গত ১৮ অক্টোবর ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে, মহাসমারহে সুরশুনিপাড়া প্রভু নিবেদন ধর্মপল্লীতে অনুষ্ঠিত হলো রজত জয়ন্তী উৎসব। পথ চলার এই ২৫ বছর অতিক্রম করার পরে বর্তমানে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশ মহারম্ভড়ে তার রজত জয়ন্তী উৎসব পালন করছে। এই রজত জয়ন্তী উৎসব পালনের উদ্দেশ্য হলো ঈশ^রের শত আর্শীবাদ, দয়া ও অনুগ্রহের জন্য তাঁকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা। এই রজত জয়ন্তী উৎসবকে কেন্দ্র করে বিগত একটি বছর ধরে ধর্মপল্লীর প্রতিটি গ্রামে জুবিলী ক্রুশ পরিদর্শন ও প্রার্থনার মাধ্যমে আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি শেষে রজত জয়ন্তীর চূড়ান্ত আধ্যাত্মিক প্রস্তুতির অংশ হিসাবে বিগত ৯ দিনের বিশেষ নভেনা প্রার্থনা, পাপস্বীকার ও পবিত্র ক্রুশ অর্চনার মধ্য দিয়ে জয়ন্তী উৎসব পালন করা হয়। জুবিলীর আগের দিন গ্রাম থেকে জুবিলী ক্রুশ সহযোগে বিভিন্ন গ্রাম থেকে আগত খ্রীষ্টভক্তদের সক্রিয় অংশগ্রহণে পবিত্র ক্রুশ শোভাযাত্রা করে গীর্জা ঘরে পবিত্র ক্রুশের অর্চনা করা হয়। জুবিলীর দিনে রজত জয়ন্তীর মহা খ্রীষ্টযাগ অর্পণ করেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের শ্রদ্ধেয় ধর্মপাল জের্ভাস রোজারিও। পবিত্র খ্রীষ্টযাগে ২৬ জন যাজক, ১ জন ডিকন, ২ জন রিজেন্ট, ১৬ জন সিস্টার এবং ধর্মপল্লীর বিভিন্ন গ্রাম থেকে ও বিভিন্ন ধর্মপল্লী থেকে আগত প্রায় ৫ হাজার খ্রীষ্টভক্ত অংশগ্রহণ করেন। খ্রীষ্টযাগে বিশপ মহোদয় বাণী সহভাগিতায় বলেন- ‘জুবিলী ঈশ^রের প্রতি আমাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতার উৎসব। আমরা খ্রীষ্ট বিশ^াস লাভ করেছি, আর জুবিলীর মধ্য দিয়ে এখন আমরা বিশ^াসে পরিপক্বতা লাভ করেছি। তাই এখন আমাদের দায়িত্ব হলো সত্যিকারের খ্রীষ্টীয় জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে অন্যদের সামনে খ্রীষ্টের সাক্ষ্য তুলে ধরা।’ পবিত্র খ্রীষ্টযাগের পর স্মৃতিচারণ, জুবিলী স্মরণিকা উদ্বোধন, লটারী ড্র ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
পরম করুনাময় ঈশ্বরের অসীম কৃপায় সুরশুনিপাড়া প্রভু নিবেদন ধর্মপল্লীতে রজত জয়ন্তী উৎসব খুব সুন্দর ভাবে উদযাপন করা হলো।
দীর্ঘ ২৫ বছর এই স্কুল থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা অধ্যয়ণ করে পরিবার, সমাজ, ও দেশকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে অনেক অবদান রেখেছে। এই বিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভ করেই শিক্ষার্থীরা তাদের জীবনে নৈতিক, মানবিক ও আধ্যাত্নিক গঠণ লাভ করে নিজেরাই সুনাগরিক ও আত্নপ্রত্যয়ী ব্যক্তিরূপে গড়ে উঠছে তাই সেন্ট রীটাস হাই স্কুলের প্রতি রইল রজত জয়ন্তী উপলক্ষ্যে অনেক ভক্তি, শ্রদ্ধা ও ভালবাসা। উদ্বোধণী অনুষ্টানে স্কুলের সভাপতি ও জুবিলী কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ফাদার দিলীপ এস. কস্তা বলেন; জয়ন্তী উৎসব মূলত ধন্যবাদ-কৃতজ্ঞতা ও আনন্দের উৎসব। ফাদার বলেন, জয়ন্তী উৎসব হলো পুণর্মিলন ও একতার প্লাটফরমে মিলন মেলায় একটা বড় সুযোগ তাই জুবিলী বা জয়ন্তীতে “দিবে ও নিবে এবং মিলাবে ও মিলিবে”। এই বিদ্যালয়ের জয়ন্তী উৎসব পুরাতন, নতুন ও বর্তমান সকল শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি নতুন সেতু বন্ধন তৈরী করে দিবে। অন্যদিকে জেলা প্রশাসক মো: জসিম উদ্দিন বলেন, আলোকিত মানুষ গড়া ও শিক্ষার আলো বিস্তারে এই বিদ্যালয়টি এই এলাকায় বিশেষ অবদান রাখছে তাই আমি এই মহতী দিনে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মণ্ডলীকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি ছাএ-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, শুধুমাএ জিপিও ৫ পয়েন্ট পেলেই চলবে না বরং ভাল মানুষ হওয়ার জন্য জীবনে ভাল শিক্ষা গ্রহন করতে হবে। বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ও রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ জের্ভাস রোজারিও বলেন, সেন্ট রীটাস হাই স্কুল এই এলাকায় জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে তাই আমি স্কুলের পরিচালক মণ্ডলী, শিক্ষক মণ্ডলী, শিক্ষার্থী সকলকে অনেক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি। বিশপ বলেন, চাটমোহর উপজেলায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্টানগুলোর মধ্যে অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্টান হিসাবে এই বিদ্যালয়টি পরিগনিত হয়ে আসছে তাই আমি প্রত্যাশা করি, এভাবেই যেন স্কুলটি সমাজে সকলের সামনে স্বগৌরবে মাথা উচু করে দাড়িয়ে থাকে এবং শিক্ষার্থীরা যেন তাদের অন্তরে দয়া, ক্ষমা, নম্রতা ও সততার বীজ বপনে ও বিবেকের গঠনদানে প্রতিনিয়তই অবদান রাখে। এই দুই দিনব্যাপি রজত জয়ন্তী উৎসব উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হয় আনন্দ র‌্যালী, সাধ্বী রীটার জীবনি, ডকুমেন্টারী প্রদর্শন, পবিএ খ্রিস্টযাগ, স্মৃতিচারণ, জুবিলীর স্মরণিকা উদ্বোধণ, মধ্যাহৃভোজ, সাংস্কৃতিক অনুষ্টান ও লাকী কুপন ড্র। পরম করুনাময় ঈশ্বরের অশীম কৃপায় সাধ্বী রীটাস হাই স্কুলের রজত জয়ন্তী উৎসব খুব সুন্দর ভাবে উদযাপন করা হলো।

Please follow and like us: