গত ১৯ নভেম্বর ২০২০ খ্রিস্টাব্দ কারিতাস লাইফ প্রকল্পের উদ্যোগে কারিতাস রাজশাহী অঞ্চলের আঞ্চলিক অফিসের হলরুমে জাঁকজমকের সাথে পালন করা হয় “বিশ্ব শিশু দিবস”। শিশু দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল- “শিশুর সাথে শিশুর তরে, বিশ্ব গড়ি নতুন করে।” শিশুরা যাতে শিশুদের অধিকার, শিক্ষা, নিরাপত্তা পাওয়া এবং নৈতিকতা মূল্যবোধ নিয়ে বেড়ে উঠতে পারে এ বিষয়ে সচেতনতা দান করাই ছিল এ আয়োজনের মূল লক্ষ্য। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ধর্মপাল এবং কারিতাস বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট বিশপ জের্ভাস রোজারিও। কারিতাস রাজশাহীর আঞ্চলিক পরিচালকের পক্ষে মি: দীপক এক্কা, প্রোগ্রাম অফিসার (ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট) সভাপতির আসন গ্রহণ করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাসিক ৫নং ওয়ার্ড এর কাউন্সিলর জনাব মো: কামরুজ্জামান এবং কর্মসূচি কর্মকর্তা (স্বাস্থ্য), কারিতাস রাজশাহী অঞ্চল মিস লুচিয়া মার্ডী। অনুষ্ঠানে ১২০ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশু উপস্থিত ছিলেন। দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম গান, নাচ, কবিতা ও ছড়া আবৃতি, চিত্রাংকন, গল্প বলা ও মাটির কাজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ১২০ জন শিশুকে পুরস্কৃত করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিশপ জের্ভাস রোজারিও শিশুদের উদ্দেশ্যে বলেন- শিশুরা হলো আগামী দিনের ভবিষ্যত। আগামী দিনে যাতে আমরা সুন্দর একটি পৃথিবী পেতে পারি এজন্য শিশুদের এখন থেকে মূল্যবোধ ও নৈতিকতা বিষয়ক শিক্ষা অর্জন করা দরকার। শিশুরা নিজেদের যেমন ভালোবাসে তেমনি যাতে অন্য শিশুদেরও নিজের ভাইবোন মনে করে ভালোবাসা প্রদর্শণ করে। প্রত্যেকে নিজ ধর্মসহ অন্য ধর্মকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করতে শিখে এবং বাবা-মার বাধ্য থাকে। তিনি শিশুদের ভালো মানুষ হওয়ার স্বপ্ন দেখার পরামর্শ রাখেন।
বিশেষ অতিথি জনাব মো: কামরুজ্জামান কামরু, কাউন্সিলর ওয়ার্ড নং-৫, রাসিক বলেন – শিশুরাও অবহেলিত নয়, শিশুরাও বড়দের মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তাই শিশুরা যাতে নিজেদের ছোট মনে করে যাতে গুটিয়ে না রাখে। তারা পরিবারে ও মহল্লাতেও নানা রকম ভালো কাজের মধ্য দিয়ে নিজেদের ভালো গুণ গুলো প্রকাশ করতে পারে।
লাইফ প্রকল্পের মনিটর মিস লুচিয়া মার্ডী বলেন, ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দের ২০ নভেম্বর জাতিসংঘ শিশুদের অধিকার বিষয়ক সনদ প্রকাশ করে। আর সেজন্যই এই দিনটিই শিশু দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়ে থাকে। আমরা এক দিন পূর্বে এ দিবসটি উদযাপন করছি। দিবসটি পালন করতে এসে অংশগ্রহণকারী পথশিশু প্রকাশ রবিদাস, রামকৃষ্ণপল্লী মহল্লা, রাজশাহী তার অনুভূতি প্রকাশ করে ঠিক এভাবে : আজকে শিশু দিবস উদযাপন করতে এখানে এসে আমার খুব ভালো লাগছে। শিশু দিবস সকল শিশুর জন্য আনন্দের দিন। আজ আমি ডিসকো ডান্স এর জন্য প্রথম পুরষ্কার পেয়েছি এজন্য আমি খুব খুশি। উর্মিলা খাতুন, গুড়িপাড়া (লাইনের ধার) মহল্লা, রাজশাহী বলে, আমি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় দেশাত্ববোধক গান-এই পদ্মা, এই মেঘনা গানটি গেয়ে প্রথম হয়েছি। আজ পুরষ্কার পেয়ে, আমি খুব খুশি। প্রত্যেক বছর কারিতাস লাইফ প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা যেন এই শিশু দিবস উদযাপন করে পুরষ্কার পেতে পারি।
অনুষ্ঠানের সভাপতি, মি: দীপক এক্কা তার বক্তব্যে বিশ্ব শিশু দিবসে সকল শিশুদের জন্য শিশু দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, আজকের এ দিন হলো শিশুদের উৎসব মূখর একটি দিন। আনন্দ করার পাশাপাশি শিশুদেরকে তাদের নিজের অধিকার সম্পর্কে জানতে হবে। শিশুদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যেন তারা বড়দের কথা শুনে এবং নিজের জীবনকে ভালো পথে চালান। সেই সাথে তিনি বিশ্বের সকল শিশুদের মঙ্গল কামনা করেন।
শিশুর সাথে শিশুর তরে, বিশ্ব গড়ি নতুন করে
Please follow and like us: