ফাদার সুনীল রোজারিও। বরেন্দ্রদূত প্রতিবেদক
ভূমিকা : ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস, ২০২২ খ্রিস্টাব্দের তপস্যাকালীন বাণীর পটভূমিকায় গালাতীয়দের কাছে সাধু পৌলের পত্র থেকে উল্লেখ করেন, “আমরা যেন সৎ কাজ করেই চলি, কখনো ক্লান্তি না মানি। কেনো না আমাদের কাজে যদি শিথিলতা না আসে, তাহলে আমরা ঠিক সময়ে ঠিক ফসল পাবই। তাই বলি- এসো, যতক্ষণ সময়-সুযোগ আছে, আমরা বরং সবার মঙ্গল করতেই চেষ্টা করি- বিশেষ ক’রে তাদেরই মঙ্গল করতে, যারা একই খ্রিস্টবিশ্বাসের বন্ধনে আমাদের আপনজন (৬:৯-১০)।” পটভূমিকায় পোপ নিজের কথায় বলেন, “আমরা প্রার্থনায় যেনো ক্লান্তি না মানি, আমরা মন্দের মূল-উৎপাটন করতে যেনো ক্লান্তি না মানি, আমরা যেনো ভালো কাজ করতে ক্লান্তি না মানি।” তিনি ভস্ম বুধবারকে ইউক্রেইন দেশের শান্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনা ও উপোসের আহ্বান জানান।
পোপের তপস্যাকালীন বাণী
স্নেহের ভাই-বোনেরা,
তপস্যাকাল হলো ব্যক্তিগত এবং সমাজ জীবন নবীকরণের উপযুক্ত সময় এবং সময়টা আমাদের বয়ে নিয়ে যায় যিশুখ্রিস্টের রহস্যময় মৃত্যু ও পুনরুত্থানের দিকে। আমাদের ২০২২ খ্রিস্টাব্দের তপস্যাকালের যাত্রাপথে আমরা ধ্যান করবো গালাতীয়দের কাছে সাধু পৌলের পত্রের অংশ থেকে (৬:৯-১০)।
১। বীজ বপন এবং ফসল ফলন : সঠিক সময়ে বীজ বপন করতে হয়- অধিক ফসল লাভের জন্য। তাহলে আমাদের জন্য বীজ বোনার সঠিক সময় কোনটি ? নিঃসন্দেহে এই সঠিক সময় হলো তপস্যাকাল। তপস্যাকাল আমাদের গোটা জীবনের অস্তিত্ব প্রকাশ করে। মাঝে মধ্যেই আমাদের জীবনে আসে লোভ, অহংকার, অধিক পার্থিব বস্তুর আশা, সংগ্রহ এবং ভোগ করার প্রবণতা। কিন্তু কী হবে তাতে ? দেখুন বাইবেলের সেই বোকা লোকটিকে। লোকটি প্রচুর ফসল পেয়েছিলো। ঈশ্বর বললেন, “আজ রাতেই তোমার প্রাণটা কেড়ে নেওয়া হবে (লুক ১২:১৬-২১)।” অতএব, তপস্যাকাল আমাদের আমন্ত্রণ জানায়, “পরিবর্তনের জন্য, মনের পরিবর্তন- যেন পরিবর্তনে জীবনের সত্য এবং সৌন্দর্য প্রকাশিত হয়- পাওয়ার জন্য নয়, দেওয়ার জন্যে; স্তুপ করে না রেখে বুনে দেওয়ার জন্যে এবং ভালো-কিছু ভাগাভাগী করার জন্যে।”
ঈশ্বর প্রথম থেকেই ”তাঁর দয়ার বশবর্তী হয়ে মানব পরিবারে প্রচুর পরিমানে ভালোবাসার বীজ বুনেই চলেছেন (সবাই ভাই-বোন, ৫৪)।” তাহলে এই তপস্যাকালে আমাদের আহ্বান করা হচ্ছে যেনো আমরা তাঁর দান গ্রহণ করি এভাবে, “বাণী সপ্রাণ ও সক্রিয় (হিব্রু ৪:১২)।” নিয়ত এই বাণী শ্রবণে আমরা তাঁর কাজে নিজেকে প্রকাশ ও অবশ্য হই- ফসল ফলাবার জন্যে।” এভাবে আমরা ঈশ্বরের সঙ্গে কাজের সহকর্মী হয়ে ওঠি। বর্তমান সময়টার সদ্ব্যবহার ক’রে (এফেসীয় ৫:১৬) আমরাও মঙ্গলের জন্য বীজ বুনতে পারি। এই কল্যাণের জন্য বীজ বোনাকে একটা বোঝা হিসেবে না দেখে- দেখতে হবে অনুগ্রহ হিসেবে, যার মধ্যদিয়ে সৃষ্টিকর্তা চান তাঁর কল্যাণ কাজের সঙ্গে আমরাও সক্রিয় থাকি।
ফসল তোলা কী ? আমরা কী বীজ বপন করি না পাকা ফসল তোলার জন্য ? বীজ বোনা এবং ফসল পাকার মধ্যে যে একটা ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে এই বিষয়ে পৌল বলেন, “যে মানুষ কৃপণ হয়ে স্বল্প বীজ বোনে, সে তো পায় স্বল্প ফসল; যে মানুষ উদার হয়ে বেশি বীজ বোনে, সে তো পায় অনেক ফসল (২করি ৯:৬)।” কিন্তু আমরা কী ধরনের ফসলের কথা বলছি ? সবার আগে ভালো ফসল হলো- আমাদের নিজেদেরকে বোনা, আমাদের দৈনন্দিন জীবন, এমনকী আমাদের ছোট ছোট দয়ার কাজগুলো বোনা। ঈশ্বরের নামে কোনো ভালোবাসা তা যতো ছোটই হোক এবং যতসব দয়াশীল উদ্যোগ- কোনোটা হারাবার নয়। যেমন একটি গাছকে তার ফলেই চেনা যায় (মথি ৭:১৬,২০), জীবন যদি ভালো কাজে পরিপূর্ণ থাকে তবে ভরে ওঠে উজ্জ্বল আলোয় (মথি ৫:১৪-১৬) এবং বিশ্বে খ্রিস্টের সুরভি ছড়ায় (২করি ২:১৫)। পাপশূন্য হয়ে ঈশ্বরের সেবা করা যা বিশ্বে সবার পবিত্রতা ও মুক্তি বয়ে আনে (রোমীয় ৬:২২)।
কিন্তু বাস্তবে দেখি, মঙ্গলসমাচারে বর্ণিত, যা বোনা হয় তা থেকে সে মাত্র অল্প ফসল পায়- প্রবাদটি হলো, “একজন বীজ বুনে যায়, ফসল কাটে আর একজন (যোহন ৪:৩৭)।” যখন আমরা অন্যের মঙ্গলের জন্য বুনে যাই, তখন আমরা ঈশ্বরের বদান্যতাই সহভাগিতা করি। “বাস্তবিকভাবেই আমরা যা বুনি, সেই বীজের গোপন রহস্য-শক্তির উপর আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে- যা অন্যের উদ্যোগ-প্রচেষ্টায় ফসল ফলে। অন্যের কল্যাণের জন্যে ভালোবাসা বোনা- সংকীর্ণতা ঘুচায়, আত্ম-গৌরব অস্বীকার করে এবং আমাদের ঈশ্বরের মহা বলয়ের বদান্য পরিকল্পনার অংশী করে তোলে।
ঈশ্বরের বাক্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী প্রসারিত ও উন্নত করে। আসল ফসল উত্তোলন হলো অনন্তকালের, শেষদিনের ফসল, যে দিনের ধ্বংস নেই। আমাদের জীবনের পরিপক্ক ও কার্যকরী ফসল হলো “শাশ্বত জীবনের ফসল (যোহন ৪:৩৬)” আমাদের “স্বর্গীয় সম্পদ (লুক ১২:৩৩; ১৮:২২)।” যিশু বীজের প্রতীক হিসেবে নিজের মৃত্যু দিয়ে অধিক ফসল ফলানোর উদাহরণ দেখিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে সাধু পৌল দেহের পুনরুত্থান সম্পর্কে বলেছেন, “ওই যে দেহ, যা মাটিতে পুঁতে রাখা হয় তা নশ্বর; যা পুনরুত্থিত হয় তা অনশ্বর; যা পুঁতে রাখা হয় তা হেয়, যা পুনরুত্থিত হয় তা গৌরবময়। যা পুঁতে রাখা হয় তা দুর্বল, যা পুনরুত্থিত হয় তা শক্তিশালী (১করি ১৫:৪২-৪৩)।” পুনরুত্থানের আশা একটা মহাজ্যোতি- যা খ্রিস্ট পৃথিবীতে এনেছেন কারণ, “আমরা যদি শুধু এই জীবনে খ্রিস্টের ওপর ভরসা রেখে থাকা মানুষই হই- শুধু এটুকুই, তাহলে সকল মানুষের মধ্যে আমরাই তো সবচেয়ে দুর্ভাগা। আসলে কিন্তু খ্রিস্ট মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিতই হয়েছেন- শেষ নিদ্রায় নিদ্রিত হয়েছে যারা, তিনি তাদের মধ্যে যেনো নতুন ফসলের সেই প্রথম ফসলেরই মতো (১করি ১৫:১৯-২০)।” যারা তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে ভালোবাসার সান্নিধ্যে রয়েছেন, “সেদিন ধার্মিকেরা তাদের পিতার সেই রাজ্যে সূর্যের মতোই দীপ্তিমান হয়ে উঠবে (মথি ১৩:৪৩)।”
২। আসুন কল্যাণ করতে যেনো ক্লান্তি না মানি : খ্রিস্টের পুনরুত্থান বিশ্ববাসীর আশাকে প্রাণবন্ত ক’রে একটি ‘বৃহৎ আশা’ দেখিয়ে আমাদের এই কালে অনন্ত জীবনের বীজ বপন করেছেন। তিক্ত হতাশা স্বপ্নকে ভেঙ্গে দিচ্ছে, সামনের দিনের দৃঢ় চ্যালেঞ্জকে দুর্বল সম্পদ হতাশার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে- যেগুলো আমাদের সত্ত্বাকে নিজেদের মধ্যে গুটিয়ে দিয়ে অন্যের বেদনার কারণ করে তুলছে। আমাদের যে শ্রেষ্ঠ সম্পদ সেখানেও সীমাবদ্ধতা রয়েছে: “তরুণেরা ক্লান্ত শ্রান্ত হয়, যুবকেরা হোঁচট খেয়ে মাটিতে পড়ে (ইসা. ৪০:৩০)।” তবুও ঈশ্বর, “ক্লান্তকে শক্তি দেন, শক্তিহীনদের বল বৃদ্ধি করেন … কিন্তু যারা প্রভুতে আশা রাখে, তারা নবীন শক্তি লাভ করবে, তারা ঈগলের মতো ডানা মেলবে, দৌড়ালে শ্রান্ত হবে না, হাঁটলে ক্লান্ত হবে না (ইসা. ৪০:২৯, ৩১)।” তপস্যাকাল আমাদের আহ্বান করে প্রভুর ওপর আমাদের বিশ্বাস এবং আশা স্থাপন করতে (পিতর ১:২১), আর আমরা যদি পুনরুত্থিত খ্রিস্টের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করি (হিব্রæ ১২:২), তাহলে আমরা সামর্থ হবো প্রাবক্তিকভাবে বলতে, “আমরা যেনো সৎ কাজ করেই চলি, কখনো ক্লান্তি না মানি (গালা. ৬:৯)।”
২.১. প্রার্থনা করতে যেনো ক্লান্তি না মানি : যিশু আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, “সর্বদাই প্রার্থনা করে যাওয়া উচিত, কখনো নিরাশ হয়ে পড়া উচিত নয় (লুক ১৮:১)।” আমাদের প্রার্থনার প্রয়োজন কারণ আমাদের ঈশ্বরকে প্রয়োজন। যদি মনে করি আমাদের কিছুই প্রয়োজন নেই- তা হবে বিপদজনক কল্পনা। যদি মহামারি আমাদের ব্যক্তিগত এবং সমাজিক ভঙ্গুরতার উপলব্ধি তীব্রতর করে থাকে, তাহলে এই তপস্যাকাল আমাদের সান্তনার অভিজ্ঞতা করতে সাহায্য করবে- ঈশ্বরের প্রতি আমাদের বিশ্বাস, যাঁকে ছাড়া আমাদের শক্ত হয়ে দাঁড়ানো সম্ভব নয় (ইসা ৭:৯)। কারো পক্ষে একা মুক্তি সম্ভব নয়, কারণ আমরা ঝড়ের ইতিহাসে সবাই একই নৌকার যাত্রী ও এটা নিশ্চিত যে কেউ ঈশ্বর ব্যতিত মুক্তিলাভ করতে পারবে না এবং একমাত্র খ্রিস্টের ক্রুশীয় বিজয় রহস্য- ঘোর অন্ধকার জলরাশির মৃত্যু থেকে মুক্তি দিতে পারে। বিশ্বাস আমাদের জীবনকে শুধু দুর্বিসহ থেকে মুক্তি দেয় না কিন্তু আমাদের সহায়তা করে ঈশ্বরের সান্নিধ্য নিয়ে খ্রিস্টেতে সেসব কষ্ট মোকাবেলা করা এবং বিশ্বাস করা যে, ঈশ্বরের ভালোবাসা পবিত্র আত্মার মধ্যদিয়ে আমাদের অন্তরে রয়েছে (রোমীয় ৫:১-৫)।
২.২. আসুন আমাদের জীবন থেকে মন্দ শেকড় উৎপাটন করতে ক্লান্তি না মানি : তপস্যাকালে আমাদের এই দৈহিক উপোস আহ্বান করছে পাপের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে, অন্তরে বলীয়ান হতে। পাপস্বীকার ও পুর্ণমিলন সংস্কারের মধ্যদিয়ে আমরা যেনো ক্ষমা প্রার্থনা থেকে ক্লান্তি না মানি এবং মনে রাখতে হবে ঈশ্বর আমাদের ক্ষমাদানে ক্লান্ত হোন না। আমরা যেনো কামপ্রবৃত্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে ক্লান্তি না মানি- এই দুর্বলতা স্বার্থপরতা আর সব মন্দ স্বভাব ডেকে আনে এবং যা ইতিহাসে নারী-পুরুষের মধ্যে পাপের প্রলোভন এনে দেয়। একটি বড় আসক্তি হলো ডিজিটাল গণমাধ্যম যা মানব সম্পর্ক বিনষ্ট করে। তপস্যাকাল হলো উপযুক্ত সময় যে সময়ে আমরা এই নেশাগুলো রহিত ক’রে মানুষের মধ্যে সমন্বিত যোগাযোগ, টেকসই, প্রত্যক্ষ ও মুখোমুখি সম্পর্ক রচনা করতে পারি।
২.৩. আসুন প্রতিবেশীর প্রতি সক্রিয় উদারতা নিয়ে ভালো কাজে ক্লান্তি না মানি : এই তপস্যাকালে আমরা যেনো আনন্দচিত্তে¡ দান অনুশীলন করি (২করি. ৯:৭)। ঈশ্বর যিনি, “বীজ বুনিয়ের হাতে বীজ তুলে দেন, মানুষের মুখে তুলে দেন অন্ন (২করি ৯:১০)” যেনো আমরা শুধু প্রত্যেকে খাদ্যে সক্ষম হবো তা নয়, কিন্তু যেনো আমরা অন্যের প্রতিও সদয় হই- ভালো করার জন্য। যদিও এটা সত্য যে, গোটা জীবন ভালো বীজ বপন করতে হবে, তার পরেও আসুন এই তপস্যাকালে যারা আমাদের ঘনিষ্টজন এবং যে সমস্ত ভাই-বোন চলার পথে আহত হয়ে আছেন, তাদের প্রতি বিশেষ সেবার সুযোগ গ্রহণ করি (লুক ১০:২৫-৩৭)। তপস্যকাল হলো একটি অনুক‚ল সময়- যে সময়ে এড়িয়ে না গিয়ে, উপেক্ষা না করে, যারা সমবেদনার বার্তা ও শুভ বার্তার জন্য অপেক্ষা করছে, যারা একাকী হয়ে আছে তাদের পরিত্যাগ না ক’রে, তাদের প্রয়োজনে এগিয়ে আসা। আসুন, যারা গরিব ও অভাবী, সময় নিয়ে তাদের ভালোবাসী; যারা উপেক্ষিত, পরিত্যাক্ত, বৈষম্যের শিকার ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, আমরা তাদের প্রতি এই ভালো করার আহŸান অনুশীলন করি। আমরা যদি অপারগ হই, তাহলে আমাদের হাত প্রসারিত করি- যেনো পিতা আমাদের তুলে ধরেন। যদি আমরা হারিয়ে যাই, যদি মন্দশক্তি দ্বারা প্রভাবিত হই, আমরা যেনো ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসতে দ্বিধাবোধ না করি।
৩. যদি আমরা ক্ষান্ত না হই তবে ঠিক সময়ে ফসল তুলতে পারবো : প্রতি বছর তপস্যাকাল আমাদের স্মরণ ক’রে দেয় যে- কল্যাণ কাজ, সবার সঙ্গে ভালোবাসা, ন্যায় ও সহমর্মিতা অর্জন করা একদিনের জন্য নয় কিন্তু দৈনন্দিন, আজীবনের জন্য। ঈশ্বরের কাছে আবেদন করি তিনি যেনো আমাদের শক্তি দান করেন, যেনো আমরা প্রতি মূহুর্তে কল্যাণ করতে পারি। আমি আবারো বলি, আমরা যদি অপারগ হই, তাহলে আমাদের হাত প্রসারিত করি- যেনো পিতা আমাদের তুলে ধরেন। যদি আমরা হারিয়ে যাই, যদি মন্দশক্তি দ্বারা প্রভাবিত হই, আমরা যেনো ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসতে দ্বিধাবোধ না করি- “যিনি দয়াশীল, ক্ষমাশীল (ইসা ৫৫:৭)।” এই পরিবর্তনের সময়ে ঈশ্বরের অনুগ্রহে অনুপ্রাণিত হয়ে মণ্ডলির সঙ্গে যুক্ত হই এবং কল্যাণ কাজ করতে যেনো ক্লান্তি না মানি। এই কাজের উর্বরা ভূমি তৈরি করতে হবে আমাদের উপোস দিয়ে, প্রার্থনার জল ঢেলে এবং দয়ার কাজে পরিপূর্ণ হয়ে। আসুন আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, “যদি আমরা ক্ষান্ত না হই তবে ঠিক সময়ে ফসল তুলতে পারবো।” আসুন, আমাদের দানের প্রতি অবিচল থেকে আমরা লাভ করি- যা আমাদের জন্য অঙ্গীকার করা হয়েছে (হিব্রু ১০:৩৬), আমাদের মুক্তি এবং সবার মুক্তি (তিমথি ৪:১৬)। আমরা সবার জন্য ভ্রাতৃপ্রেম রচনা করে খ্রিস্টের সঙ্গে যুক্ত হই- যিনি আমাদের জন্য প্রাণ দিয়েছেন (২করি ৫:১৪-১৫) এবং স্বর্গের আনন্দ আস্বাদন করার সুযোগ দিয়েছেন- “যেখানে স্বয়ং পরমেশ্বর হবেন সবকিছু- সবার মধ্যে (১করি ১৫:২৮)।”
এই কাজের ভূমি তৈরি করতে হবে আমাদের উপোস দিয়ে, প্রার্থনার জল ঢেলে এবং দয়ার কাজে পরিপূর্ণ হয়ে। আসুন আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, “যদি আমরা ক্ষান্ত না হই তবে ঠিক সময়ে ফসল তুলতে পারবো।” মা মারীয়া, যিনি খ্রিস্টকে গর্ভে ধারণ করেছেন এবং “এই সমস্ত কথা অন্তরে গেঁথে রেখে তা ধ্যান করেছেন” তিনি মাতৃস্নেহ নিয়ে আমাদের সঙ্গে চলুন, যেনো পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে অনন্ত জীবনের ফসল লাভ করতে পারি।
পোপ ফ্রান্সিস- ভাটিকান সিটি।