৫৬তম বিশ্ব শান্তি দিবস উপলক্ষে পোপের বাণী
১ জানুয়ারি, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ।
(ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা এবং ভাটিকান সিটি প্রধান পোপ ফ্রান্সিস প্রতি বছর ১ জানুয়ারি বিশ্ব শান্তি দিবস উপলক্ষে বিশেষ বাণী দিয়ে থাকেন। পোপ, প্রতি বছরের ন্যয় ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে ৫৬তম বিশ্ব শান্তি দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন। শান্তি দিবসের এই বাণী হুবহু বাংলায় পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো)।কোভিড- ১৯ বিরুদ্ধে যৌথ সংগ্রাম, শান্তির পথে ছিলো একত্রে যাত্রা।
কেউ একা বাঁচতে পারে না।
“কোন্ কোন্ সময়ে বা লগ্নে ওই সব-কিছু ঘটবে, ভাই, সেই বিষয়ে তোমাদের কাছে কোনো কিছু লেখা নিষ্প্রয়োজন। কারণ তোমরা নিজেরা ভালো ভাবেই জানো যে, চোর যেমন নিশুতি রাতে আসে, প্রভুর সেই মহা দিনটিও তেমনি ভাবেই আসবে ( ১ম থেসা ৫:১-২)।”
১. এই বাণীর দ্বারা, প্রেরিতদূত পৌল থেসালোনিকীয়বাসীদের উৎসাহিত করেছেন শান্ত থাকতে, তাদের হৃদয় এবং পা দৃঢ়ভাবে ন্যস্ত করতে, দৃষ্টিশক্তি তাদের চারিদিক ঘেরা বিশ্বে এবং ইতিহাসের ঘটনা প্রবাহে নিবদ্ধ রাখতে, যদিও তারা প্রভুর পুনরাগমনের অপেক্ষায় রয়েছেন। যখন মনে হয় বিয়োগান্ত ঘটনাসমূহ আমাদের জীবন ভারাবনত ক’রে তুলে এবং মনে হয় আমরা আধাঁরে পতিত হয়েছি ও কঠিন ঘূর্ণাবর্ত এবং অন্যায্যতার মধ্যে- তখন অনুরূপভাবে আমাদের আহ্বান করা হয় আশায় হৃদয় উন্মুক্ত রেখে ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস রাখতে- যিনি আমাদের মধ্যে বিরাজমান, দয়ার্দ্র হয়ে আমাদের সহযাত্রী, ভারাক্রান্ত সময়ে আমাদের শক্তি দেন এবং সবকিছুর উর্ধ্বে আমাদের পথনির্দেশনা দান করেন। এই কারণে সাধু পৌল জনগণকে সর্বদা সজাগ থাকতে বলেন এবং সেই সঙ্গে উত্তম, ন্যায্যতা ও সত্যের সন্ধান করতে বলেন। “তাই আমরা যেনো অন্য সকলের মতো ঘুমিয়ে না থাকি, বরং যেনো সজাগ হয়ে থাকি, যেনো নেশামুক্তই থাকি (১ম থেসা ৫:৬)।” তার এই বাণী হলো সতর্ক থাকার আহŸান, যেনো ভয়শূন্য থেকে, দুঃখার্ত না হয়ে, নিজেকে পরিত্যাগ না করে, বিভ্রান্তি ও হতাশা তৈরি না করি। তার পরিবর্তে আমরা পাহারাদারের মতো দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখি, এমনকি অন্ধকারাছন্ন অবস্থার মধ্যেও যেনো ভোরের প্রথম আলো দেখার জন্য প্রস্তুত থাকি।
২. কোভিড- ১৯ আমাদেরকে অন্ধকারে নিমজ্জ্বিত করেছিলো, আমাদের দৈনন্দিন জীবন অসুস্থিত করেছিলো, আমাদের পরিকল্পনা ও কর্মসূচি অনিয়মিত করেছিলো- স্পষ্টতই শান্তি বিঘ্নিত হয়েছিলো, এমনকি বৈভবশালী জাতির শান্তিও বিঘ্নিত করেছিলো- যা তৈরি করেছিলো অচলাবস্থা ও যন্ত্রণা এবং অসংখ্য ভাই-বোনের মৃত্যু।
এমন অযাচিত ও ঘুর্ণিপাক চ্যালেঞ্জের মধ্যে যেখানে বিজ্ঞানিগণও বিভ্রান্ত অবস্থার সমুক্ষীণ হয়েছিলেন, সেখানে বিশ্বের স্বাস্থ্যকর্মীগণ এই ভয়ংকর যন্ত্রনা থেকে আরাম ও সম্ভাব্য প্রতিকারের জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। একই সময়ে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এই জরুরি মুহূর্তে সাড়া দিয়ে নানা সাংগঠনিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।
সর্বোপরি কোভিড- ১৯ বাস্তবতা হলো, সাধারণভাবে এই অসুস্থতা, অনেক ব্যক্তি ও পরিবারকে দীর্ঘ সময় নিজেদের বিচ্ছিন্ন রেখে, স্বাধীনতা হরণ ক’রে দীর্ঘমেয়াদী ও গুরুতর পরিণতি ডেকে এনেছে।
এই মহামারি পরিলক্ষিত হওয়ায় আমাদের সমাজে, অর্থনৈতিক খাতে যে বিভঙ্গতা তৈরি ক’রে আমাদের সামনে অসঙ্গতি ও অসমতা এনেছে- আমরা তা এড়িয়ে যেতে পারি না। এই মহামারি বহু ব্যক্তির কর্ম নিরাপত্তার হুমকি হয়ে একটা চলমান শোচনীয় অবস্থা সৃষ্টি ক’রে আমাদের সমাজ- বিশেষ করে বিশ্বের যে অংশ গরিব ও যাদের প্রয়োজন তাদের আরোও নিঃসঙ্গ করেছে। আমাদের ভেবে দেখা প্রয়োজন যে, বিশ্বের বিভিন্ন অংশে লক্ষ্য লক্ষ্য অনিয়মিক শ্রমিক মহামারির সময় নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের কর্ম সংস্থান হারিয়েছেন এবং কোনো সাহায্য সহায়তা লাভ করেন নি।
শুধু মাত্র কদাচিৎ কিছু ব্যক্তি ও সমাজের উন্নয়ন যা নৈরাশ্য ও তিক্ততা সৃষ্টি করেছে এবং শান্তি প্রচেষ্টাকে দুর্বল ক’রে সমাজে নানা বিরোধ, হতাশা তৈরি ক’রে নানা সন্ত্রাসের জন্ম দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, মহামারি সম্ভবত আমাদের এই বিশ্বের শান্তিময় অংশ নানা ঠুনকো ও ওলটপালট অবস্থার অবস্থানে এনে দিয়েছে।
৩. তিন বছর পর, প্রশ্ন করার এটা উপযুক্ত সময়- শিখি, গড়ে ওঠি এবং নিজেরা আমাদেরকে ব্যক্তিগত এবং সমাজবদ্ধ হিসেবে রূপান্তর হওয়ার জন্য অনুমোদন প্রদান করি, কারণ এটা একটা অধিকারপ্রাপ্ত সময় যখন আমরা নিজেদের “প্রভুর দিনের” জন্য প্রস্তুত করতে পারি। আমি ইতোমধ্যে অনেক অনুষ্ঠানে লক্ষ্য করেছি যে, আমরা সংকট শুরুর মুহুর্তের অবস্থানে এখনোও পৌঁছাতে পারিনি: হয় ভালো না হয় খারাপ অবস্থানে পৌঁছেছি। আজকে আমরা একটি প্রশ্নের সমুক্ষীণ: আমরা মহামারি থেকে কী শিক্ষা পেয়েছি ? আমরা কী ধরনের নতুন পথ অনুসরণ করবো- যাতে করে স্বভাবের পুরনো বেড়ি ভেঙ্গে নতুন বিষয়ের জন্য উত্তমভাবে প্রস্তুত হবো ? জীবনে কোন্ চিহ্ন ও আশা দেখতে পাচ্ছি, যার দ্ব ারা সামনে অগ্রসর হবো এবং আমাদের এই বসুন্ধরাকে সুন্দর আবাস করে তুলবো ?
নিশ্চিত যে, সরাসারিভাবে আমাদের জীবনের নাজুক অবস্থা এবং চারিধারের বিশ্বকে অভিজ্ঞতা ক’রে আমরা বলতে পারি- কোভিড- ১৯ থেকে আমাদের মস্তবড় শিক্ষা হলো- আমরা অনুধাবন করেছি যে, আমাদের প্রত্যেকেরই একে অন্যকে প্রয়োজন। এখনোও আমাদের বৃহত্তম এবং ঠুনকো সম্পদ হয়ে আছে মানবতার সহভাগী ভাই-বোন হিসেবে ঈশ্বরের এই সন্তানগণ। আমরা কেউ একা বাঁচতে পারি না। ফলস্বরূপ, জরুরিভাবে আমাদের একত্র হয়ে খুঁজতে হবে সর্বজনীন মূল্যবোধসমূহ যা আমাদের মানব ভ্রাতৃত্ব গড়ার সহায়তা নির্দেশনা দিবে। আমরা অনুধাবন করেছি যে, যে আস্থা আমরা রেখেছি উন্নয়ন, প্রযুক্তি, বিশ্বায়নের প্রভাবের ওপর- তা অতিরঞ্জিত নয় কিন্তু ব্যক্তিতান্ত্রিক বৈশিষ্ট্যে রূপান্তর মাত্র এবং নিজের অতিভক্তি মত্ততায় আপোষ না হয়ে- ন্যায্যতা, ঐক্যতা এবং শান্তি, যা আমরা আকুল হয়ে অন্বেষণ করছি। আমাদের দ্রুত অগ্রগতির বিশ্বে, অসমতার বিস্তৃত সমস্যা, অন্যায্যতা, দরিদ্রতা এবং প্রান্তিকতা অনবরত ইন্দন দিচ্ছে অশান্ততা, সংঘর্ষ এবং লেলিয়ে দিচ্ছে সন্ত্রাস এমনকী যুদ্ধও।
মহামারি, এই সবকিছু আমাদের সামনে আনলেও কিন্তু এর একটা ইতিবাচক ফলাফল রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে সংশোধন হয়ে মানবতায় ফিরে যাওয়া, অতিরিক্ত ভোগবাদ নিয়ে পুন:চিন্তা এবং ভ্রাতৃত্ববোধ নবীকরণের উপলব্ধি, যা আমাদের অন্যের কষ্টভোগ ও তাদের প্রয়োজনের প্রতি সংবেদনশীল ও দায়িত্বশীল করে তুলবে। আমরা কিছু প্রচেষ্টার বিষয়ও ভাবতে পারি- যা কোনো কোনো ক্ষেত্রে বীরোচিত হিসেবে প্রমাণ করেছে যে, তারা সংকট ও বিশৃঙ্খলায় পতিত হওয়া সবাইকে তাদের সাধ্য মতো ক্লান্তহীনভাবে সহায়তা দিয়েছেন।
এই অভিজ্ঞতা আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে অন্যের প্রয়োজনের প্রতি ব্যক্তি এবং জাতি হিসেবে একটা উপলব্ধি তৈরি করেছে যে, “একত্র” বিষয়টি স্থাপন হলো একটি মূল ক্ষেত্র। কারণ, এই একসঙ্গে, ভ্রাতৃত্ববন্ধনে, ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তি স্থাপন, ন্যায্যতা নিশ্চিতকরণ হবে বৃহৎ বিপর্যয় থেকে উত্থান লাভ করা। প্রকৃতপক্ষে, মহামারিকালে সবচেয়ে কার্যকর উদ্যোগগুলো এসেছে সামাজিক সংগঠন, সর্বসাধারণ ও ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান, আর্ন্তজাতিক সংস্থা থেকে- যেগুলো তাদের বিশেষ স্বার্থ পরিহার ক’রে যৌথ শক্তি হয়ে অবস্থা মোকাবেলা করেছে। শান্তি আসতে পারে শুধু মাত্র ভ্রাতৃত্ববোধ ও নি:স্বার্থ ভালোবাসায়- যেগুলো আমাদের সহায়িকা হবে ব্যক্তিকেন্দ্রিক, সামাজিক এবং বিশ্ব সংকট থেকে উত্তীর্ণ হতে।
৪. এমনকী যে মুহুর্তে, যখন আমরা আশ্বস্থ হয়েছিলাম যে কোভিড- ১৯ মহামারি শেষ হয়ে গেছে, তখন মানবতা আবার একটা ভয়ানক বিপর্যয়ের মধ্যে পতিত হলো। আমরা প্রত্যক্ষ করলাম আর একটি প্রচন্ড আক্রমন পিছু ধাওয়া করছে: আর একটি যুদ্ধ- যা এক প্রকার কোভিড- ১৯ মতোই, কিন্তু এটা মানুষের সিদ্ধান্তের জন্য শাস্তিযোগ্য। ইউক্রেন যুদ্ধ বৃদ্ধি করছে নিরাপরাধ মানুষের বলি, বিস্তার ঘটাচ্ছে অনিরাপত্তা- শুধু মাত্র যারা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তাদের মধ্যেই নয় কিন্তু বিস্তৃতভাবে এবং সবার মধ্যে কোনো প্রকার বাছবিচার না করে, এমনকী যারা হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছেন তারাও একই উৎসজাত কারণে ফল ভোগ করছে। এই প্রসঙ্গে আমাদের খাদ্য-শস্য ঘাটতি ও জ্বালানি তেলের মূল্যের বিষয় ভেবে দেখা প্রয়োজন।
এটা পরিস্কার, কোভিড পরবর্তী এই ধরনের সময় আমরা আশা বা অপেক্ষা করিনি। এই যুদ্ধ এবং বিশ্বজুরে সব ধরনের সংঘর্ষের সঙ্গে যারা সরাসরি জড়িত শুধু তাদেরই নয় কিন্তু গোটা মানবতাকে পিছনে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার জন্য প্রতিনিধিত্ব করছে। যদিও কোভিড- ১৯ জন্য ভ্যাকসিন পাওয়া গিয়েছিলো- কিন্তু এই যুদ্ধ বন্ধের জন্য এখনোও একটি উপযুক্ত সমাধান পাওয়া যায়নি। এটা ঠিক যে, মানুষের দেহের ভাইরাস বিনাশ করার চেয়ে যুদ্ধ-সংক্রমণ ভাইরাস বিনাশ করা বেশি কঠিন। কারণ যুদ্ধ-সংক্রমণ ভাইরাস বাইরে থেকে আসে না- কিন্তু আসে পাপের কারণে দুর্ণীতিগ্রস্ত হৃদয় থেকে (মার্ক ৭:১৭-২৩)।
৫. তাহলে আমরা নিজেদের কী জিজ্ঞেস করতে পারি ? প্রথমত: সংকটের অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের হৃদয়ের পরিবর্তন, আমাদের চারপাশের বিশ্বকে যে প্রথানুসারের মানদন্ডে দেখি, ইতিহাসের এই সময় ঈশ্বর আমাদের মধ্যে তার পরিবর্তন এনে দিন। আমরা আর যেনো অনাগ্রহীভাবে ব্যক্তি ও জাতীয় স্বার্থে স্থান সংকুচিত না করি বরং আমরা যেনো সর্বজনের ভালো চিন্তা করি এবং স্বীকৃতি দান করি যে, আমরা একটি বৃহৎ সমাজভ‚ক্ত এবং সেই সঙ্গে আমাদের অন্তর-আত্মা সর্বজনীন মানব ভ্রাতৃত্বের জন্য প্রসারিত। আমরা আর যেনো শুধু নিজেদের রক্ষা করার জন্য উদ্যোগী না হই বরং এখন আমাদের সবার জন্য সময় এসে গেছে আমাদের সমাজ ও গ্রহকে সুস্থ করার প্রচেষ্টা গ্রহণ করা, সত্য এবং শান্তিময় বিশ্বের ভিত্তি স্থাপন করা এবং গুরুত্বের সঙ্গে দায়িত্ব গ্রহণ ক’রে সর্বজনের জন্য উত্তম অন্বেষণ করা।
