ফাদার সুনীল ডানিয়েল রোজারিও।

খ্রিস্টযিশুর জন্মদিন ঘিরেই আজকের বড়দিন উৎসব। বড়দিন এখন একটি সর্বজনীন উৎসব। সেকালের বড়দিন উৎসব কিন্তু আজকের মতো সর্বজনীন, বাণিজ্যিক ও এতো বিনোদন নির্ভর ছিলো না। নানা বিধি নিষেধ, জাতিগত সংস্কৃতির মিশ্রণ, পারিবারিক উৎসব থেকে আজকের বড়দিন। ক্যাথলিকদের বিরুদ্ধে প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলনকারীরা খ্রিস্টমাসকে পৌত্তলিকদের উৎসব আখ্যা দিয়ে উৎসব বর্জন করেছিলেন। তখন ছিলো না খ্রিস্টমাস ট্রি, গিফট আদান-প্রদান, সান্তা ক্লউজ, ডেকোরেশন, খানা-পিনা ও বাণিজ্যকরণ। বড়দিনের গান-বাজনা ছিলো সীমিত আকারে। পশ্চিমের দেশগুলোতে ইংল্যান্ড থেকে ধার করা কিছু গান প্রচলিত ছিলো । আজকে আমরা যে Christmas Carols বলি, এগুলো এসেছে ইউরোপ থেকে। ক্যারল শব্দের অর্থ নৃত্য ও আনন্দ। শীতকালে, সম্ভবত ২২ ডিসেম্বর বিধর্মী দেব-দেবী পূজকরা পাথরের চারিদিকে গোলাকারভাবে ঘুরে ঘুরে নৃত্য-গান করতো, যেটাকে বলা হতো ক্যারল। সে সময় ক্যারলের অনেক ধারণা প্রচলিত থাকলেও- আজকে আর নেই। শুধু বেঁচে আছে খ্রিস্টমাস ক্যারল।

রোমান ক্যাথলিকদের খ্রিস্টমাস উদযাপনের ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, ১২৯ খ্রিস্টাব্দে রোম নগরের বিশপ টেলেস্ফোরিউস, বড়দিনকালে বিধর্মীদের গান গাইতে বারণ ক’রে “দূতসংবাদের গান” গাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই দূতসংবাদের গানটি সাধু লুক রচিত মঙ্গলসমাচারে এভাবে বর্নিত আছে, ‘তখন হটাৎ সেই দূতের পাশে দেখা দিল স্বর্গের এক বিরাট দূতবাহিনী। তাঁরা পরমেশ্বরের বন্দনা ক’রে বলে উঠলেন,’ “জয় উর্ধ্বলোকে পরমেশ্বরের জয়, ইহলোকে নামুক শান্তি তাঁর অনুগৃহীত মানবের অন্তরে।” দূতগণের এ শুভ সংবাদ নিয়ে গীতাবলীতে বেশ কিছু গান স্থান পেয়েছে।

১২২৩ খ্রিস্টাব্দে আসিসির সাধু ফ্রান্সিস ইটালিতে যিশুর জন্মের কাহিনী শুরু করেন। এ কাহিনী ছিলো ল্যাটিন ভাষায়- গান ও আবৃত্তি। পরে বিভিন্ন ভাষায় যিশুর জন্মের কাহিনী ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। আসিসির সাধু ফ্রান্সিসের একটি বিখ্যাত গানের কলি পোপ ফ্রান্সিস তাঁর “লাউদাতো সী” সর্বজনীন সামাজিক পত্রের শুরুতেই উল্লেখ করেছেন, “হে আমার প্রভু, তোমার প্রশংসা হোক।”

বড়দিনের সবচেয়ে জনপ্রিয় গানটি লিখেছেন একজন অস্ট্রিয়ান ক্যাথলিক- ফাদার যোসেফ মহ্র, ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে। আর গানটি হলো Silent Night বা প্রশান্ত সে রাত্রি (গী.ব. ৬৩৪)। জার্মান ভাষায় রচিত এ গানটি এখন শত শত ভাষায় রচিত এবং আজোও জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শুরুতে এ গানটি বৃটিশ এবং জার্মান সেনারা তাদের মধ্যে শান্তির বার্তা হিসেবে গাইতেন।

পাশ্চাত্য বড়দিন ঐতিহ্যে এখন Jingle Bells’ একটি অতি জনপ্রিয় সংগীত। এ গানটি রচনা করেছেন ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে, আমেরিকান গীতিকার জেমস লর্ড পিয়েরপন্ট। বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে, এ জনপ্রিয় গানটি ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ সেপ্টেম্বর বোস্টন শহরের ওয়াশিংটন স্ট্রিটে গাইতে দেখা গেছে বলে উল্লেখ করেছেন। সেটা ছিলো বড়দিনের আড়াই মাস আগে। তাতে ক’রে বোঝা যায় জিংগ্যাল বেল্স- বড়দিনকে উদ্দেশ্য ক’রে রচিত কোনো গান নয়। সংগীতবিদদের মতে, জিংগ্যাল বেল্স হলো টমটম বা ঘোড়ার গাড়িতে ব্যবহৃত ঘোড়ার গলায় লটকানো ঘন্টার টুনটুন বা ঝুনঝুন আওয়াজ। কয়েক দশক এ গানটি খ্রিস্টানদের কাছে বড়দিনের গান হিসেবে কোনো মূল্য ছিলো না। তবে আজকের দিনে অনেক জনপ্রিয়। জেস্টের হেয়ারস্টোন রচিত ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে Mary’s boy child Jesus Christ was born on Christmas Day. And man will live for evermore because of Christmas Day, গানটি বিভিন্নজনে রেকর্ড করলেও ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে Boney M. ব্যান্ড দলটি যেভাবে রেকর্ড করেছেন, বড়দিনের ইংরেজি গানের তালিকায় এখনোও শীর্ষে এবং জনপ্রিয়। এমন আরো কিছু পাশ্চাত্যের গান এদেশেও জনপ্রিয় হচ্ছে।
বড়দিনের বাংলা গানের ইতিহাস কোথায় পাওয়া যাবে জানি না। কেউ এ বিষয়ে হাত লাগিয়েছেন কীনা, তাও জানি না। আমি অপারগতা স্বীকার করেই বলছি- এ বিষয় নিয়ে কোনোদিন ভাবিনি। পুরো বিষয়টি গবেষকদের জন্য রেখে দিলাম।

বাল্যকালে দু’টি বাংলা খ্রিস্টীয় গানের বই দেখেছিলাম। একটি হলো “পবিত্র ক্রুশ সংঘের গীতাবলী,” আর অন্যটি হলো “দিনাজপুরের গানের বই।” এ দু’টি খ্রিস্টীয় গীতাবলীর প্রায় সব গানই প্রতিবেশী প্রকাশনীর গীতাবলীতে স্থান পেয়েছে। এগুলো এখন আর আলাদা করে চেনা যাবে না। মনে আছে “দিনাজপুরের গানের বইয়ে গ্রেগরীয়ান ও ল্যাটিন সুরে কিছু গান ছিলো।

