গত ১১ জুন ২০২৩ খ্রিস্টবর্ষ রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের উত্তম মেষপালক ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লী , বাগানপাড়াতে অনুষ্ঠিত হয় খ্রিস্টপ্রসাদীয় শোভাযাত্রা। উক্ত শোভাযাত্রা শুরু করার আগে পবিত্র খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন শ্রদ্ধেয় ফাদার আন্তনী হাঁসদা। তার সহার্পিত খ্রিস্টযাগে আরো উপস্থিত ছিলেন ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার ফাবিয়ান মারান্ডী, মুন্সিনিয়র মার্সেল তপ্ন, ফাদার শ্যামল গমেজ ও ফাদার লিটন কস্তা। সেই সাথে ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লীতে কর্মরত প্রতিটি কনভেন্টের সিস্টারগণ ও প্রায় ৫০০ খ্রিস্টভক্ত।

খ্রিস্টযাগের উপদেশে ফাদার আন্তনী বলেন, পবিত্র খ্রিস্টপ্রসাদে স্বয়ং প্রভু যিশুর বাস্তব উপস্থিতি রয়েছে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। খ্রিস্টপ্রসাদের মধ্য দিয়ে প্রভু যিশু আমাদের মাঝে বাস্তবে উপস্থিত আছেন। তাই পবিত্র খ্রিস্টপ্রসাদকে আমরা আমাদের হৃদয়ের সর্বোত্তম ভক্তি, শ্রদ্ধা ও ভালবাসা প্রদর্শন করি।

তিনি আরো বলে,পবিত্র খ্রিস্টপ্রসাদে উপস্থিত প্রভু যিশু হলেন আমাদের প্রভু, গুরু ও মুক্তিদাতা। তিনি ত্রি-ব্যক্তি পরমেশ্বরের দ্বিতীয় ব্যক্তি। তিনি পুত্র ঈশ্বর । তিনি রাজাধিরাজ। সকল রাজার রাজা তিনি। তাই, সকল মহিমা, প্রশংসা ও সম্মান তাঁরই। স্বর্গ, মর্ত্য ও সারা জগতের অধিপতি তিনি। তাই আমরা তাঁকে সম্মান করি। নত মস্তকে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর প্রতি আমাদের ভালবাসা নিবেদন করি। আর এভাবে আমরা তাঁর আপন জন হয়ে উঠি।  

খ্রিস্টযাগের পরপরই শুরু হয় খ্রিস্টপ্রসাদীয় শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাতে মোট তিনটি স্টেশন করা হয়। প্রথমটি ছিল স্নেহনীড়, দ্বিতীয়টি ছিল বাগানপাড়া এবং তৃতীয়টি ছিল ক্যাথিড্রালের সম্মুখে। এর মধ্যদিয়ে প্রতিটি খ্রিস্টভক্ত তাদের প্রাণের ঠাকুর যিশুর পূণ্য দেহ-রক্তের পর্ব অনুষ্ঠানকে তাদের হৃদয়ে গ্রহণ করেন এবং অন্তরে ভক্তি-শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা নিবেদন করেন। এমনটি বলছিলেন ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লীর একজন খ্রিস্টভক্ত।

তিনি আরো বলেন, যিশুকে হৃদয়ের সম্মান দিয়ে আমরাও আমাদের ধর্মপল্লীতে আজ খ্রিস্টপ্রসাদীয় শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের জন্য সম্মিলিত হয়েছি। আমরা চাই প্রতিদিন আমাদের ব্যক্তিগত সকল উদ্দেশ্য ও প্রার্থনা প্রভু যিশুর কাছে নিবেদন করতে। তাঁর নিকট আত্মসমর্পণ করতে এবং পাপ থেকে মন পরিবর্তনের জন্য সংকল্প গ্রহণ করতে । কেননা, আমাদের জীবনের সকল পরিস্থিতিতে যেন প্রভু যিশুর উপর আস্থা ও ভরসা রাখতে শিখি, তাঁর উপর নির্ভরশীল হতে পারি এবং গভীরভাবে তাঁকে বিশ্বাস ও ভালবাসতে পারি।

পরিশেষে, পাল-পুরোহিত ফাদার ফাবিয়ান মারান্ডী সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বলেন, আজ আমি সত্যিই আনন্দিত এই জন্য যে, আপনাদের সহযোগিতার মধ্যদিয়েই আজকে এই খ্রিস্টপ্রসাদীয় শোভাযাত্রা সুন্দরভাবে করতে সক্ষম হয়েছি। আমি চাই, শুধু শোভাযাত্রার দিনে নয়, বরং আমাদের জীবনের প্রতিটি মূহুর্তেই খ্রিস্টের উপস্থিতিতে সময় কাটাতে। তাই, আসুন আমরা খ্রিস্টের কাছে আসি, তাকে ভালোবাসি এবং তাকে ভক্তি ও শ্রদ্ধা জানানোর মধ্যদিয়ে তাঁর প্রিয়জন হয়ে উঠি।

বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার : ফাদার শ্যামল গমেজ

Please follow and like us: