সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ নবাই বটতলা ধর্মপল্লীর উদ্যোগে ‘এসো শিশু মারীয়ার ন্যায় জীবন গড়ি’– মূলসুরের উপর ভিত্তি করে নবাই বটতলা ধর্মপল্লীতে শিশু মারীয়ার জন্মদিন ও মারীয়া সংঘের ব্রত নবায়ন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় নবাই বটতলায় সেবারত সিস্টার ও মারীয়া সংঘের ভগিনীদের নিয়ে। এতে ৪৫০ জন অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানটিকে আরও আধ্যাত্মিকতায় করার জন্য নয়দিনের নভেন প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
পর্বদিনের অনুষ্ঠানসূচীতে শোভাযাত্রাসহ পবিত্র খ্রিস্টযাগে প্রধান পৌরহিত্য করেন ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার স্বপন পিউরীফিকেশন। তিনি তার সহভাগিতায় তুলে ধরে বলেন, মা মারীয়া পূর্ণ ঈশ্বর অনুগ্রহ নিয়ে পৃথিবীতে জন্মেছেন। সাধু যোহন ডামাসিনের মতে- যেমন সূর্যদয়ের আগে উষা সমস্ত আকাশ রঙিন করে তোলে, তেমনি মানব মুক্তি দিবাকরের উদয়ের আগে নির্মলা মারীয়ার জন্ম যেন মানব ভাগ্যাকাশে মুক্তির প্রথম কিরণ। আর এই জন্য তিনি জন্ম থেকে আজীবন ঈশ্বরের বিশ্বস্ত সেবিকা। তাই আমাদের মারীয়ার মতো শিশু-সুলভ সরলতা-কোমলতা-নিস্পাপময়তা নিয়ে জীবন-যাপন করতে হবে। এই পর্বটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণ হলো- মারীয়া হলেন মুক্তিদাতার মা। তিনি ঈশ্বর অনুগ্রহ বাস্তবায়নের পূর্ণ সহায়তাকারী, চিরকুমারী, চির পবিত্রা, আদর্শবান ও আশ্চর্য কাজ সমাধাকারী। শিশু মারীয়া জন্মদিন পর্বটি হলো সিস্টারস্ অব চ্যারিটি সিস্টারদের প্রতিপালিকার পর্ব। কারণ ১৯৮৪ খ্রি: ৯ই সেপ্টেম্বর এই সম্প্রদায়ের একজন সিস্টার যিনি দীর্ঘদিন অবশ হয়ে বিছানাগত ছিলেন তিনি শিশু মারীয়ার মূর্তিটি চুম্বন করে প্রার্থনা করেছিলেন এবং সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি লক্ষ্য করেছিলেন শিশু মারীয়ার মূর্তিটি চোখের পাতা যেন পড়ছে এবং যুদ্ধ-বিধ্বস্ত জীর্ণ-শীর্ণ মূর্তিটি জ্বলমল করছিলো। যে রূপ আজ অবধি রয়ে গেছে। এরপর থেকে এই সম্প্রদায়ের সিস্টারগণ ঘটা করে এই পর্বটি উদযাপন করেন।
অনেক মানুষ শিশু মারীয়ার নিকট প্রার্থনা করে উপকার পেয়েছেন। তার মধ্যে কয়েকটি হলো-নিথর দেহে পড়ে থাকা রোগী পূর্ণ সুস্থতা লাভ, দুরারোগ্য রোগীর সুস্থতা লাভ, ১২-১৩ বছর বছর ভাল চাকুরী প্রাপ্তি, সংসারে শান্তি ফিরে আসা, হারানো সন্তানকে ফিরে পাওয়া, দ্বিখণ্ডিত হাত পূর্ণ ভাল হয়ে যাওয়া, ইত্যাদি। মারীয়া সংঘের পদক আশির্বাদ ও গলায় পড়িয়ে দেয়া, জ্বলন্ত প্রদীপ হাতে ব্রত নবায়ন প্রার্থনা উচ্চারণ করা। সিস্টারদের ও মারীয়া সংঘের ভগিনীদের ফুলেল শুভেচ্ছাসহ পাল-পুরোহিতের ধন্যবাদ জ্ঞাপন, আশির্বাদ দানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।
বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার : ফাদার স্বপন পিউরীফিকেশন