পূর্ববঙ্গে বাংলা খ্রিস্টীয় সংগীতের পথ প্রদর্শক হলো “একাডেমী অব ওরিয়েন্টাল মিউজিক, ওরিয়েন্টাল ইন্সটিটিউট, বরিশাল। এখান থেকে প্রকাশিত গানের কথা ও সুর আজোও খ্রিস্টীয় সংগীতের প্রাণ ও মডেল হয়ে আছে। ওরিয়েন্টালের অনেক গানের মধ্যে দু’টি আগমনকালীন গান ইতিহাসে হারিয়ে যাবার নয়। একটি হলো, “হবে তাঁর আগমন,” (গী.ব. ৫৭৮)। এ গানটির গীতিকার হলেন মতিলাল দাস এবং সুরকার স্যার সুশীল বাড়ৈ। আর অন্য গানটি হলো, হে বাণী স্বর্গীয়,” (গী.ব. ৫৮১)। এ গানটির গীতিকার এবং সুরকার বার্থলমিয় সাহা। বাণীদীপ্তি স্টুডিও থেকে ধারণকৃত ‘বড়দিনের গান’ এলবামে এ গান দু’টি রয়েছে। পরবর্তীতে ফাদার প্যাট্রিক গমেজ রচিত এবং সুরারোপিত, “অন্ধকারে আলো জ্বালাতে,” (গী.ব. ৫৯১) গানটিও সারা দেশে জনপ্রিয়তা লাভ করে। এ-তো গেলো আগমনকালের কথা- যে গানটি না গাইলে বড়দিন মনে হয় না, সেটি হলো, “শোন শোন শোন, শোন দুনিয়ার শ্রান্ত ক্লান্ত ব্যথিত নর” (গী.ব. ৬০৭)। দ্বিজদাস কর্তৃক রচিত ও সুরারোপিত গানটি ‘বড়দিনের গান’ এলবামের সবচেয়ে জনপ্রিয় খ্রিস্টীয় বড়দিনের গান। ‘বড়দিনের গান’ এলবামটি ঢাকায় অবস্থিত শ্রুতি স্টুডিওতে ধারণ করা হয়েছিলো। বানীদীপ্তিকর্তৃক ব্যবস্থানায় যতো এলবাম বাজারে এসেছে- জনপ্রিয়তার দিক থেকে এখনোও ‘বড়দিনের গান’ এলবামটি শীর্ষে। আগমন ও বড়দিনকালীন গানের জগতে ‘বড়দিনের গান’ মাইল ফলক।

বাংলা গান ও বড়দিন সংগীতকে বাংলার আনাচে কানাচে পৌছে দেওয়ার পিছনে যে দু’জন ব্যক্তির নাম খ্রিস্টমণ্ডলির সংগীত ইতিহাস থেকে হারিয়ে যাবে না- আমি শ্রদ্ধা রেখেই তাদের নাম বলছি- তারা হলেন স্বর্গীয় ফাদার ফ্রান্সিস গমেজ সীমা এবং মি. দীপক বোস। আজকে যারা এখনো সংগীত নাড়াচাড়া করছেন তারা প্রায় সবাই ফাদার সীমার ছাত্র বা অনুসারী। তিনি নিজেও ছিলেন একজন গীতিকার, সুরকার এবং গায়ক। অন্যদিকে দীপক বোস সংগীত পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছেন। নিজের চোখে দেখা- সুর ও বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গতকে নিখুঁত করার জন্য মি. বোস কেমন নিষ্ঠাবান ছিলেন। খ্রিস্টীয় সংগীতে বাদ্য-যন্ত্রের ব্যবহার যে কর্মাশিয়াল গানের মতো নয়, তিনি তা খুব ভালো বুঝতেন। মি. বোস ছিলেন বানীদীপ্তির সংগীত পরিচালক।

আরোও অনেকে বড়দিনকে কেন্দ্র করে গানের এলবাম বের করেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন ফ্রান্সিস বালা। মি. বালা বাণীদীপ্তি স্টুডিও থেকেই তার গান সম্পাদনা করতেন। প্রসঙ্গক্রমে সংগীত শিল্পী স্যার সুশীল বাড়ৈ সম্পর্কে বলতেই হয় যে, ওনার সুরারোপিত গানগুলোর মূল ধরনই হলো খ্রিস্টীয় সংগীত গোত্রভূক্ত। সুরের মধ্যে আধ্যাক্তিকতা রয়েছে। তবে বড়দিনের সংগীতকে পেশাদারিত্বে নিয়ে যাওয়ার পিছনে আর একজনের নাম স্মরণ করতে হয়- তিনি হলেন নিপু গাঙ্গুলী। বাণীদীপ্তির নিয়মিত শিল্পী নিপু গাঙ্গুলীর সংগীত পরিচালনায় দু’টি এলবাম স্মরণীয়। পেশাদারিত্বের ছাপ রেখেছেন প্রতিটি গানের সুরে ও মিউজিক কম্পোজিশনে। নিপু গাঙ্গুলীর পরিচালনায় গোল্লা ধর্মপল্লীর প্রয়াস শিল্পীগোষ্ঠী (সম্ভবত ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে) ‘অনন্যা এ যামিনী’ ও ‘প্রত্যাশা’ নামে দু’টি এলবাম প্রকাশ করেন। দু’টি এলবামে বড়দিন ঘিরে মোট ২৫টি গান স্থান পেয়েছে। প্রাণ ছুঁয়ে যাওয়া গানগুলো গির্জায় খুব কমই পরিবেশীত হয়। এর মূল কারণ সুরের ঝংকার এবং বাণীর বিন্যাস প্রচলিত গানের ধারা থেকে আলাদা ও জটিল। এ গানগুলোতে হিন্দুস্থানী বা উত্তর ভারতীয় সংগীতধারা অনুসরণ করা হয়েছে।

বড়দিনের গান গির্জায় জনপ্রিয় হয়ে উঠার পাশাপাশি তা ধীরে ধীরে বাঙালির চিরায়িত সংস্কৃতি ও উৎসবের মধ্যে মিশতে থাকে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলার শীতকালও উৎসব, আনন্দের কাল। শীতের আমেজ, নবান্ন উৎসব, গায়ের বধূ, মেঠো পথ- বাংলার এ চিরন্তন সৌন্দর্যগুলো স্থান করে নেয় বড়দিনের গানে। এ প্রসঙ্গে দু’টি গান এখানে উল্লেখ করতে চাই- একটি হলো “খুশীর বাগিচায় দোয়েল শ্যামা” (গী.ব. ৬১১) গানটি। “মুক্তির জয়গান” এলবামে স্থান করে নেওয়া গানটির গীতিকার ও সুরকার হলেন জনপ্রিয় নজরুল সংগীত শিল্পী স্বর্গীয় যোসেফ কমল রড্রিক্স। অন্য আর একটি গান এখানে উল্লেখ করতে চাই, সেটি হলো “শীত মাঝে এলো বড়দিন” (গী.ব. ৬৬৯) গানটি। গানটির গীতিকার হলেন উইলিয়াম অতুল এবং সুরকার যোসেফ কমল রডিক্স। ‘বড়দিনের গান’ নামক এলবামে গানটি রয়েছে। এ রকম আরো কিছু গান গীতাবলীতে স্থান পেয়েছে, যেগুলো বড়দিনের উৎসবকে নিয়ে গেছে বাংলার মেঠোপথে, ঘরে ঘরে তথা সমাজের প্রচলিত সংস্কৃতিতে।

কীর্তন গান, বাংলা গানের একটা ভিন্ন ধারা। কীর্তন গান গাইবার যে উপযুক্ত ঢং, সেটা বজায় রাখতে পারলে- সব গানকে ছাড়িয়ে যায়। অবিভক্ত বাংলায় আদিকাল থেকেই মন্দিরের দেব-দেবীকে তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে কীর্তন গান পরিবেশন করা হতো। এখনোও আছে। সেখান থেকেই কীর্তন গান খ্রিস্টীয় সংগীতে স্থান করে নেয়। একটা সময় বড়দিনকে ঘিরে কীর্তন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলো। বড়দিনের মাঝরাতের মিশার পরই শুরু হতো কীর্তন। বায়েন গায়েনরা গির্জায় আসার সময়ই কীর্তনের মূল বাদ্যযন্ত্র খোল ও করতাল সঙ্গে করে নিয়ে আসতেন। ঐ সময়কার জনপ্রিয় গানটি ছিলো, “ও ভাই আনন্দে যীশুর গুণ গাও রে,” (গী.ব. ৪৮৩) গানটি। দেব-দেবীর উদ্দেশ্যে রচিত কীর্তনগুলোর বাণী ও সুর রদবদল করে খ্রিস্টীয় কীর্তন গাওয়া হতো। কীর্তন যখন দ্রুততাল বা ঝুমুর ধরতো, তখন মাঝে মাঝে শোনা যেতো ‘হরিবোল, হরিবোল।’ আগেকার দিনে বাঙালি ধর্মপল্লীগুলোতে কীর্তন প্রতিযোগীতা হতো। কীর্তনদল নিজের ধর্মপল্লীর পাড়ায় পাড়ায় গান পরিবেশন শেষে অন্যান্য ধর্মপল্লীতেও ছড়িয়ে পড়তেন।

কীর্তন গানের স্বভাবটা হলো ধীরলয় থেকে ঝুমুরলয়। অর্থাৎ ‘স্থায়ী’ হবে ধীরলয়ের, অন্যদিকে ‘অন্তরা’ ও ‘সঞ্চারী’ ঝুমুরলয়ের বা দ্রæতলয়ের। এভাবে এক কলি গাওয়ার পর, বার বার ফিরে আসে ধীরলয় স্থায়ীতে। গীতাবলীতে বেশকিছু কীর্তন স্থান পেয়েছে। এগুলোর মধ্যে কয়েকটি কীর্তন এখনোও শোনা যায়, যেমন- আনন্দে বন্দি দীনবন্ধু (গী.ব. ৮৩৩), তোমার জয় হোক (গী.ব. ৮৩৬), গান দু’টিতে কীর্তনের মূল ধারা বজায় রয়েছে। বেশ কয়েকটি কীর্তন গীতাবলীতে স্থান পেয়েছে যেগুলোর সুর ও লয় নামকীর্তন বা রাধা-কৃষ্ণ লীলা ধাচের। এগুলোর মধ্যে অন্যতম যোসেফ কমল রড্রিক্স রচিত, আজি মহারাজা এলো ভবে (গী.ব. ৬২৫), আজি ফুলে ফুলে (গী.ব. ৮৪০), আনন্দে আজ মাতোয়ারা (গী.ব. ৮৫৫) কীর্তনগুলো। এই কীর্তনগুলোর সুর ও বাণীর বিন্যাস এক কথায় সুমধুর। এখন আক্ষেপ করেই বলতে হয় যে, কীর্তনের সে সময়টি হারিয়ে গেছে। এতো সুন্দর একটি সংগীত মাধ্যম ‘কীর্তন’ খ্রিস্টীয় বাংলা সংগীতের মূল ধারায় স্থান করে নিতে পারেনি।

খ্রিস্টীয় সংগীত শুধু উপাসনালয়ে পরিবেশনার জন্য নয়- কিন্তু উপাসনাকে জীবন্ত ক’রে তোলা। এই গানের মধ্যদিয়ে প্রচারিত হয় খ্রিস্টের বাণী, রচিত হয় খ্রিস্টীয় সাহিত্য। তাই যুগে যুগে এর উৎকর্ষসাধন অপরিহার্য। মনে হয় খ্রিস্টীয় সংগীত বা বড়দিন সংগীতের একটা সুবর্ণকাল আমরা পেরিয়ে এসেছি। এখন সংগীত সাধনার অনেক সুযোগ তৈরি হয়েছে। খ্রিস্টান সমাজ থেকে অনেক পেশাদারি গায়ক বেরিয়ে আসছেন। কিন্তু সে তুলনায় খ্রিস্টীয় সংগীতের ভুবনটা কিন্তু অতো সমৃদ্ধশালী হচ্ছে না।

“রাখালেরা যা-কিছু শুনল ও দেখল, তার জন্যে পরমেশ্বরের বন্দনা করতে করতে, তাঁর জয়গান গাইতে গাইতে তখন ফিরে গেল।” সেক্যুলার সংগীতের ভীড়ে খ্রিস্টীয় ও বড়দিনের গান সুর মেলাবে, নতুনত্ব আনবে। কিন্তু উপাসনালয়ে ভক্তের সমবেত কন্ঠে ঝংকৃত হবে বড়দিনের গান। কারণ বড়দিন খ্রিস্টের জন্ম-উৎসব। তাই আসুন আমরাও রাখালদের মতো গেয়ে উঠি তাঁর জয়গান- আমাদের অন্তরটাই হোক খ্রিস্ট জন্মের ‘যাবপাত্র।’ পাঠকদের প্রতি রইলো বড়দিনের শুভেচ্ছা।

Please follow and like us: