১৪ আগস্ট ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপ ভবনে যাজকবর্গের অধিবেশনে বিশপ জের্ভাস রোজারিও’র ৭৩ জন্মবার্ষিকী উদযাপন এবং তাঁর স্বরচিত “ নৈতিকতা ও ন্যায্যতা” বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের কর্মরত সকল ফাদার-সিস্টার, ব্রাদার ও খ্রিস্টভক্তগণ।
বিশপ জের্ভাস রোজারিও তার জন্মদিনের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন- জন্মদিনে আমি অনুভব করি যে, ঈশ্বরের কাছ থেকে আরেকটি নতুন বছর পেলাম। এদিনটি উদযাপন করি মনে হয় যে মানুষ একা চলতে পারে না। আর বিগত দিনের পথ চলার পথে আমি অনেক মানুষের সাহায্য-সহযোগিতা পেয়েছি তার জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। সেই সাথে আপনাদেরকেও ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা জানাই আপনাদের ভালোবাসাপূর্ণ উপস্থিতির মধ্যদিয়ে জন্মদিনের উৎসবটি আনন্দপূর্ণ করে তোলার জন্য।
তিনি তাঁর বইয়ের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষ্যে আরো বলেন, ‘নৈতিকতা ও ন্যায্যতা’ বইটিতে মানুষের জীবনের মৌলিক বিষয়গুলো উঠে এসেছে। বিশেষ করে নৈতিকতার মানদন্ডে পরিবার, সমাজ, দেশ তথা বিশে্ব কিভাবে ন্যায্যতা ও শান্তি স্থাপন ও অনুশীলন করা যায় তাই প্রকাশ পায় বইটিতে। নৈতিক আচরণ মানুষের জীবন ও অন্তর্নিহিত মর্যাদা দাবী করে। সেই মূল্য ও মর্যাদা মানুষ তার জন্মের পূর্বে মাতৃগর্ভ থেকেই লাভ করে। তাই আমাদের উচিত মানব জীবনের মূল্য ও মর্যাদাকে অতি উচ্চে তুলে ধরা। বইটি প্রকাশের কাজে যারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। রাজশাহী সেমিনারীয়ানদের নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত আমার লেখাগুলোকে সংগৃহিত করে কম্পিউটারে লিপিবদ্ধের জন্য পবিত্র আত্মা সেমিনারীর পরিচালক ফাদার পল গমেজ ও সেমিনারীয়ানদের ধন্যবাদ জানাই। বইটি সম্পাদনা ও প্রকাশনা কাজে সহযোগিতার জন্য ফাদার সাগর কোড়াইয়াকে ধন্যবাদ।
প্রকাশক ফা: বুলবুল আগষ্টিন রিবেরু প্রকাশকের কথায় তুলে ধরেন যে, বিশপ জের্ভাস রোজারিও নাটোর জেলার বনপাড়ার সন্তান ও রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপ হলেও তিনি দেশ-বিদেশে পরিচিত এক ব্যক্তিত্ব। লেখালেখির জগতে তাঁর বিচরণ অনেক আগে থেকেই। সাপ্তাহিক প্রতিবেশীসহ বিভিন্ন সাময়িকীতে উপলক্ষগতভাবে প্রায় লিখে থাকে তিনি। ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি সাপ্তাহিক প্রতিবেশীতে নিয়মিতভাবে নীতিভাষণ নামে কলাম লিখে যাচ্ছেন। ব্যক্তি বিশপ জের্ভাস রোজারিওকে না চিনলেও লেখক ও গীতিকার ফাদার জের্ভাস রোজারিও’কে অনেক মানুষ চিনে ও তার লেখা প্রত্যাশা করে। পাঠককূলের সে প্রত্যাশা পূরণ করতে তিনি অব্যাহতভাবে যেমনি লিখে যাচ্ছেন তেমনি বইও প্রকাশ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তাঁর বেশ কয়েকটি বই প্রকাশ পেয়েছে এবং পাঠক সমাজে সমাদৃত হয়েছে। তাঁর রচিত গান ও লেখা মানুষকে সৃষ্টিকর্তামুখী করে ঈশ্বরনির্ভরশীল হতে সহায়তা করে। বনানী পবিত্র আত্মা উচ্চ সেমিনারীর এক সময়ের নৈতিক ঐশতত্ত্বের শিক্ষকের ‘নৈতিকতা ও ন্যায্যতা’ নামক বইটিতে মানক জীবনকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ, পরিবার, নারী ও শিশুর মর্যাদা, সেবা ও দয়াকাজ, মানব উন্নয়নসহ বৈবাহিক ও পারিবারিক নৈতিকতা বিষয়ক প্রবন্ধ সন্নিবেশিত হয়েছে। একইসাথে বাংলাদেশে সান্তাল খ্রিস্টান পরিবার, তাদের বিবাহ এবং সান্তাল পরিবারের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক জীবন বইটিতে অনন্য মাত্রা যুক্ত করেছে। লেখকের বর্ণনাভঙ্গী ও শব্দচয়ন সরল-সহজ হওয়াতে পাঠককুল বইটি পড়ে অন্ততের তৃপ্তি পাবে বলে বিশ্বাস করি। ‘নৈতিকতা ও ন্যায্যতা’ জীবনমুখী বিভিন্ন লেখায় বিশুদ্ধ চিন্তা ও মঙ্গলের ছোঁয়া থাকায় বইটি পড়ে অনেকেই উপকৃত হবেন তা নির্দ্ধিধায় বলতে পারি।
বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার