এবারের বিশ্ব দাদু-দাদী ও প্রবীন দিবসের মূলসুর হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে “তরুণ ও প্রবীনদের মধ্যে মিলন”

পোপ ফ্রান্সিস আধুনিক বিশ্বে মণ্ডলির “সামনে এগিয়ে যাওয়ার” জন্য তরুণ ও প্রবীনদের মধ্যে একটি ফলপ্রসূ সাক্ষাতের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তৃতীয় বিশ্ব দাদু-দাদী ও প্রবীন দিবসের বাণীতে পোপ মহোদয় লিখেন “[ঈশ্বরের ভালবাসাময় পরিকল্পনা] আমাদের চেয়ে মহৎ, তবুও আমাদের প্রত্যেককে অন্তর্ভূক্ত করে এবং এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রতি মুহূর্তে আমাদের আহ্বান করে।” দুই প্রজন্মকে উপদেশ দিয়ে তিনি বলেন, “তরুণদের জন্য এর অর্থ হল ক্ষণস্থায়ী বর্তমান থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকা যেখানে ভার্চুয়াল বাস্তবতা আমাদের ফলদায়ক কিছু করতে বাধা দিতে পারে। প্রবীনদের জন্য এর অর্থ শারীরিক শক্তি ও সুযোগ হারানোর জন্য অনুশোচনা না করা।” তিনি আরও যুক্ত করেন, “আসুন আমরা সবাই সামনের দিকে দৃষ্টি দেই! এবং নিজেদেরকে ঐশ-কৃপায় গড়ে উাঠার সুযোগ দেই, যা আমাদের জড়তা থেকে মুক্ত করে এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের অতীতে বাস করাবে।”

ধন্য কুমারী মারীয়া তাঁর জ্ঞাতি বোনের সাথে সাক্ষাতের ঘটনাটি ধ্যান করে তরুণ ও প্রবীনদের একটি বাইবেলীয় সাক্ষাতকে পোপ মহোদয় বলেন, এই মহূর্তটি হল “পরিত্রাণের ভোরের দিকে আমাদের দৃষ্টি খোলার” ঐশ উপায়। তিনি ব্যাখ্যা করেন, “এলিজাবেথের কাছে মা মারীয়ার সাক্ষাৎ এবং তাদের সহভাগিতার সচেতনতা যে প্রভুর করুণা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, আমরা একা একা সামনে এগিয়ে যেতে পারি না, খুব কমই নিজেদের রক্ষা করতে পারি, ঈশ্বরের উপস্থিতি ও কাজ সর্বদা মহত্তর কিছুর অংশ, মানব জাতির ইতিহাস।

পোপ মহোদয় বলেন, তরুণরা প্রবীনদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে অতীতকে মনে রাখার আহ্বান বুঝতে পারবে এবং অনেক বড় ইতিহাসের অংশ হওয়ার সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে পারবে। তিনি তাদের “দাদু-দাদীদের ও প্রবীনদের জন্য একটি চিহ্ন বা সংকেত রাখার” আমন্ত্রণ জানান। পোপ মহোদয় বলেন, “আসুন আমরা তাদের পরিত্যাগ না করি। পরিবার ও সমাজে তাদের উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, আমরা একই ঐতিহ্যের অংশীদার এবং এর শিকড় সংরক্ষণের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ব্যক্তিদের অংশীদার। প্রবীনদের কাছ থেকে আমরা পবিত্র ঐশ জনগণের অন্তর্ভূক্ত হওয়ার উপহার পেয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, “মণ্ডলিতে, একই সঙ্গে সমাজে তাদের প্রয়োজন রয়েছে, কারণ তারা বর্তমানের কাছে অতীতকে অর্পন করেন যা ভবিষ্যত গঠনে প্রয়োজন। আসুন আমরা তাদের সম্মান করি বা আমাদের কাছ থেকে তাদের বঞ্চিত না করি। আমরা যেন কখনও প্রবীনদের দূরে ফেলে না দেই।” অন্যদিকে, পোপ ফ্রান্সিস যুবগোষ্ঠীর সাথে তাদের সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে প্রবীনেরা আশা লাভ করতে পারেন তার উপর গুরুত্ব দেন, তাদের আলোকিত করেন যে, তাদের অভিজ্ঞতা হারিয়ে যাবে না এবং তাদের স্বপ্ন পূরণ হওয়া সম্ভব।

এই বছরের বিশ্ব দাদু-দাদী ও প্রবীন দিবসটি ২৩ জুলাই লিজবনে বিশ্ব যুব দিবসের খুব কাছাকাছি সময়ে পালন করা হবে যা নির্দিষ্ট করা ১-৬ আগষ্ট । এই দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করে পোপ ফ্রান্সিস বিশ্ব যুব দিবসে যোগদানের পূর্বে তরুণদের তাদের দাদু-দাদী বা একা বাস করেন এমন একজন বয়স্ক ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ করতে উৎসাহিত করেন।

পোপ মহোদয় বলেন, “তাদের প্রার্থনা তোমাদের রক্ষা করবে এবং তোমরা সেই সাক্ষাতের আশীর্বাদ তোমাদের হৃদয়ে বহন করবে। আমি আপনাদের আহ্বান করছি, আমাদের মধ্যে থাকা প্রবীনগণ আপনাদের প্রার্থনার মধ্য দিয়ে তরুনণদের সাথে একাত্ম হয়ে আসন্ন বিশ্ব যুব দিবস উদযাপন করতে।”

অনুবাদ: ফাদার নিখিল গমেজ

Please follow and like us: