kingessays reviewskingessays reviewsবিগত ১২ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশে পালকীয় দলের আয়োজনে তিনদিন ব্যাপি অনুষ্ঠিত হলো ধর্মপ্রদেশীয় পালকীয় কর্মশালা। এই বছরের পালকীয় কর্মশালার মূলসুর ছিল কৃষ্টি-সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে মঙ্গলবাণী প্রচার। “আমি একটি খালি বস্তা এবং এই খালি বস্তা হতে পেরেই আমি কৃতজ্ঞ। গ্রাম-চত্ত্বরে একটি সামান্য ফোয়ারা হতে পেরে আমি খুব খুশি, যেখানে সবাই আসতে পারে এবং বিশুদ্ধ পানি পান করতে পারে। আমি যে কোন মূল্যে সব মানুষকে জোড় করে খ্রিস্ট বিশ্বাসে আনতে চাই না; আমি এতেই তুষ্ট যে, কিছু লোক আমার সাথে সাক্ষাতের পর অন্তত মানবীয় দয়া করার একটি ক্ষুদ্র স্মৃতিচিহ্ন সঙ্গে বয়ে নিয়ে যায়।” এই কথাগুলো বলেন পোপ যোহন। এরূপ উদ্ধৃতি এবং আরও নানা ধরনের চিন্তা-চেতনা, কৃষ্টি-সংস্কৃতি, অর্জন-ব্যর্থতা, আশা-প্রত্যাশা আর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হলো ধর্মপ্রদেশীয় পালকীয় কর্মশালা।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ফাদার উইলিয়াম মুরমু। তিনি সকলকে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের অনুরোধ জানান। এরপর বিশপ জের্ভাস রোজারিও তাঁর উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন, আমরা বাঙালি বা আদিবাসী কৃষ্টি-সংস্কৃতিরই সন্তান। হিন্দু, মুসলমান ও অন্য সকলের সঙ্গে আমাদের বসবাস। সুতরাং তাদের সাথে কৃষ্টি-সাংস্কৃতির ব্যবহার এবং সংলাপ ও সম্প্রীতির আদান-প্রদান আমাদেরকে তাঁদের কাছে আরও বেশী গ্রহণযোগ্য করে তুলবে।
এছাড়া বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনায় কৃষ্টি ও সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে মঙ্গলবাণী প্রচারের পদ্ধতি ও কৌশলগত দিক” উপস্থাপন করেন ফাদার লাজারুশ রোজারিও; Maximum Illud ও শিষ্যচরিত পুস্তকের আলোকে মঙ্গলবাণী প্রচারের কৌশল- বিষয় উপস্থাপন করেন ফাদার প্যাট্রিক গমেজ। এছাড়া বিষয়ভিত্তিক কৃষ্টি উপস্থাপনায়- বাঙ্গালী কৃষ্টি উপস্থাপন করেন মিস্ শিল্পী ক্রুশ, বনপাড়া ধর্মপল্লী; পাহাড়ীয়া কৃষ্টির আলোকে সহভাগিতা করেন মি. অভিলাষ বিশ্বাস, সুরশুনিপাড়া ধর্মপল্লী; উরাঁও কৃষ্টিতে উপস্থাপনা করেন মি. ধীরেন কেরকেট্টা, গুল্টা ধর্মপল্লী; মাহালী কৃষ্টিতে উপস্থাপন করেন মিস্ ববিতা মার্ডী, সুরশুনিপাড়া ধর্মপল্লী; সান্তালী কৃষ্টিতে উপস্থাপন করেন মি. বার্ণাবাস হাঁসদা, বেণীদুয়ার ধর্মপল্লী এবং মুন্ডারী কৃষ্টিতে উপস্থাপন করেন মি. আদম তপ্ন, বেণীদুয়ার ধর্মপল্লী।
এছাড়া সামগ্রিক কর্মশালায় ছিল ভিকারিয়াভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপস্থাপনায় মূলসুরের উপর ভিত্তি করে ভিডিও ক্লিপস্ এর মাধ্যমে উপস্থাপনা। প্রদর্শন করা হয় ধর্মপল্লীভিত্তিক দেয়ালিকা। ছিল উন্মুক্ত আলোচনা, ভিকারিয়া ও ধর্মপল্লীভিত্তিক দলীয় আলোচনা ও কর্মপরিকল্পনা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড। সব শেষে ভিকারিয়াভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপস্থাপনা উপস্থাপনার উপর বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার প্রদান এবং সকলের অংশগ্রহণে প্রণয়ন করা হয় ‘প্রেরণ বিবৃতি’।
উল্লেখ্য কর্মশালায় সর্বমোট ২০৪ জন অংশ গ্রহণ করেন। তন্মধ্যে, ধর্মপ্রদেশের বিশপ জের্ভাস রোজারিও, এসটিডি, ডিডি এবং বিশেষ অতিথি মন্সিনিয়র আলবারো ও মন্সিনিয়র, মার্শেলিউস তপ্ন; ভিকার জেনারেল, ফাদার পল গমেজ; চ্যান্সেলর, ফাদার উইলিয়াম মুরমু এবং কারিতাস রাজশাহীর আঞ্চলিক পরিচালক, মি. সুক্লেশ জর্জ কস্তাসহ ধর্মপ্রদেশে কর্মরত ৫৬ জন ফাদার, ৩৫ জন সিস্টার এবং ১১৩ জন খ্রিস্টভক্ত উপস্থিত ছিলেন।
রাজশাহী ধর্মপ্রদেশে অনুষ্ঠিত হলো ১৭তম পালকীয় কর্মশালা
Please follow and like us: