গত ২৩ জুন ২০২২ খ্রি: বৃহস্পতিবার যিশু পবিত্র হৃদয়ের গির্জা বেনীদুয়ার ধর্মপল্লীতে অর্ধদিনব্যাপী যুব সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সেমিনারে ধর্মপল্লীর বিভিন্ন গ্রাম থেকে মোট ৩৫০ জন যুবক-যুবতী, ২জন ডিকন উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারের শুরুতে ডিকনদের সহযোগিতায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, বাইবেল পাঠ ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে পিতা ঈশ্বরের অনুগ্রহ যাচ্না করা হয়। এরপর ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাবিয়ান মারান্ডী সকলকে স্বাগতম ও শুভেচ্ছা জানান এবং সেমিনারকে সুন্দর ও সার্থক করার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এরপর সেমিনারে “বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ” এ বিষয়ের উপর সহভাগিতা করেন মি. ডেনিস তপ্ন ওয়ার্ল্ড ভিশন কর্মকতা। অতঃপর রাজশাহী হতে আগত ফাদার উইলিয়াম মূর্মূ “সিনোডাল চার্চ সম্পর্কে এবং নৈতিকতা ও একই গোত্রে বিবাহ না করা সম্পর্কে” সেমিনারে আলোচনা করেন। যার মধ্য দিয়ে তিনি যুবক-যুবতীদের মণ্ডলির সেবা কাজে এগিয়ে আসতে অনুপ্রেরণা দান করেন এবং নিজেদের জীবনকে সুন্দর করতে ও নিজস্ব কৃষ্টিকে টিকিয়ে রাখতে জোর তাগিদ দেন। দিনের শেষে পবিত্র আরাধনার মাধ্যমে ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। এই সেমিনারকে সুন্দর করার জন্য ধামইরহাট ওয়ার্ল্ড ভিশন আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেন।

বিগত ২৪ জুন ২০২২ খ্রি: শুক্রবার বেনীদুয়ার ধর্মপল্লীতে যিশুর পবিত্র হৃদয়ের পর্ব মহাসমারোহে পালন করা হয়। দীর্ঘ ৯ দিনব্যাপী যিশু পবিত্র হৃদয়ের নভেনা ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করে ধর্মপল্লীর পর্ব পালিত হয়। এতে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপ জের্ভাস রোজারিও, ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার ফাবিয়ান মারান্ডী, সহকারী পুরোহিত ও আরো কয়েকজন পুরোহিত, ২জন ডিকন এবং বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রায় ১১০০জন খ্রিস্টভক্ত অংশগ্রহণ করেন। খ্রিস্টযাগ শুরু হয় সকাল ৯:০০ মিনিটে। খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ধর্মপাল বিশপ জের্ভাস রোজারিও। তিনি তার উপদেশে যিশু পবিত্র হৃদয়ের ভালবাসার কথা তুলে ধরেন। কেননা, যিশুর হৃদয় থেকে প্রতিনিয়ত উৎসারিত হয় তাঁর ভক্ত বিশ্বাসীদের জন্য স্বর্গীয় ভালবাসা ও ক্ষমা। তাই যিশুর হৃদয়ের মতো আমাদের হৃদয়ও গড়ে তুলতে তিনি অনুপ্রেরণা দান করেন। বিকাল ২:০০ মিনিটে শুরু হয় সান্তাল, মুন্ডারী ও মাহালী সংস্কৃতির নাচের প্রতিযোগীতা। এই প্রতিযোগীতাকে সার্থক ও সুন্দর করার জন্য বিভিন্নভাবে বিভিন্নজন সহযোগিতা করে থাকেন। বিশেষ করে রাজশাহী হতে আদিবাসী সাংস্কৃতিক একাডেমী অর্থনৈতিক ভাবে সহযোগীতা করেন। প্রতিযোগীতার শেষে বিজয়ীদের হাতে আদিবাসী কৃষ্টির বাদ্যযন্ত্র, পোশাক, টাকা উপহার দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে প্রতিযোগী সকলকে সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে পাল-পুরোহিত ফাদার ফাবিয়ান মারান্ডী সান্তালী গানের বই তুলে দেন। পরিশেষে, পাল-পুরোহিত ফাদার ফাবিয়ান মারান্ডী সকলের সুন্দর সহযোগীতা ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষনা করেন।

বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার : ফাদার বাপ্পী এন. ক্রুশ

Please follow and like us: