রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় সেবাকেন্দ্রে পবিত্র আত্মা সেমিনারীর ঐশতত্ত্ব  ৪র্থ বর্ষের ৮ জন ধর্মপ্রদেশীয় সেমিনারীয়ান ডিকন অভিষেকের প্রস্তুতি স্বরূপ ৭ দিন ব্যাপী নির্জন ধ্যানে অংশগ্রহণ করেন। উক্ত নির্জন ধ্যান ১ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ রবিবারে রাত্রি প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় এবং ৭ জুন ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ রোজ শনিবার দুপুরে খ্রিস্টযাগের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। নির্জন ধ্যান পরিচালনা করেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ভূতাহারা ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ও পবিত্র আত্মা উচ্চ সেমিনারীর ‘উপাসনা’ বিষয়ক অধ্যাপক শ্রদ্ধেয় ফাদার লুইস সুশীল পেরেরা। সেমিনারীয়ানগণ ধ্যান, প্রার্থনা, সেশন, নির্জনতা, খ্রিস্টযাগ, খ্রিস্টপ্রসাদীয় আরাধনা, জপমালা প্রার্থনা, ক্রুশের পথ, বিভিন্ন প্রশ্নের আলোকে ব্যক্তিগত অনুধ্যানের মাধ্যমে নির্জন ধ্যান অতিবাহিত করে।

নির্জন ধ্যানের শুরুতেই নির্জন ধ্যান পরিচালক খ্রিস্টমণ্ডলিতে ডিকনদের ভূমিকা সম্পর্কে বলেন যে, যিশুর সেবার আদর্শই হল ডিকনদের পথ। ডিকনগণ হলেন বিশপের সহকারী। একই সাথে তারা হলেন পবিত্র সাক্রামেন্তের সহকারী; যিশুর দেহ-রক্তের সেবাকারী। ডিকন হওয়ার মধ্য দিয়ে যাজক প্রার্থীগণ হয়ে উঠেন ঈশ্বরের সেবক ও মানুষের সেবক। তিনি এই নির্জন ধ্যানে যাজকীয় জীবনের বিভিন্ন ব্যবহারিক দিক এবং যাজকীয় জীবনের আনন্দ, কষ্ট, ঝুঁকি, চ্যালেঞ্জসমূহ প্রভৃতি সম্পর্কে অবহিত করেন ও বাস্তবতার নিরিখে বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে তুলে ধরেন। সেই সাথে যাজকীয় জীবনে সম্পর্কের গঠন ও গুরুত্ব, প্রার্থনার প্রয়োজনীয়তা, বাণীদূত হয়ে ওঠার আহ্বান বিষয়েও সুন্দর সহভাগিতা করেন। এই নির্জন ধ্যানের বিভিন্ন সহভাগিতায় যাজকত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন যে, যাজকত্ব হলো একটি পবিত্র সাক্রামেন্ত, ঈশ্বরের একটি পবিত্র আহ্বান বা ডাক ও একটি মহামূল্যবান দান। যিশুতেই যাজকীয় জীবনের পূর্ণতা। যিশু ছিলেন চিরকালীন যাজক। তাই আমাদের যাজকত্ব যিশুর ক্রুশীয় মৃত্যুতেই কেন্দ্রিভূত হতে হবে। যাজকীয় জীবনের দু’টো মন্ত্র দিয়ে অর্থাৎ প্রার্থনা ও ত্যাগস্বীকার দ্বারা জগতের পরিবর্তন সাধন করা সম্ভব। একজন যাজককে হয়ে উঠতে হবে পবিত্র ও প্রার্থনাশীল। শুধু অভিষেকের গুণেই নয় বরং প্রতিদিনের জীবন বাস্তবতায় যাজক হয়ে উঠতে হবে। একজন যাজককে হয়ে উঠতে হবে সবার যাজক; সব মানুষকে অন্তরে ধারণ করতে হবে। নির্জন ধ্যানের শেষ দিন দুপুরে খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় সেবাকেন্দ্রের পরিচালক শ্রদ্ধেয় ফাদার বাবলু সি. কোড়াইয়া। খ্রিস্টযাগের শেষে সেমিনারীয়ানদের পক্ষ থেকে নির্জন ধ্যান পরিচালক, খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় সেবাকেন্দ্রের পরিচালক ও কর্মরত সিস্টারদ্বয় ও কর্মীদের ধন্যবাদ প্রদানের মধ্য দিয়ে এই নির্জন ধ্যানের সমাপ্তি ঘটে।

 

বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার : রাসেল রিবেরু

Please follow and like us: