– ফাদার পিউস গমেজ
মানুষ নিজের লেভেল, চিন্তার মাপকাঠি, বেড়ে উঠার পারিপার্শ্বিকতা, স্বার্থের টানা-পুরান, তার ভিতরে চলা আত্ম-দ্বন্দ্ব, অভ্যস্ত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই তোমার বিচার করে, মূল্যায়ন করে ও প্রশংসা করে থাকে।
অনেক কিছুই আমরা নিজের পক্ষে আশা করি। ভাল লাগা কাজ করে নিশ্চয়। সেটা কোন ভাল কাজ বা প্রচেষ্টার জন্য হয়ে থাকলে আরও ভাল কিছু করে অনু-ঘটকের মত আমাদের অন্তরে শক্তি দেয়।
সব প্রশংসা মানুষের জন্য ভাল বয়ে আনে না। কেউ কেউ নিজ স্বার্থের জন্য বা কার্য হাসিলের জন্যও প্রশংসা করে থাকে। এগুলো কিন্তু জঘন্যতম কাজ। তোমাকে, আমাকে বা আমাদের ডুবানোর জন্য এর থেকে ভয়ংকর পরিস্থিতির চেয়ে আর কিছু থাকতে পারে না। কথায় আছে “ঘরের শত্রু বিভীষণ”।
অতিরিক্ত প্রত্যাশা মানুষের হতাশাগ্রস্থ হবার কারণ হয়ে উঠতে পারে। এজন্য কাজের লক্ষ্য নির্ধারণ ও গুণগত ফলাফলকে উইন উইন (অর্জন) হিসেবে ধরে নিয়ে কাজে নেমে পড়া ও তা চোখের সামনে বাস্তবায়িত হতে দেখার যে আনন্দ এটাই আমাদের জন্য মুখ্য হওয়া অনেক বেশি দরকার।
বেশিভাগ ক্ষেত্রেই প্রয়োজন অনুসারে আপনি যাকে বা যাদের গুরুত্বপূর্ণ মনে করে বসে আছেন তাদেরকে আপনি খুব কমই পাশে পাবেন। সেখানে আপনার দায় বেড়ে যায় তাদের সম্মানিত করার। তাহলে আপনার উপযুক্ত সহায়ক কে হতে পারে নিজের ভিতরে ঠিক করে নিয়ে কাজে নামুন। নিজেকে বড় করার দরকার নেই। যারা আপনার লক্ষ্য বাস্তবায়নে স্বার্থহীনভাবে সামিল হতে প্রস্তুত উপযুক্তভাবে ব্যবহার করুন।
সার্বজনীন ও উদার মনে প্রাণান্ত প্রচেষ্টা রাখুন সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রয়োজনীয় মানুষকে কার্য বলয়ে রাখতে। কাজ সবাই না করুক কিন্তু জবাবদিহিতার দায় কোন সুস্থ্য ও শিক্ষিত মানুষ এড়াতে পারে না। বুঝতে হবে প্রত্যেক মানুষ তার নিজ পরিচয় নিজেই দিয়ে থাকে, আপনার-আমার সেই দায়িত্ব না তা প্রমাণ করার।
কার্যফলকে নিজের অর্জন বলে জাহির করা একটি সর্বসাধারণ মনোবৃত্তি। এটা করতেই আমরা ভালোবাসি। জানেন কি, দায়িত্বে থেকে অন্যের প্রাপ্য সম্মান দিতে অনেক সময় নিরবতাও যথেষ্ট। তবে বাহ্যিক কিছু যে দরকার নেই সেটা অস্বীকার করছি না। সফলতার আনন্দ চিহ্নগুলো সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হয়। নতুবা বিভেদ ও মানসিক দেউলিয়াত্ব বাড়ে। মানুষ হিসেবে আমরা একে অন্যকে ভাল কিছু অর্জন ও অভিজ্ঞতা করার সুযোগ সৃষ্টি এভাবে নিশ্চয়ই করতে পারি।
সর্বোপরি নিজেকে লবণের মত দ্রবক ভাবতে দোষ কোথায়? আমরা তো চিরঞ্জীব নই। দোষ গুণ নিয়েই আমরা মানুষ। কিন্তু যেভাবেই হোক মানুষের ভাল কামনা করা, সম্ভাব্য কল্যাণ কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করা। কম পক্ষে কারও ক্ষতির কারণ না হওয়া কি একটি ভাল কাজ হয়?
আসুন সেটাই করি।