গত ৩ জুন ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ সান্তালসমাজ ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ, সামাজিক সমস্যা নিরসন, ধর্মপল্লীর কাজে আরও সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সমন্বয় সাধনের জন্য মাঞ্জহি, জগ-মাঞ্জহি, প্যারিশ সদস্য ও গির্জা মাস্টারদের নিয়ে বিশেষ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এই কর্মশালায় ধর্মপল্লীর বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রায় ১৫০ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন। প্রার্থনার মধ্য দিয়ে কর্মশালা শুরু হয়।
ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার প্রদীপ কস্তা স্বাগত বক্তব্যে বলেন, আজকের এই কর্মশালায় আমি আপনাদের সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা অভিনন্দন জানাই। আজকে মাঞ্জহি, জগ-মাঞ্জহি, প্যারিশ সদস্য ও গির্জা মাস্টারদের হিসেবে যারা এসেছেন তাদেরকে আহ্বান জানাই, যেন তারা সমাজ পরিচালনায় আরো বেশী সক্রিয় হতে হবে।
মিস্টার নিকোলাস মূর্মূ তার বক্তব্যে বলেন, এই মাঞ্জহি কর্মশালার আয়োজনে অংশগ্রহণ করতে পেরেছি বলে আজ আমি সত্যিই আনন্দিত। এ কর্মশালা বাস্তবায়ন করার জন্যে বিভিন্ন পরিসরে ব্যাপকভাবে আলোচনা করে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমান বিশ্বের এই ডিজিটাল যুগে অনেক কিছুরই পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। সেই পরিবর্তনের ছোঁয়া আমাদের সমাজে, আমাদের ছেলে-মেয়েদের মধ্যেও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সমাজের কল্যাণ, মণ্ডলিতে আরও সক্রিয় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি ও সামাজিক সমস্যা সমাধানে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এই কর্মশালার মূল লক্ষ্য।
সান্তাল সমাজের সামাজিক কাঠামো বিষয়ে সহভাগিতায় মিঃ বেনজামিন বলেন, ‘সবার আগে আমাদের জানতে হবে সান্তাল সমাজ কি এবং এর ইতি কথা। সান্তাল সমাজের সমাজ কাঠামোতে আছে মাঞ্জহি, পারানিক, জগমাঞ্জহি, জগপারানিক, নাইকী, কুডাম নাইকী, গডেত। পারগানা ও বাইসী কাঠামোতে আছে পারগানা, সেক্রেটারি, দেশ মাঞ্জহি এবং চাকলাদার এবং সেই সাথে কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে খ্রিস্টান সমাজের জন্য প্রস্তাবিত মাঞ্জহি বাইসী কাঠামোতে থাকবে ১) মাঞ্জহি ২) জগমাঞ্জহি ৩) নাইকী ( যাজক/প্রার্থনা পরিচালক) ৪) গডেত ৫) নারী সদস্য ৬) নারী সদস্য। আমাদেরকে আরও সক্রিয় ও সচেতন হই।
ধর্মপল্লীর সহকারী পাল-পুরোহিত শ্রদ্ধেয় ফাদার সুরেশ পিউরীফিকেশন বলেন, সান্তাল সমাজের সংস্কৃতিতে আচার অনুষ্ঠান, ঐতিহ্য ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি আছে যা আমাদের চর্চা করতে হবে। কৃষ্টি সংস্কৃতি চর্চা ও রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে এবং কৃষ্টি সংস্কৃতির রক্ষা ও সামাজিক কাঠামো শক্তিশালী করার জন্য মাঞ্জহি, জগ-মাঞ্জহি, প্যারিশ সদস্য ও গির্জা মাস্টার আমাদের সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে।
শেষে ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত কর্মশালায় গৃহিত সকল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, সামাজিক কাঠামো শক্তিশালীকরণ ও আদর্শ ধর্মপল্লী গড়ার করার জন্য একসাথে কাজ করার আহ্বান করেন।
বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার : ফাদার সুরেশ পিউরীফিকেশন