গত ১৫ থেকে ১৮ জুলাই ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় সেবাকেন্দ্রে, “ক্ষুদ্র খ্রিস্টিয় সমাজ, বিশ্বাসের গঠন ও বাণী প্রচারে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী মণ্ডলী ও খ্রিস্টিয় নেতৃত্বের গঠন” এই মূলসুরের উপর রাজশাহী ধর্মপ্রদেশীয় ক্ষুদ্র খ্রিস্টিয় সমাজ দলের আয়োজনে বাৎসরিক কর্মশালা ২০১৯ অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের প্রায় প্রত্যেকটি ধর্মপল্লী থেকে মোট ৮২ জন অংশগ্রহণ করেন। এই কর্মশালার শুভ উদ্বোধন করেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপ জের্ভাস রোজারিও। বাইবেল শোভাযাত্রা এবং বাইবেল প্রতিষ্ঠার পর ধর্মপ্রদেশের বিশপ মহোদয় ও ধর্মপ্রদেশীয় ক্ষুদ্র খ্রিস্ট সমাজ দলের প্রধান শ্রদ্ধেয় ভিকার জেনারেল ফাদার পল গমেজ ও ৩ ভিকারিয়ার ৩ জন প্রতিনিধি মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন। বিশপ জের্ভাস রোজারিও তার উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন যে, “আমি বা আমরাই মণ্ডলী। আমি চাই আমাদের ধর্মপ্রদেশের প্রত্যেকটি ধর্মপল্লী গঠিত হবে এই ক্ষুদ্র খ্রিস্টিয় সমাজের আদলে।”
প্রথম অধিবেশনে “ক্ষুদ্র খ্রীষ্টিয় সমাজে বিশ্বাসের গঠন, বর্তমান অবস্থা ও আমাদের করণীয় কী” এই বিষয়ের উপর উপস্থাপনা প্রদান করেন ফাদার পল গমেজ । দ্বিতীয় অধিবেশনে, ক্ষুদ্র খ্রীষ্টিয় সমাজ কী এবং কেন? ক্ষুদ্র খ্রীষ্টিয় সমাজের ৪টি বৈশিষ্টের উপর সহভাগিতা করেন ফাদার বাবলু কোড়াইয়া ও ফাদার সুব্রত কস্তা। তৃতীয় অধিবেশনে “সপ্তধাপ পদ্ধতিতে বাইবেল সহভাগিতা” উপর ভিত্তি করে উপস্থাপনা দেন ফাদার বাবলু ও ফাদার সুব্রত। অন্যদিকে, “মণ্ডলীর একটি দর্শন বা Vision আছে আর তা হলো- অংশগ্রহণকারী মণ্ডলী।” এ মূলভাবের উপর কথা বলেন, ফাদার আলবিন মন্টু গমেজ। তিনি অংশগ্রহণকারী মণ্ডলীতে পুরোহিত ও ভক্ত জনগণ কি ভাবে খ্রীষ্টের জীবনে প্রেরণ কর্মে অংশগ্রহণ করেন সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি আরো বলেন, অংশগ্রহণকারী মণ্ডলীর স্বপ্ন আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয় ১৯৯০ খীষ্টাব্দে বানডুং এ এশিয়ার বিশপগণের পঞ্চম সাধারণ সভাতে। সেখানে বলা হয় মণ্ডলীকে হতে হবে অংশগ্রহণকারী মণ্ডলী। এরপর ১৯৯৩ খ্রীষ্টাব্দে মালয়েশিয়াতে এশিয়ার বিশপগণের যে সভা অনুষ্ঠিত হয় সেখানে বিষয়টি আলোচিত হয়, কিভাবে অংশগ্রহণকারী মণ্ডলী গড়ে তোলার পালকীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়। আর যে প্রক্রিয়া তাঁরা গ্রহণ করেন তাকে বলা হয় এশিয় সমন্ধিত পালকীয় প্রক্রিয়া (ASIAN INTEGRAL PASTORAL APPROACH). তিনি ক্ষুদ্র খ্রীষ্টিয় সমাজ পদ্ধতিতে কীভাবে ৭টি মডিউল ব্যবহার করে অংশগ্রহণকারী মণ্ডলী হয়ে উঠতে পারি সেই বিষয়ে বিষদভাবে আলোচনা করে। পরিশেষে শ্রদ্ধেয় বিশপ জেভার্স রোজারিও এই কর্মশালার সমাপনী খ্রিস্টযাগ উৎর্সগ করেন। তিনি তার উপদেশে বলেন, আমাদের সব কিছু করার জন্য ইচ্ছা শক্তি ও আত্মপ্রত্যয় নিয়ে কাজ করতে হবে। তাই আমি চাই যে, আমাদের ধর্মপ্রদেশের প্রতিটি ধর্মপল্লীতে যেন ক্ষুদ্র খ্রিস্টিয় সমাজ ভিত্তিক মণ্ডলী গঠনে ফাদার সিস্টার ও খ্রীষ্টভক্তদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে। আসুন আমি, আমরা সকলে মিলে মণ্ডলী হয়ে উঠি।
সক্রিয় অংশগ্রহণকারী মণ্ডলী ও খ্রিস্টিয় নেতৃত্বের গঠন বিষয়ক ধর্মপ্রদেশীয় কর্মশালা
Please follow and like us: