‘ক্ষুধার অবসান, খাদ্য নিরাপত্তা ও উন্নত পুষ্টিমান অর্জন এবং টেকসই কৃষির প্রসার ঘটানো’- এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে অদ্য ১২/১১/২০১৮ খ্রিস্টাব্দ তারিখে কারিতাস রাজশাহী অঞ্চল আয়োজন করে রাজশাহীর নানকিং দরবার হলে ‘ক্ষুদ্র কৃষকদের খাপ খাওয়ানো উপযোগী খামার ও জীববৈচিত্র্য নেটওয়ার্ক (সাফবিন) প্রকল্পের সূচনা কর্মশালা ২০১৮। উক্ত কর্মশালায় প্রকল্পের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম বাস্তবায়ন পরিকল্পনা উপস্থাপনা করা হয়। প্রকল্পের উদ্দেশ্যসমূহ হচ্ছে-
১. খামারের উৎপাদন ও আয় দ্বিগুণ করার মাধ্যমে ক্ষুদ্র কৃষকগণ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
২. সুষম খাদ্য গ্রহণের জন্য ক্ষুদ্র কৃষকদের দক্ষতা আছে এবং তা প্রয়োগ করে।
৩. ক্ষুদ্র কৃষকগণের ভূমির নিরাপদ মালিকানা এবং পানি, বীজ ও ক্ষুদ্র খামার পরিচালনা বিষয়ক জ্ঞানে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি।
৪. মাটির স্বাস্থ্য ও প্রতিবেশকে রক্ষা করে ক্ষুদ্র খামারবাড়ীগুলো জলবায়ু সহনশীল এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষম।
৫. বহুমুখী সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্বমূলক ক্ষুদ্র কৃষক উপযোগী নীতিমালা, গবেষণা, সম্প্রসারণ ও প্রযুক্তি উন্নয়ন বিষয়ে অবদান রাখছে।
৬. শহরের মধ্যবিত্ত শ্রেণির ভোক্তাগণ ক্ষুদ্র কৃষি খামারের উপকারীতা স্বীকার করে এবং তাদের মধ্যে ক্ষুদ্র কৃষি খামারে উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
কর্মশালার সভাপতি, কারিতাস বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট, পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ জের্ভাস রোজারিও বলেন, কারিতাস অতি-দরিদ্র, অবহেলিত, বঞ্চিত ও সমাজে বিশেষভাবে পিছিয়ে রয়েছে এমন মানুষের সকল প্রকার উন্নয়ন ও বৈষম্য হতে মুক্তির জন্য কাজ করছে। তিনি কৃষকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদানের গুরুত্বারোপসহ কারিতাস বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও বর্তমান কার্যক্রম তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি ড. আকরাম হোসেন চৌধুরী, চেয়ারম্যান, বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী এবং সাবেক সাংসদ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ বলেন, আমি কারিতাস বাংলাদেশের কাজে মুগ্ধ। এজন্য আমি কারিতাসের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকব। এছাড়া তিনি দেশ বিদেশের কৃষির বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন এবং আধুনিক জেনারেশনকে (নারী-পুরুষ) কৃষিতে সম্পৃক্ত করার আহবান জানান।
কর্মশালায় অন্যান্য বক্তারাও কারিতাস বাংলাদেশকে প্রকল্প বাস্তবায়নে সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করে বলেন কারিতাসও যেন আমাদের তাঁদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে। কর্মশালার সভাপতি, প্রধান অতিথি ও অন্যান্য নির্ধারিত অতিথিগণ নির্ধারিত ছয়টি পুষ্টির ঝুড়ি হাতে নিয়ে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে শপথনামা পাঠ করেন। প্রকল্পটি কারিতাস বাংলাদেশ রাজশাহী অঞ্চলের নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার জোয়ারী ইউনিয়নের আটটি গ্রাম, রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার হুজুরীপাড়া ইউনিয়নের আটটি গ্রাম এবং তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের নয়টি গ্রামে সরসরি ১,১২৫ জন উপকারভোগীর মাঝে কার্যক্রম বাস্তবায়ন শুরু করেছে।
উল্লেখ্য উক্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. আকরাম হোসেন চৌধুরী, চেয়ারম্যান, বরেন্দ্র বহুমূখী কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী এবং সভাপতিত্ব করেন পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ, জের্ভাস রোজারিও, ডিডি, এসটিডি এবং প্রেসিডেন্ট, কারিতাস বাংলাদেশ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মি. ফ্রান্সিস অতুল সরকার, নির্বাহী পরিচালক, কারিতাস বাংলাদেশ; ড. মো. মঞ্জুর হোসেন, প্রফেসর, উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগ, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়; এসএম মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাজশাহী এবং পরিচালক, আরএকেইউবি; মিস্ অম্রিতা রেজিনা রোজারিও, কান্ট্রি ডিরেক্টর, কারিতাস সুইজারল্যান্ড। এছাড়া কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আঞ্চলিক বিভিন্ন গবেষণাগারের বিজ্ঞানী, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় ও ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত শিক্ষক, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাগণ, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান এবং বিভিন্ন এনজিও কর্মকর্তাসহ প্রকল্পের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা প্রমুখ।