এগুলো করতে হলে এবং কোভিড- ১৯ জরুরি অবস্থা পরবর্তী ভালো জীবন যাপন করতে হলে- আমরা কিছু মৌলিক ঘটনা উপেক্ষা করতে পারি না, সেগুলো হলো বিভিন্ন নৈতিকতা, সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সংকট আমরা যে এখন অভিজ্ঞতা করছি- তা কিন্তু সবগুলো পরস্পর যুক্ত, এবং যেগুলোকে আমরা বিচ্ছিন্ন সমস্য হিসেবে দেখছি সেগুলোরও বাস্তব কারণ ও ফল পারস্পরিকভাবে যুক্ত। ফলস্বরূপ, দায়িত্ব মন্ত্রে ও সমবেদনায় অনুপ্রাণিত হয়ে আমাদের বিশ্বের চ্যালেঞ্জগুলো যেনো মোকাবেলা করতে পারি, তার জন্য আমাদের আহ্বান করা হচ্ছে। জনগণের স্বাস্থ্য-সেবা নিশ্চিত করার জন্যে বিষয়গুলো আমাদের পুনরায় নীরিক্ষা করতে হবে। আমাদের অবশ্যই কিছু কর্মকান্ড প্রবর্তন করতে হবে, যার মাধ্যমে শান্তি বৃদ্ধি, সংঘর্ষ ও যুদ্ধ পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে বিপুল মাত্রায় সৃষ্টি হওয়া দরিদ্রতা ও মৃত্যুর যাত্রা রোধ করতে পারি। আমাদের এখন জরুরিভাবে প্রয়োজন য়ৌথভাবে সবার এই ধরিত্রীর পরিচর্যা এবং পরিবেশ বিপর্যয় রক্ষার জন্য উপযুক্ত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। মানব বৈষম্যের যে ভাইরাস তার বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে, নিশ্চিত করতে হবে খাদ্য, মর্যাদাপূর্ণ শ্রম ব্যবস্থা এবং যারা নূন্যতম মজুরী থেকে বঞ্চিত ও নিজেরা মহাসংকটে রয়েছেন- তাদের সমর্থন করতে হবে। মানব গোষ্ঠীর এই শোচনীয় ক্ষুধা আজোও উন্মুক্ত ও আহত অবস্থার মধ্যেই রয়ে গেছে। আমাদের একটি দিকনির্দেশনা প্রণয়ন করতে হবে যাতে অভিবাসী ও সমাজ থেকে বঞ্চিতদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা যায়। শুধূ মাত্র এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সমবেদনাসহ আমাদের পদক্ষেপ এবং ঈশ্বরের সীমাহীন ভালোবাসায় স্বার্থহীনভাবে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা একটি নয়া বিশ্ব তৈরি ও তাঁর রাজ্যকে আরোও বিস্তৃত করতে আমাদের অবদান রাখতে পারি- যেট হবে ভালোবাসা, ন্যায্যতা ও শান্তির রাজ্য।
এই অনুধ্যান আপনাদের সঙ্গে সহভাগীতা করে আমি আশা প্রকাশ করছি যে, ইতিহাসের মূল্যবোধ আমাদের যে শিক্ষা দিয়েছে তাতে উৎসাহিত হয়ে নতুন বছরে একসঙ্গে যাত্রা করতে পারবো। দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার, আর্ন্তজাতিক সংস্থাসমূহের প্রধানগণ এবং বিভিন্ন ধর্মীয় প্রধানদের আমি আমার শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি। সদ্ইচ্ছা সম্পন্ন নারী-পুরুষগণ, আমি আমার প্রার্থনাপূর্ণ বিশ্বাস প্রকাশ করছি, শান্তির নিপূন কারিগর হয়ে তারা যেনো দিনের পর দিন কাজ করেন- একটি সুন্দর বছর গড়ার জন্য। নিষ্কলংকা মা মারীয়া, যিশুখ্রিস্টের মা এবং শান্তির রাণীর কাছে আমাদের জন্য ও বিশ্বের জন্য এই অনুনয় করি।
ভাষান্তর : ফাদার সুনীল রোজারিও। বরেন্দ্রদূত প্রতিবেদক।