বিশপ ইম্মানুয়েল কানন রোজারিও, বরিশাল ধর্মপ্রদেশ
ভূমিকা : গত ১৯ আগস্ট সিবিসিবি সেন্টারে “এশিয়ার বিশপ সম্মিলনী এবং বাংলাদেশ মণ্ডলি একসাথে পথ চলা” বাংলাদেশ ক্যাথলিক বিশপ সম্মিলনী আয়োজিত সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সেমিনারে প্রতিটি ধর্মপ্রদেশের আর্চ বিশপদ্বয় ও সকল বিশপগণ এবং প্রতিটি ধর্মপ্রদেশ থেকে পাঁচ জন করে ধর্মপ্রদেশীয় প্রতিনিধি ফাদার, ব্রাদার, সিস্টার, কাটেখ্রিস্ট এবং খ্রিস্টভক্তগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বিভিন্ন ধর্মসংঘের সুপিরিয়র জেনারেলগণ এই সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।
সেমিনারের উদ্দেশ্যসমূহ ছিল: ১. এফএবিসির ভিশন, মিশন, কাঠামো এবং কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে পরিচিত করা। ২. এফএবিসির সাথে বাংলাদেশ মণ্ডলির এক সাথে পথ চলার উল্লেখযোগ্য ঘটনাসমূহ তুলে ধরা। ৩. আগামী দিনের বাস্তবতায় এফএবিসি এবং বাংলাদেশ মণ্ডলির একসাথে পথ চলার নতুন পথের সন্ধান করা। উক্ত সেমিনারে বরিশাল ধর্মপ্রদেশের পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ ইম্মানুয়েল কানন রোজারিও যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তা নিম্নে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হলো- (২য় অংশ)
৫। এফএবিসি প্লেনারী এসেম্ব্লী সম্পর্কে কিছু কথা: এফএবিসি এর সর্বোচ্চ বডি হলো প্লেনারী এসেম্ব্লী এর সর্বময় ক্ষমতা নিহিত রয়েছে এই বডিরই হাতে। সাংবিধানিক পরিবর্তন বা সংশোধন করার এবং কোন নীতি প্রনয়ণ ও কাঠামোগত পরিবর্তনের অনুমোদনের অধিকার শুধু এই বডিরই রয়েছে। এফএবিসি এলাকাভুক্ত সকল কার্ডিনাল, সকল সদস্য-বিশপ সম্মিলনীর সভাপতি বা তাঁর প্রতিনিধি, প্রতিটি সম্মিলনী থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক বিশপ প্রতিনিধি এবং সহযোগী সদস্য এই প্লেনারী এসেম্ব্লীতে অংশগ্রহণ করে থাকেন। এই ফেডারেশন প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতি ৪ বছন অন্তর অন্তর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্লেনারী এসেম্ব্লী অনুষ্ঠিত হয়। একসাথে এশিয়ার মণ্ডলিসমূহের জন্য সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অন্বেষণ ও নিরুপনের জন্য এই প্লেনারী এসেম্ব্লীগুলো হলো ফলপ্রসূ হাতিয়ার ও স্থান। “মণ্ডলি হিসেবে এবং মণ্ডলির বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেবাদানরত এবং বিভিন্ন ভৌগলিক এলাকার সাথে একত্রে জীবন যাপন করার প্রকৃত সুযোগ”- এডমন্ড ছিয়া। এই প্লেনারী এসেম্ব্লীর ভূমিকা হলো “নতুন অর্থ ও প্রচেষ্টা অন্বেষণ করা, ক্ষতিকারক শক্তিসমূহকে জয় করা, মিলনের নতুন আকৃতি দান, যুগ লক্ষণসমূহ পাঠ করা এবং কোন্টার উন্নয়ন সাধন করা এবং কোনটা পরিহার করা প্রয়োজন তা নিরুপণ করা” (# ১ তাইপেই)।
৬। প্লেনারী এসেম্ব্লী এর প্রস্তুতি পদ্ধতি: বিভিন্ন ঘটনা, সফলতা-চ্যালেঞ্জ সহভাগিতার মধ্য দিয়ে এশিয়ার ঐশজনগণের জীবনে পবিত্র আত্মার কাজ নিরুপন। তাছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন বিশপস’ ইনস্টিটিউট, সম্মেলন ও কনফারেন্স, ইত্যাদি, যেগুলোর মধ্য দিয়ে এই প্লেনারী এসেম্ব্লীর প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়ে থাকে।
৭। এফএবিসি এর প্লেনারী এসেম্ব্লীগুলোর মূল প্রতিপাদ্য বিষয়: শুরু থেকে অদ্যাবদি সর্বমোট ১১টি প্লেনারী এসেম্ব্লী হয়েছে। এগুলো অনুষ্ঠিত হওয়ার সময়, স্থান ও মূল প্রতিপাদ্য কিছু বিষয় সংক্ষেপে নিম্নে তুলে ধরা হলো:
নং বছর স্থান মূলবিষয়
১ ২২-২৭ এপ্রিল ১৯৭৪ তাইপেই, তাইওয়ান বর্তমান এশিয়ায় মঙ্গলবাণী প্রচার/ঘোষণা
২ ১৯-২৫ নভেম্বর ১৯৭৮ কলিকাতা, ইন্ডিয়া প্রার্থনা: এশিয়ার মাণ্ডলিক জীবন
৩ ২০-২৭ অক্টোবর ১৯৮২ ব্যংকক, থাইল্যাণ্ড খ্রিস্টমণ্ডলি: এশিয়াতে খ্রিস্টবিশ্বাসের একটি মিলনসমাজ
৪ ১৬-২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৮৬ টোকিও. জাপান এশিয়ার খ্রিস্টমণ্ডলিতে ও জগতে খ্রিস্টভক্তদের আহ্বান ও প্রেরণকাজ
৫ ১৭-২৭ জুলাই ১৯৯০ ভেন্ডুং, ইন্দোনেশিয়া ১৯৯০ দশকে এশিয়ার মণ্ডলির জন্য উদীয়মান চ্যালেঞ্জসমূহ: সাড়া দেওয়ার আহ্বান
৬ ১০-১৯ জানুয়ারী ১৯৯৫ ম্যানিলা, ফিলিপাইনস বর্তমান এশিয়াতে খ্রিস্টের শিষ্যত্ব: জীবনের প্রতি সেবা
৭ ৩-১৩ জানুয়ারি ২০০০ সামফ্রান, থাইল্যাণ্ড এশিয়াতে একটি নবায়িত মণ্ডলি: ভালবাসা ও সেবার প্রেরণকাজ
৮ ১৭-২৩ আগস্ট ২০০৪ দেজেয়ন, কোরিয়া একটি সামগ্রিক জীবন সভ্যতার দিকে এশিয় পরিবার
৯ ১০-১৬ আগস্ট ২০০৯ ম্যানিলা, ফিলিপাইনস এশিয়াতে খ্রিস্টপ্রসাদীয় জীবন যাপন
১০ ১০-১৬ ডিসেম্বর ২০১২ জুয়ান লক, ভিয়েতনাম ৪০ বছরে এফএবিসি: এশিয়ার চ্যালেঞ্জসমূহের প্রতি সাড়াদান – মঙ্গলবালীর নবঘোষণা
১১ ২৯ নভেম্বর – ৪ ডিসেম্বর ২০১৬ কলম্বো, শ্রীলঙ্কা এশিয়াতে ক্যাথলিক পরিবার: দয়ার প্রেরণকাজে দীন- দরিদ্রদের গৃহমণ্ডলি