রাজশাহী ধর্মপ্রদেশীয় উপাসনা ও প্রার্থনা বিষয়ক কমিশনের আয়োজনে রাজশাহী খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় সেবাকেন্দ্রে সুষ্ঠভাবে উপাসনা পরিচালনার লক্ষ্যে দুইদিন ব্যাপি অনুষ্ঠিত হয় উপাসনা বিষয়ক সেমিনার। সকল অংশগ্রহণকারী ও অতিথিদের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন ও আসন গ্রহণের মাধ্যমে উপাসনা বিষয়ক সেমিনার শুরু করা হয়। সেমিনারে উপস্থিত অতিথি হিসেবে ছিলেন ফা: ইউজিন আনজুস, সিএসসি, ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশ , ফা: বাবলু কোড়াইয়া, পরিচালক, খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় সেবাকেন্দ্র ও ফা: সুরেশ পিউরিফিকেশন, আহ্বায়ক, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশীয় উপাসনা ও প্রার্থনা পরিষদ। সেই সাথে বিভিন্ন ধর্মপল্লী থেকে সিস্টার, কাটেখ্রিস্ট মাস্টার ও ধর্মপল্লীর প্রতিনিধি মোট ৬০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন। প্রথমদিনের কর্মসূচীতে ছিল পরিচয় পর্ব এবং পরবর্তী দিনের কার্যক্রম সম্বন্ধে অবগত করা।
দ্বিতীয় দিনে বরিশাল ধর্মপ্রদেশের মনোনীত বিশপ ইম্মানুয়েল কে. রোজারিও’র খ্রিস্টযাগের মাধ্যমে দিনের কার্যক্রম শুরু করা হয়। খ্রিস্টযাগের উপদেশে মনোনীত বিশপ মহোদয় বলেন, উপাসনা হলো আমাদের খ্রিস্টীয় জীবনের প্রাণশক্তি। আর আজকের মঙ্গলসমাচারে আমরা শুনেছি যিশু বলছেন, আমি হলাম দ্রাক্ষালতা আর তোমরা হলে আমার শাখা-প্রশাখা। দ্রাক্ষালতার সাথে যুক্ত না থাকলে শাখা-প্রশাখা যেমন ফল দিতে পারে না, ঠিক তেমনিভাবে উপাসনার মধ্যদিয়ে ঈশ্বরের সাথে যুক্ত না থাকলে আমাদের খ্রিস্টীয় জীবনেও তেমন কোন ফল দান করতে পারবে না। তাই, আমাদের এই উপাসনা বা প্রার্থনার মধ্যদিয়ে খ্রিস্টের সঙ্গে যুক্ত থেকে আমাদের জীবনকে করে তুলতে হবে ফলশালী।
ফা: ইউজিন আনজুস, সিএসসি উপাসনা বিষয়ক নির্দেশনা বিষয়ে দু’দিন ব্যাপি এ সেমিনারের মূল আলোচক হিসেবে তার উপস্থাপনা প্রদান করেন। তিনি তার উপস্থাপনায় উপাসনার মৌলিক বৈশিষ্ট্য ও পুণ্য উপাসনা বিষয়ক সংবিধান এর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, পুণ্যময়ী মাতা-মণ্ডলি বিধিসঙ্গতভাবে স্বীকৃত সকল উপাসনা-পদ্ধতিকে সমান অধিকার ও মর্যাদা সম্পন্ন বলে মনে করেন। এছাড়াও উপাসনার গুরুত্বপূর্ণ আরও তিনটি বিষয় আলোচনা করেন- প্রথমত :উপযুক্ত মানসিক প্রস্তুতি, দ্বিতীয়ত: আবৃতির সাথে মনের মিল থাকতে হবে এবং তৃতীয়ত : স্বর্গীয় প্রসাদের সাথে আত্মজীবনের সহভাগিতার মনোভাব পোষন|
রাতের আহারের পর খ্রিস্টযাগে গানের অনুশীলন বিষয়টির উপর ফাদার বাবলু কোড়াইয়া ও ফাদার সাগর কোড়াইয়া তাদের সেশনটি পরিচালনা করেন। সেশনটি শেষ হওয়ার পর প্রার্থনার মাধ্যমে দিনের কার্যক্রম শেষে সকলেই শুভ নিদ্রায় যায়।
খ্রিস্টযাগের মাধ্যমে তৃতীয় দিনের কার্যক্রম শুরু হয়। খ্রিস্টযাগে পৌরহিত্য করেন ফা: উইলিয়াম মুরমু, চ্যাঞ্চেলর, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশ। ফা:ইউজিন আনজুস, সিএসসি, তার ২য় দিনের সেশনটি শুরু করেন । তিনি উপাসনার গানের বিষয়ে দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন । সেশন এর শেষে ফা: ইউজিন আনজুস, সিএসসি, কে শুভেচ্ছা প্রদান করা হয় । সকলের সুন্দর অংশগ্রহণ ও সহযোগিতার মাধ্যমে উপাসনা বিষয়ক সেমিনার এর সমাপ্তি ঘোষনা করেন।
বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার : ফা: সুরেশ পিউরিফিকেশন