত্ব পালন করবেন। তবে পাল-পুরোহিত নেতৃত্ব দেবেন। সবাইকে দায়িত্ববন্টন ও সংলাপ করতে হবে। শিক্ষা সেমিনার কর্মশালার আয়োজন করে সিনোডাল মণ্ডলি গঠন সম্ভব।
ধর্মপল্লীগুলোর প্রতিবেদনের আলোকে বিশপ জের্ভাস রোজারিও অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, ধর্মপল্লীতে জনগণকে নিয়ে কি করা হয়, জনগণ নিজেরা কি করে বা কি করে না অর্থাৎ সামগ্রিক একটি চিত্র যেন উঠে আসে এবং এই সভায় সবাই যেন কথা বলেন।
কারিতাস বাংলাদেশ রাজশাহী অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক মি: সুক্লেশ জর্জ কস্তা বলেন, সিনোডালিটির প্রধান প্রশ্নটির আলোকে বাস্তবে ধর্মপল্লীর ফাদার, সিস্টার ও জনগণ কিভাবে একসাথে পথ চলছেন তাই পুণ্যপিতা ফ্রান্সিস শুনতে চান।
এরপর সিনোডালের প্রধান প্রশ্নকে কেন্দ্র করে উত্তর প্রস্তুতের জন্য প্রতিটি দলে ৩টি ধর্মপল্লী ১ ঘন্টার জন্য (ক্যাথিড্রাল-কলিমনগর-মুশরইল, আন্ধারকোঠা-নবাইবটতলা-সুরশুনিপাড়া, মুন্ডুমালা-দেলোয়াবাড়ি-মহিপাড়া) আলোচনায় বসে। পরবর্তীতে ধর্মপল্লীগুলোর একজন প্রতিনিধি প্রশ্নের আলোকে প্রস্তুতকৃত উত্তর উপস্থাপন করেন। উত্তরের আলোকে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ভিকার জেনারেল ফাদার ইন্মানুয়েল কানন রোজারিও অভিমত ব্যক্ত করে বলেন যে, আমাদের উত্তর শুধুমাত্র ধর্মপল্লীকেন্দ্রিকই হয়ে যাচ্ছে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও মণ্ডলিকেন্দ্রিক হলে আরও প্রাসঙ্গিক হতো।
একই সভায় কলিমনগর ধর্মপল্লীর খ্রিস্টভক্তগণ বড়দিনে সরকারী বরাদ্দকৃত অর্থ দ্বারা ৩০টি চেয়ার ক্রয় করে ধর্মপল্লীর হলরুমের জন্য বিশপের নিকট প্রদান করেন। সমাপনী বক্তব্যে আঞ্চলিক পরিচালক মি: সুক্লেশ জর্জ কস্তা সবাইকে অবগত করে বলেন, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের অনেক জমিতে খ্রিস্টভক্তরা বসবাস করছেন। তারা যেন জমির মালিকানা লাভ করেন সে চেষ্টা করছে ধর্মপ্রদেশ। বিশপ জের্ভাস রোজারিও বলেন, পরিবারের মধ্যে যখন খ্রিস্টিয় মূল্যবোধ থাকে তখন তা সিনোডালিটি। এরপর মধ্য ভিকারিয়ার আহ্বায়ক ফাদার সুব্রত পিউরীফিকেশন সবাইকে সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ জানান এবং দুপুর ১:০০ ঘটিকায় দুপুরের আহারের মধ্য দিয়ে দিনের কার্যক্রম সমাপ্ত হয়।
বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার: ফাদার সাগর কোড়াইয়া