গত ২৮ আগষ্ট ২০২২ খ্রিস্টবর্ষ ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লীর আওতাধীন ধর্মহাটা, কৈকুরী ও টেমা গ্রামের যুবক-যুবতীদের নিয়ে ধর্মহাটা গির্জায় “যুবাদের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জীবন গঠন, অংশগ্রহণকারী এক মণ্ডলিতে প্রেরণ দায়িত্ব” শিক্ষা ও সচেতনতামূলক একটি সেমিনার আয়োজন করা হয়। এই সেমিনারে ফ্যামিলি রোজারি মিনিস্ট্রি টিম ও ও ওয়ার্ল্ড ভিশন পবা, রাজশাহী সহযোগিতা করেন। প্রায় ১০০ জন অংশগ্রহণকারী, ৩ জন ফাদার ৪ জন সিস্টার নিয়ে সকাল ৯ টায় খ্রিস্টযাগের মধ্য দিয়ে এই সেমিনারটি শুরু হয়। খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন শ্রদ্ধেয় ফাদার সুরেশ পিউরীফিকেশন ও ফাদার শ্যামল গমেজ।

উপদেশ সহভাগিতায় ফাদার শ্যামল বলেন, ‘যুব- নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিক গঠন ব্যক্তিত্ববান ও নম্র মানুষ হতে সাহায্য করে। তাই প্রত্যেকজন যুবক-যুবতীর নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জীবনকে সুন্দর করার চেষ্টা করতে হবে। সিনোডাল চার্চে প্রেরণকর্মী হয়ে উঠতে হবে।’

শ্রদ্ধেয় ফাদার নবীন পিউস কস্তা মূল বিষয়ের উপর সহভাগিতা করেন। তিনি বলেন, যুবারা মণ্ডলির প্রাণ। ‘আমাদের মণ্ডলিতে যুবাদের অনেক কাজ করার আছে, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জীবন গঠন, অংশগ্রহণকারী এক মণ্ডলিতে প্রেরণ দায়িত্ব” বিষয়ে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। বর্তমান যুগে পরিবার সমাজ মণ্ডলিতেপরির্বতন আনতে যুবাদের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক জীবন আরও বেশি সুন্দর করতে হবে। মিলনধর্মী মণ্ডলিতে প্রেরণকাজে যুবাদের দায়িত্ব ও ভূমিকা আরও অনেক বেশি। বর্তমান পোপ মহোদয়ও যুবাদের সেই একই আহ্বান করেন।

ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লীর সহকারী পাল-পুরোহিত ফাদার সুরেশ পিউরীফিকেশন বলেন, ‘এই সেমিনারের মূল লক্ষ্য হল যুবাদের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক জীবন সর্ম্পকে সচেতন ও অংশগ্রহণকারী মণ্ডলিতেযুবাদের প্রেরণদায়িত্ব পালনে অনুপ্রেরণা দান। যুবাদেরকেই মÐলীতে ন্যায্যতা ও শান্তির বাণী প্রচারে ও খ্রিস্টের সাক্ষ্য বহন করতে যুবাদের প্রেরণকাজের দায়িত্ব নিতে হবে।’

ওয়ার্ল্ড ভিশন, পবা এর কর্মকর্তা মি: ডেভিড হেম্ব্রম বলেন, ‘যুবারা হল জাতির ভবিষ্যত। প্রত্যেকজন যুবক-যুবতীর জীবন অনেক মূল্যবান। তাই যুবাদের দৈহিক, মানবীয়, আধ্যাত্মিক ও নৈতিক গঠন খুবই প্রয়োজন। যুবাদের জীবনবোধের চেতনায় ও একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে।’ যুবাদের প্রার্থনা ও আধ্যাত্মিক জীবন সর্ম্পকে ফ্যামিলি রোজারি মিনিস্ট্রি টিমের পক্ষে সিস্টার ক্লাউদিয়া বলেন প্রার্থনা হল আমাদের জীবনে চলার পথে বড় শক্তি। ‘যুবক-যুবতী হিসেবেও আমরা কুমারী মারিয়ার কাছে সকল চাওয়া-পাওয়া নিবেদন করতে পারি আর মা আমাদের সবার প্রার্থনাই শোনেন ও পূরণ করেন। তিনি আমাদের বিপদের সহায়তাকারিনী, দুঃখ-কষ্টে শান্তনাদায়িনী। বর্তমান চ্যালেঞ্জিং বাস্তবতায় কুমারী মারিয়ার কাছে যেন আমরা আরও বেশি করে রোজারিমালা করি যেন আমরা নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জীবনকে সুন্দর করতে পারি।’

অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে আন্দ্রিয়াস টুডু বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ কারণ ধর্মপল্লীর ফাদারগণ আমাদের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ একটি সেমিনারের আয়োজন করেছেন। আমরা এই সেমিনারের মধ্য দিয়ে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি যা আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে, পরিবারে, সমাজে ও মণ্ডলিতে অংশগ্রহণ করতে আরও বেশি অনুপ্রাণিত করছে।’

পরিশেষে ফাদার সুরেশ পিউরীফিকেশন সেমিনারে অংশগ্রহণকারী ও ফাদার-সিস্টারদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। দুপুরের আহারের পর একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সেমিনারটি সমাপ্ত করা হয়।

বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার

 

Please follow and like us: