৪ এপ্রিল রোজ সোমবার ২০২২ খ্রিস্টাব্দ ভোর ৫:৩০টার সময় জয়পুর হাট জেলায় অবস্থিত খঞ্জনপুর ধর্মপল্লীর অধীনস্থ হাটশিখা নামক গ্রামের গির্জা ঘরের দরজা ভেঙ্গে যুবক জান্নাতুন ফেরদৌস (২২ উর্ধ্ব) এক মুসলিম যুবক গির্জাঘরের ভিতরে ঢুকে সেখানে রাখা যিশুর ক্রুশ, মাদার তেরেজার ও মারীয়ার মূর্তি ভাঙ্গুচুর করেন এমন কী পবিত্র বাইবেলসহ উপাসনায় ব্যবহৃত সমস্ত বই পত্র ছিরে ফেলে তছ-নছ করেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে গ্রামবাসীরা যুবকটিকে হাতে নাতে ধরে থানার পুলিশের হাতে তুলে দেন।

এ ঘটনা সম্পর্কে জানার জন্য বরেন্দ্রদূত অনলাইন পত্রিকা রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ জেভার্স রোজারিও’র কাছে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন “আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এ ঘটনার সাথে যে বা যারাই জড়িত আছে বা থাকুক না কেন; তার বা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। কেননা, বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ স্বাধীনভাবে স্ব-স্ব ধর্ম পালন করার অধিকার রাখে এবং সেই স্বাধীনতা সংবিধানেই দেওয়া আছে। আমরা কেউই আইনের উর্ধ্বে নই।” সেই সাথে আমি হাটশিখা গ্রামের খ্রিস্টভক্তদের অভয় দিয়ে বলতে চাই, আপনারা ভয়ও পাবেন না, নিরাশ হবেন না। নির্ভয়ে সামনে এগিয়ে যান। ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আছেন এবং তিনিই আপনাদেরকে রক্ষা করবেন।

জয়পুর হাট কাথলিক ধর্মপল্লীর সেমিরনারীতে কর্মরত ফাদার জোস পামপাদিলের কাছে এ ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বরেন্দ্রদূত অনলাইন পত্রিকাকে জানান যে, “নি:সন্দেহে এটি একটি দু:খজনক ঘটনা। ইতিমধ্যে আমরা প্রশাসনকে এই ঘটনা সম্বন্ধে অবগত করেছি। প্রশাসনও এই বিষয়টিকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে তাদের কাজের তৎপরতা চালাচ্ছেন। এমন কি আজকের এই ঘটনা জানার সাথে সাথে আমাদের মাননীয় জেলা প্রশাসক (ডিসি মহোদয়), সম্মানিত সার্কেল এস পি মহোদয়, উপজেলার চেয়্যারম্যান, নির্বাহী অফিসার, থানার ওসি এবং জেলার হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান পরিষদের জেলাশাখার সভাপতিও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আশা করি, প্রশাসন এর একটি সুষ্ঠু তদন্ত করে এর একটি বিহিত করবেন। সেই সাথে প্রশাসনের কাছে এবং এলাকার প্রতিনিধিদের কাছে এটাও প্রত্যাশা করছি যে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা যেন আর না ঘটে সেই দিকে খেয়াল রাখেন।”

হাটশিখা গ্রামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী মি: সুবাস মুরমু তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বরেন্দ্রদূত অনলাইন পত্রিকাকে জানান– “আমরা গ্রামবাসীরা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমাদের গ্রামে এমন একটি ঘটনা ঘটবে সেটা কখনো ভাবিনি। তবে কেনই বা জান্নাতুন ফেরদৌস আজ ভোরে এ ঘটনা ঘটালো। আমরা প্রশাসনের কাছে জোড় দাবি জানাই যেন এ ঘটনার প্রকৃত হোতা কে বা কারা তা যেন খোঁজে বের করেন। এটা আসলে ঐ যুবকের কাজ নাকি এই ঘটনা ঘটানোর জন্য কেউ তাকে ইন্দন যুগিয়েছেন। আমরা চাই প্রশাসন এর একটি নিরপেক্ষ তদন্ত করবেন, প্রকৃত অপরাধীকে খোঁজে বের করে এর সঠিক বিচার করবেন।

বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার

Please follow and like us: