গত ৯ সেপ্টেম্বর রোজ শুক্রবার, সকাল ৯.৩০ ঘটিকায় মুক্তিদাতা হাই স্কুলে অভিভাবক সমাবেশ ও দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব মুক্তিদাতা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ব্রা. রঞ্জন পিউরিফিকেশন সিএসসি এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের উন্নয়ন ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফাদার উইলিয়ম মূর্মু এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন শিক্ষিকা সুরভি রোজারিওর।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সহকারী শিক্ষিকা মনিকা বাড়ৈ শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন। পরবর্তিতে প্রাইমারী শাখা পক্ষে গত ৬মাসের ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার অগ্রগতি ও বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বক্তব্য রাখেন। একই ভাবে মাধ্যমিক শাখার পক্ষে শিক্ষক বিনয় দাস বলেন, ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাসে অনিয়মিত ও তাদের পড়াশোনার প্রতি অনেকেরেই অনিহা যথেষ্ট পরিমাণে লক্ষনীয়। একই সাথে স্কুলের যে নিয়ম কানুন রয়েছে সেগুলো পালনেও রয়েছে অনিহা। এর জন্য তিনি অভিবাকদের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন। তিনি বলেন, শুধু স্কুলে শিক্ষক মন্ডলি পড়ালে হবে না, যদি না পরিবারে পিতা-মাতা সন্তানদের পড়তে বসান । তিনি আরও বলেন, একজন পিতা-মাতাকে শিক্ষিত হতেই হবে এমন কথা নেই । ছেলে-মেয়েদেরকে পাসে বসিয়ে জোরে জোরে পড়ার অভ্যাস করালে হয়তো অনেক ভালো ফলাফল হবে পরবর্তীতে ।

বক্তব্যের শেষে শুরু উন্মুক্ত আলোচায় হয়। যেখানে প্রায় ১৩০জন অভিভাবক উপস্থিত  হয় । অভিবাক মন্ডলির পক্ষে ১২জন অভিভাবক তাদের ব্যক্তিগত সমস্যা ও শিক্ষক মন্ডলির কাছে তাদের সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার পাশাপাসি একজন সুচিন্তার মানবিক মানুষ হিসেবে তৈরী করার দায়িত্বও দেন । কয়েকজন অভিবাক স্কুলের উন্নয়নের জন্য প্রস্তাব রাখেন Ges প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কাছে প্রস্তাব দেন, যেন দেশের সকল স্কুলে ও কলেজের সাথে তালে তাল মিলাতে মূলধারা শিক্ষাব্যবস্থার সাথে সাথে স্কুলে বেশ কিছু পরিবর্তন ও প্রয়োজনীয় উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেন । বিশেষভাবে স্কুলের বিল্ডিং বৃদ্ধি করা, স্কুলে একটি কম্পিউটার ল্যাব তৈরী, সাইন্স ল্যাব ও স্কুলের শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের জন্য সহপাঠ কার্যক্রম গ্রহণ করা।  উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, নাচ,গান,আবৃতি, যন্ত্র সংগীত, বিতর্ক, নাকট, ইংরেজি স্পিকিং ক্লাস ইত্যাদির সহপাঠ কার্যক্রম সপ্তাহে অন্তত:পক্ষে একদিন করে করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তবে অভিভাবক তাদের সন্তানদের সুন্দর পাঠ দানের জন্য শিক্ষক মন্ডলিকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। ।

এরপরে প্রধান অতিথি ফাদার উইলিয়াম মূর্মু বলেন যে, তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর এই প্রথমবারের মত এ ধরণের অভিভাবকদের সাথে এভাবে সমাবেশে যোগদান করেছেন। এ ধরণের পদক্ষেপ নেয়ার  জন্য তিনি প্রধান শিক্ষক ব্রা. রঞ্জনকে ধন্যবাদ দেন। তিনি বলেন, প্রত্যেক ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিবাকদের নিয়ে বসে যেন এ ধরনের  আলোচনা করা হয়। তিনি অভিবাকদের প্রস্তাবে বলেন যে, মুক্তিদাাত স্কুলে অচিরেই রাজশাহীর শহরের বুকে একটি ভাল মানের একটি স্কুলে রূপ নিবে এই প্রথ্যাশা করি এবং স্কুলের বিল্ডিং বৃদ্ধিকরণ করাসহ বাকি যে সহপাঠ কার্যক্রম ও কম্পিউটার এবং সাইন্স ল্যাব প্রয়োজন আছে সে ব্যবস্থাও করা হবে বলে আশা রাখি ।

প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সভার সভাপতি ব্রা. রঞ্জন পিউরিফিকেশন অভিবাকদের উদ্দেশ্যে বলেন যে, তিনি সকল ছাত্র-ছাত্রীর প্রতি অনেক পজেটিভ । করোনা ভাইরাস, ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন থেকে দুটি বছর নিয়ে গেছে যার জন্য তাদের পড়াশোনা অবস্থা আসঙ্কাজনক। তিনি বলেন, তবুও আমি হাল ছাড়তে  নারাজ।  আজকের এই অভিভাবক দিবসে আমি সকল অভিভাবকদের বলতে চাই,  স্কুলের শিক্ষকদের পাশাপাশি থেকে আসুন আমরা সকলে মিলে ছাত্র-ছাত্রীদের সুশিক্ষা দেই এবং তাদেরকে একজন মানবিক মানুষ গড়ে তোলার দায়িত্ব নেই।  তিনি অভিভাবকদের লক্ষ্য করে আরো বলেন যে, সকলে নিজ নিজ সন্তানদের পরিবারেও যত্ন নেন ও পাশে বসে  যথেস্ট সময় দিয়ে তাদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করান  । তাহলেই সকলের ত্রিমুখী সমন্বয়ে একটা ভালো ফলাফল হবে। তিনি একজন অভিভাবকে প্রশ্নের উত্তরে বলেন, স্কুলে বিষয় ভিত্বিক শিক্ষকের ব্যবস্থা করা হবে, আলাদা ক্যাটাগরিতে। এর পর তিনি স্কুলের উন্নয়নের জন্য অভিভাবকদের আস্থা রাখতে বলেন ও সুযোগ প্রত্যাশা করেন । এরই মধ্য দিয়ে তিনি সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন ।

বক্তব্য শেষে অভিভাবকগণ তাদের সন্তানদের ফলাফল ক্লাস টিচারদের থেকে সংগ্রহ করেন ও বিদায় নেন।

বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার

Please follow and like us: