প্রার্থনা হচ্ছে আমাদের আত্মার খাদ্য। আমরা প্রার্থনা করি তবে প্রতিদিন আমাদের প্রার্থনা হয়ে উঠতে হয় বলে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের যাজকদের বাৎসরিক সেমিনারের উদ্বোধনী বক্তব্যে বিশপ জের্ভাস রোজারিও এই অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি আরো বলেন, আমরা যাজকগণ যেন প্রার্থনার মানুষ হই এবং জনগণকে সাথে নিয়ে প্রার্থনাপূর্ণভাবে খ্রিস্টের জন্ম জুবিলী বর্ষ পালনের জন্য প্রস্তুত করতে পারি।
৮ জানুয়ারি রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় কেন্দ্রে যাজকদের এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সেমিনারে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিভিন্ন ধর্মপল্লীতে কর্মরত ৫৪ জন যাজক উপস্থিত ছিলেন। ফাদার দিলীপ এস. কস্তা যাজকীয় জীবনে প্রার্থনা বিষয়ে বলেন, যিনি বলতে পারেন যে আমি পাপী তিনিই প্রার্থনা করতে পারেন। আর আমরা যেহেতু সবাই পাপী তাই আমরাও প্রার্থনা করি। ফাদার পল গমেজ অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, খ্রিস্টভক্তগণ যাজককে প্রার্থনাশীল হিসাবে দেখতে চান। পাপস্বীকার করা ও শ্রবণও এক প্রকার প্রার্থনা তবে এই ক্ষেত্রে বর্তমানে প্রকট অভাব লক্ষ্যণীয়।
ফাদার এমিল এক্কা ‘যাজক এবং ধর্মপল্লীতে জুবিলী প্রস্তুতি’ বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি বাইবেলের আলোকে জুবিলী পালনের গুরুত্ব বিষয়ে বলেন, বাইবেলের লেবীয় পুস্তকে জুবিলী প্রসঙ্গ রয়েছে। ইহুদি জাতি পঞ্চাশতম বছরে শিঙ্গা বাজিয়ে জুবিলী পালন শুরু করতো। জুবিলীবর্ষ হচ্ছে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ ও আমাদের খ্রিস্টবিশ্বাসের উদযাপন। পোপ ফ্রান্সিস ২০২৪ খ্রিস্টাব্দকে প্রার্থনার বর্ষ হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন যেন বিশ্ববাসী জুবিলীবর্ষ প্রার্থনাপূর্ণভাবে করতে পারে, আর এ যেন প্রার্থনা শিঙ্গা বাজানোর মতো। জুবিলীবর্ষ পালনের তিনটি বিষয় হচ্ছে- যিশুর জন্ম, মণ্ডলি এবং নিজেকে উদযাপন। বাহ্যিকভাবে জুবিলী পালনের জন্য ফাদার এমিল কয়েকটি প্রস্তাব রেখে ধর্মপ্রদেশের বিশপ পালকীয় পত্র প্রস্তুত, জুবিলী লগো তৈরি, খ্রিস্টযাগে জুবিলী বিষয়ে উপদেশ, রেডিওতে প্রচার, প্রার্থনা কার্ড তৈরি, ব্যানার প্রস্তুত, সভা-সেমিনার, জুবিলী সঙ্গীত, লিফলেট, হোয়াটসআপ ও ফেসবুক গ্রুপ তৈরি, জুবিলী স্থাপনা, প্রার্থনা দল তৈরি, চব্বিশ ঘণ্টা আরাধনার ব্যবস্থা ও পারিবারিক প্রার্থনা জোরদার করা যেতে পারে বলেন।
ধর্মপ্রদেশ ও ধর্মপল্লীতে আধ্যাত্মিক ও বাহ্যিকভাবে কিভাবে জুবিলী পালন করা যায় সে বিষয়ে অংশগ্রহণকারী যাজকগণ বিভিন্ন প্রস্তাব রাখেন। ফাদার পল পিটার কস্তা’র লিখিত ‘ধর্মোপদেশ সহায়ক’ নামক বই প্রকাশের মধ্য দিয়ে সেমিনার সমাপ্ত হয়।
বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার