গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত দু’দলে ভাগ হয়ে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় সেবাকেন্দ্র অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ধর্মপ্রদেশীয় যাজক ভ্রাতৃসংঘর বার্ষিক নির্জনধ্যান ২০২২ খ্রিস্টাব্দ। এতে বাংলাদেশের প্রতিটি ধর্মপ্রদেশ থেকে দুইজন বিশপসহ মোট ১৮৭ জন যাজক অংশগ্রহণ করেন। নির্জন ধ্যানের মূল বিষয় ছিল “মিলন, অংশগ্রহণ ও প্রেরণ”। এই মূলভাবের উপর ভিত্তি করে নির্জন ধ্যান পরিচালনা করেন  পিমে ফাদার ফান্সিকো রাপাচ্যালি। দুইটি নির্জন ধ্যানের শুরুতেই উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী ধর্মপ্রেদেশের ধর্মপাল বিশপ জের্ভাস রোজারিও। তিনি তাঁর স্বাগত বক্তবব্যে বলেন, “এই নির্জন ধ্যানে অংশগ্রহণকারী সকল যাজকদেরকে আমি শুভেচ্ছা জানাই এবং নির্জন ধ্যানে যোগদানের জন্য ধন্যবাদ দেই। ফাদার ফ্রান্সিকোকেও  ধন্যবাদ দেই কেননা, তিনি আমাদের নির্জন ধ্যান সফলভাবে চালানোর জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েছেন এবং পরিচালনা দিচ্ছেন। আমি বিশ্বাস করি এই নির্জন ধ্যানে আমরা প্রত্যেকেই আধ্যাত্মিকভাবে উপকৃত হব। সারা বছর আমরা বিভিন্ন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকি। তবে এই নির্জন ধ্যানের সময় আমরা অন্তরে নীরব হবো যেন আমরা আধ্যাত্মিকভাবে ফলবান হতে পারি। সকলের নির্জন ধ্যান সুন্দর হোক এই শুভ কামনা করি।”

প্রথম নির্জন ধ্যানে অংশগ্রহণকারী যাজকবর্গের পক্ষ থেকে ফাদার মাকুর্শ মুরমু  এবারের নির্জন ধ্যানে তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন ঠিক এভাবে “ফাদার ফ্রান্সিকো পিমে তার নির্জন ধ্যান পরিচালনার করার সময় আমাদেরকে অনেকগুলি রহস্যের কথা বলেছেন। আর সেই  রহস্যগুলো হলো: আমাদের মানবীয় জীবনের রহস্য, আমাদের যাজকীয় সেবা দায়িত্ব পালন । যাজকীয় কাজকে তিনি একটি রহস্যময় কাজ বলে অভিহিত করেন। ফাদার বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন তবে তার মধ্যে তিনি কিছু মৌলিক বিষয়েও কথাবার্তা বলেছেন। যেমন-পুরোহিতদের জীবন হচ্ছে বিশ্বাসের জীবন। তারপর আমাদের পুরোহিতদের জীবন নীতি কি হবে। সেই সাথে, তিনি আমাদেরকে বাইবেল ও ঐতিহ্যের আলোকেও কথা বলেছেন। তাছাড়া, তিনি বিভিন্ন মানুষের জীবন দৃষ্টান্ত আমাদের কাছে তুলে ধরেছেন । যা আমাদের যাজকীয় জীবন যাত্রায় আধ্যাত্মিকভাবে অনেক সহায়ক হবে বলে মনে করি। তাই ফাদারকে জানাই আমরে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।”

দ্বিতীয় নির্জন ধ্যানে অংশগ্রহণকারী যাজকবর্গের পক্ষ থেকে ফাদার আলবিনো সরকার বলেন, “২০২২ খ্রিস্টাব্দের নির্জন ধ্যান আমাদের জন্য ছিল একটি বিশেষ আশির্বাদের সময়। ফাদার খুব সুন্দরভাবে তাঁর জ্ঞান গর্ব চিন্তা, চেতনা এবং ধ্যান দিয়ে আমাদেরকে আলোকিত করেছেন। আমরা আমাদের জীবনের জন্য ফাদারের কাছ থেকে আলোক ছটা পেয়েছি: তার জন্য ফাদারকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।”

নির্জন ধ্যান শেষে ফাদার ফ্রানিসকো রাপাচেল্লি তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, আজ আমি ধন্যবাদ দেই আমাকে এই গুরু দায়িত্ব দেওয়ার জন্য। কেননা, নির্জন পরিচালনা করার মধ্য দিয়ে আমি নিজেও উপকৃত হয়েছি।

বিডিপিএফের সভাপতি শ্রদ্ধেয় ফাদার মিন্টু পালমা তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, আজ আমি সর্বপ্রথমে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেই বিগত দু’টি সপ্তাহের জন্য। কেননা, তিনি আমাদেরকে সুস্থ্য শরীরের রেখেছেন এবং নির্জন ধ্যানের মধ্য আমরা সকলে অনেক ঐশ অনুগ্রহ লাভ করেছি বলে। এই সময়টিকে আমরা আমাদের যাজকদের জন্য একটি আর্শিবাদের সময় হিসেবে নিতে পারি। আজকের এই মূহুর্তে আমি ধন্যবাদ দেই রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপ জের্ভাস রোজারিওকে, খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় সেবাকেন্দ্রের পরিচালকসহ সকল সিস্টার, সেবাকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী ভাইবোনদেরকে। সেই সাথে বিডিপিএফের সচিব ফাদার রুবেনকে ও স্থানীয় কমিটির সকল সদস্যদেরকে কেননা, তাদেরই পরিকল্পনায় ও আয়োজনে আমরা সুন্দরভাবে এই নির্জন ধ্যান সম্পন্ন্য করতে পেরেছি। নির্জন ধ্যান পরিচালনাকারী ফাদার ফ্রান্সিসকোকে অনেক ধন্যবাদ জানাই তার সুন্দর নির্জন ধ্যান পরিচালনার জন্য। সেই সাথে এই অনুরোধ রাখি আমরা যেন প্রতি বছর কমপক্ষে ৫টি দিন  নির্জন ধ্যানের জন্য রাখি এবং সেই সাথে সবার সাথে যোগাযোগ রাখি ও এক অপরের জন্য প্রার্থনা করি। পরিশেষে আবারও  আপনাদের সকলের জীবনের জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা করে শেষ করছি। ধন্যবাদ সবাইকে।

বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার

Please follow and like us: