গত ১ মে, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ ভূতাহারা ধর্মপল্লীতে অত্যন্ত ভাবগাম্ভির্যপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে শ্রমিক সাধু যোসেফের পর্ব উদযাপন করা হয়। পর্বের প্রস্তুতি স্বরূপ তিন দিনের বিশেষ নভেনা প্রার্থনা করা হয়। পর্বের দিন সকাল ০৮:৩০ মিনিটে, সাধু যোসেফের মূর্তি নিয়ে শোভাযাত্রা সহযোগে পবিত্র খ্রিস্টযাগ শুরু করা হয়। পবিত্র খ্রিস্টযাগে প্রধান পৌরহিত্য করেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ধর্মপাল পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ জের্ভাস রোজারিও, তার সাথে ছিলেন ভূতাহারা ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত শ্রদ্ধেয় ফাদার সুশীল লুইস পেরেরা, সহকারী পাল-পুরোহিত ফাদার স্বপন পিউরীফিকেশন এবং রহনপুর ধর্মপল্লীর সহকারী পাল-পুরোহিত ফাদার সুজন গমেজ। এই পবীর্য় খ্রিস্টযাগে ৪ জন সিস্টারসহ ২৩০ খ্রিস্টভক্ত অংশগ্রহণ করেন।
বিশপ মহোদয় তার উপদেশে বলেন, আজ আমরা শ্রমিক সাধু যোসেফের পর্ব পালন করছি। শ্রমিক সাধু যোসেফ হলেন ভুতাহারা ধর্মপল্লীর প্রতিপালক। তাই আজ হচ্ছে ভূতাহারা ধর্মপল্লী সকলের পর্বদিন। আজকের এই আনন্দের দিনে আমি আপনাদের সকলকে জানাই পর্বীয় প্রীতি এবং শুভেচ্ছা। ‘শ্রমিক সাধু যোসেফের পর্বদিনে আমাদের প্রত্যেককে মনে রাখতে হবে যে, প্রতিটি কাজেই আমাদেরকে হতে হবে পূর্বের চেয়ে আরো বেশী আধুনিক, দক্ষ ও পারদর্শী। তা না হলে আমরা বর্তমান বাস্তবতায় ব্যর্থ হবো, পিছিয়ে পড়ব, এমন কি পরিবারও সুন্দরভাবে চালাতে অপরাগ হব। তিনি উপদেশে আরো বলেন, ‘সাধু যোসেফ ঈশ্বরের পরিকল্পনা অনুসারে যিশুর পালক পিতা হবার দায়িত্ব পেয়েছিলেন। তিনি ঈশ্বরের প্রতি তাঁর নম্রতা ও বিশ্বস্ততার আদর্শ প্রকাশ করেছেন। খ্রিস্টেতে প্রিয় ভাই-বোনেরা, আমরা সকলে জানি যে, পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস এই বছরটিকে (গত ৮ ডিসেম্বর ২০২০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৮ ডিসেম্বর ২০২১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত) “সাধু যোসেফের বর্ষ” হিসেবে ঘোষণা করেছেন। আমরা জানি সাধু যোসেফ ছিলেন একজন আদর্শ শ্রমিক। তাই তিনি নম্রভাবে কঠোর পারশ্রম করে তাঁর পরিবার চালিয়েছেন। যিশু ও মারীয়ার সকল প্রকার প্রয়োজন মিটিয়েছেন এবং সুষ্ঠভাবে তার পরিবার পরিচালনা করেছেন। তাঁর সৃজনশীলতার দ্বারা তাঁদের যত্ন করেছেন এবং তাঁদের প্রতি তাঁর ভালবাসা প্রকাশ করেছেন। তাই আমরা প্রত্যেকেই যেন সাধু যোসেফের গুণাবলী নিয়ে একটু ধ্যান করি ও যেন নিজ জীবনে অনুশীলণ করতে পারি।
খ্রিস্টযাগের পর মিশনবাসী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেন এবং বিশপ মহোদয়কে উপহার প্রদান করেন। ধন্যবাদ মূলক বক্তব্যে পাল-পুরোহিত বলেন, ‘আপনাদের সকলকে পর্বীয় শুভেচ্ছা জানাই এবং এই পর্বীয় খ্রিস্টযাগে অংশগ্রহণের জন্য আপনাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। শেষে দুপুরের আহারের মধ্য দিয়ে পর্বীয় অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।