বরেন্দ্রদূত সংবাদদাতা

আমরা আশা নিয়ে প্রতিদিন বেঁচে থাকি। আর পুণ্যপিতা ফ্রান্সিস যিশুর জন্মের জুবিলী বর্ষের মূলভাব বেছে নিয়েছেন “আশার তীর্থযাত্রা”। আমরা রাতের পর দিনের আশায় থাকি। ঝড়ের পর প্রকৃতি শান্ত হবে। জীবনে নানা সমস্যা, সংকটের পর তা দূর হবে। ঠিক তদ্বরূপ জীবনের চূড়ান্ত আশা হচ্ছে জীবনের শেষে আমরা স্বর্গে ঈশ্বরের সাথে মিলিত হবো। কিন্তু স্বর্গে যাবার জন্য জীবনাচরণ পরিবর্তন করতে হবে। জুবিলী বর্ষে আমরা যেন অন্যের প্রতি সমব্যাথী হই। সকল প্রকার ঋণ মওকুফ করি। রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের মধ্য ভিকারিয়ার আন্ধারকোঠা ধর্মপল্লীতে ভিকারিয়াভিত্তিক যিশুর জন্ম জুবিলী বর্ষ উদ্বোধনকালে বিশপ জের্ভাস রোজারিও এই কথা বলেন।

১৫ মার্চ ফাদার, সিস্টার, ব্রাদার এবং বিভিন্ন শ্রেণির ২০০ খ্রিস্টভক্তের উপস্থিতিতে জুবিলী বর্ষ উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুভেচ্ছা বক্তব্যে মধ্য ভিকারিয়ার আহ্বায়ক ফাদার বিশ্বনাথ মারাণ্ডী বলেন, মধ্য ভিকারিয়ায় জুবিলী বর্ষ দুইভাগে অনুষ্ঠিত হবে। আন্ধারকোঠা ধর্মপল্লীতে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের মধ্য ভিকারীয়ার জুবিলী বর্ষ উদ্বোধনের কারণ হচ্ছে, এই ধর্মপল্লী আমাদের মাতৃস্বরূপ। এখান থেকেই খ্রিস্ট বিশ্বাসের যাত্রা শুরু হয়েছিল। দ্বিতীয় ভাগে জুবিলী বর্ষ সমাপ্ত হবে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশীয় তীর্থস্থান নবাই বটতলা ধর্মপল্লীতে। এছাড়াও আমরা যেন প্রত্যেকটি ধর্মপল্লীতে যথাযথভাবে জুবিলী বর্ষ পালন করি।

বনানী পবিত্র আত্মা উচ্চ সেমিনারীর পরিচালক ফাদার পল গমেজ মূলভাবের আলোকে আলোচনায় বলেন, আমরা প্রতিনিয়তই তীর্থযাত্রা করি। আর আশা হচ্ছে একটি ঐশ্বরিক গুণ। আশা আমাদের মধ্যে ব্যাকুল প্রত্যাশা জাগিয়ে তুলে। আশা কোন মায়া-মরীচিকা নয়। আশা কখনো নিস্ক্রিয় হতে পারে না। যখন আমাদের সমস্যা আসে তখন আশা পথ চলতে সাহস যোগায়। দার্শনিক এরিস্টটলের উক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আশা আমাদের ভবিষ্যতকে শক্তিশালী করে। আশার তীর্থযাত্রা ভ্রাতৃত্ববোধে আমাদের এক করে তোলে।

জুবিলী বর্ষ উদ্বোধন অনুষ্ঠানের মধ্যে আরো ছিলো নীরব ধ্যান, পাপস্বীকার সংস্কার গ্রহণ, ক্রুশের পথ, খ্রিস্টযাগ, জুবিলী প্রার্থনা আবৃত্তি ও জুবিলী স্মারকচিহ্ন উন্মোচন। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী ফ্রান্সিস সরেন বলেন, যিশুর জন্মের এই জুবিলী বর্ষ আমাকে ২০০০ খ্রিস্টাব্দের জুবিলী বর্ষকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। ২০২৫ খ্রিস্টাব্দের জুবিলী আমাকে মিলন, একতা, ভালবাসা ও বিশ্বাসে বেড়ে ওঠার আহ্বান জানায়।

সিস্টার কস্তানতিনা রায় অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, আমার এই দীর্ঘ বয়সে আমি অত্যন্ত ভাগ্যবান। কারণ আমি যিশুর এই জন্ম জুবিলী বর্ষে তাঁর সাথে মিলিত হতে পারছি। আমি যেন আশার মানুষ হয়ে উঠতে পারি এবং অন্যের মাঝেও যেন আশা স্থাপন করি।

Please follow and like us: