গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ খ্রিস্টাব্দ রোজ রবিবার ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লীতে মোট ১৩৪ জন ছেলে-মেয়েকে প্রথম কম্যুনিয়ন এবং হস্তার্পণ সাক্রামেন্ত প্রদান করা হয়। প্রথম কম্যুনিয়ন এবং হস্তার্পণ সাক্রামেন্ত প্রদান খ্রিস্টযাগে প্রধান পৌরহিত্যকারী হিসেবে ছিলেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ধর্মপাল পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ জের্ভাস রোজারিও। সেই সাথে উপস্থিত ছিলেন ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত এবং রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ভিকার জেনারেল শ্রদ্ধেয় ফাদার ইম্মানুয়েল কানন রোজারিও, সহকারী পাল-পুরোহিত ফাদার উত্তম রোজারিও এবং ফাদার সুরেশ পিউরিফিকেশন। উক্ত খ্রিস্টযাগে  আরও উপস্থিত ছিলেন ব্রাদার, সিস্টারসহ প্রায় ৫০০ জন খ্রিস্টভক্ত ।

প্রথম কম্যুনিয়ন এবং হস্তার্পণ সাক্রামেন্ত গ্রহণের পূর্ব প্রস্তুতিস্বরূপ কয়েকদিন আগে থেকেই ফাদার, সিস্টার এবং ভলেন্টিয়ারসগণ  বিভিন্ন ক্লাসের মাধ্যমে ছেলে-মেয়েদেরকে প্রস্তুত করেন। আধ্যাত্মিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য ছেলে-মেয়েরা গত শুক্রবারে পাপস্বীকারে অংশগ্রহণ করে।

পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ মহোদয় তার  উপদেশে বলেন- খ্রিস্টপ্রসাদ হলো খ্রিস্টমণ্ডলির সাতটি সংস্কারের সর্বোৎকৃষ্ট সংস্কার। এই সংস্কারের বিষয়ে মণ্ডলি বলে : “পবিত্রতম খ্রিস্টপ্রসাদ হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ সংস্কার যার মধ্যে স্বয়ং খ্রিস্ট-প্রভু উপস্থিত থাকেন, উৎসর্গীকৃত হন এবং গৃহীত হন, যার মাধ্যমে মণ্ডলি জীবন ধারণ করে ও বৃদ্ধি লাভ করে। খ্রিস্টপ্রসাদীয় বলিদান, তথা খ্রিস্টের মৃত্যু ও পুনরুত্থানের স্মরণোৎসব, যার মধ্যদিয়ে যুগ যুগ ধরে ক্রুশীয় বলিদান উদযাপিত হয়ে আসছে, সেই খ্রিস্টযাগ হচ্ছে সকল খ্রিস্টীয় উপাসনা ও খ্রিস্টীয় জীবনের শিখর ও উৎস।

তিনি আরো বলেন-খ্রিস্টমণ্ডলির অন্যতম সংস্কারের মধ্যে আরেকটি হলো হস্তার্পণ। হস্তার্পণ সংস্কারে দীক্ষিত খ্রিস্টভক্তদের অন্তরে একটি ‘ছাপ’ বা চিহ্ন অঙ্কিত হয় যার ফলে খ্রিস্টীয় জীবনে প্রবেশের পথে খ্রিস্টভক্তগণ পবিত্র আত্মার অনুগ্রহদানে পূর্ণ হয় এবং মণ্ডলির সঙ্গে আরো দৃঢ়ভাবে যুক্ত হয়। এই সংস্কারে তারা বিশেষ শক্তি লাভ করে কথায় ও কাজে খ্রিস্টের সাক্ষী হতে এবং খ্রিস্টীয় বিশ্বাস রক্ষা ও প্রচার করতে। এজন্য সাক্রামেন্ত গ্রহণের পরে যেন আমরা বেশী করে গীর্জা প্রার্থনায় অংশগ্রহণ করি এবং পাপ কাজ থেকে বিরত থেকে সৎ জীবন-যাপন করতে পারি।

খ্রিস্টযাগের পরে শ্রদ্ধেয় ফাদার ইম্মানুয়েল রোজারিও সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য এবং বিভিন্ন সহায়তা প্রদানের জন্য সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এরপরে বিশপ মহোদয়কে ফুলের মাধ্যমে ধন্যবাদ দেয়া হয়। পরিশেষে, ছেলে-মেয়েদের মাঝে সার্টিফিকেট এবং হালকা নাস্তা প্রদানের মধ্য দিয়ে সবাই আনন্দ মনে ফিরে যায়।

বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার : জ্যোতি মুরমু

Please follow and like us: