৯ দিনের নভেনা শেষে গত ২৫ জুন ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ উৎসবমুখর ভাবে আন্ধারকোঠা ধর্মপল্লীতে পালিত হয় নিত্য সাহায্যকারিনি মা মারিয়ার পর্ব এবং ১১৯ বছর উৎযাপন । রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের পুরাতন ধর্মপল্লীগুলোর মধ্যে আন্ধারকোঠা ধর্মপল্লী অন্যতম। ধর্মপল্লীটির অফিসিয়াল নাম হচ্ছে নিত্য সাহায্যকারিনি মা মারিয়ার ধর্মপল্লী।

পর্ব উপলক্ষে ২৫ তারিখ সকালে ধর্মপল্লীতে আসেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ধর্মপাল বিশপ জের্ভাস রোজারিও, এসটিডি, ডিডি । ধর্মপল্লীর প্রবেশদ্বার থেকে বিশপকে পাহাড়িয়া এবং সান্তালি কৃষ্টিতে বরণ করে নেওয়া হয় এবং এর পরেই শুরু হয় পর্ব দিনের মহা খ্রিস্টযাগ। পর্বের পাশাপাশি এই দিন ধর্মপল্লীতে ৪৮ জন হস্তার্পণ সংস্কার গ্রহণ করে।
খ্রিস্টযাগের উপদেশে বিশপ মহোদয় বলেন, শয়তানকে দূর করার একমাত্র উপায় হচ্ছে প্রার্থনা। তিনি তার উপদেশে মণ্ডলিতে মা মারিয়ার এবং পবিত্র আত্মার ভূমিকা ব্যাখ্যা করেন। তিনি আরো বলেন, মণ্ডলি আমাদের তাই মণ্ডলিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আমাদেরই দায়িত্ব; চিন্তা করতে হবে আমরাই মণ্ডলি আর আমরাই মণ্ডলি পরিচালনা করবো, আমরা গরীব থাকতে চাই আর তাই আমরা গরীব। আমরা মনের দিক থেকে গরীব কিন্তু আমরা কিন্তু প্রকৃত অর্থে গরীব না।
খ্রিস্টযাগের পর আন্ধারকোঠা ধর্মপল্লীর পালকীয় পরিষদের পক্ষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পাউলুস হাসদা। তিনি বলেন, অল্প সময়ের জন্য আমরা আমাদের মেষপালক কে পেয়েছি, কিন্তু আমরা সৌভাগ্যবান যে আমরা এই যজ্ঞে উপস্থিত হতে পেরেছি । এরপর ফিলমিনা বিশ্বাস আন্ধারকোঠা ধর্মপল্লীর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস পাঠ করেন।
রজনী বিশ্বাস তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলে, বিশপ মহোদয় খ্রিস্টযাগে যে উপদেশ দিয়েছেন তা থেকে আমি মণ্ডলি সম্পর্কে আরো ভালো ভাবে জেনেছি এবং অনেক অনুপ্রাণিত হয়েছি মণ্ডলির কাজে আরো সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে । 
ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত ফাদার প্রেমু রোজারিও বলেন, ধর্ম এবং কর্ম আলাদা বিষয় হলেও তারা একে অপরের সাথে জড়িত কারণ ঈশ্বরের কৃপা ছাড়া কোনো কর্মে সফলতা আসে না।  
ধর্মপল্লীর বিভিন্ন ব্লক থেকে বিভিন্ন ধরনের উপহার সামগ্রী বিশপকে তুলে দেন  খ্রিস্টভক্তগণ এবং পর্বীয় বিস্কুট বিতরণের মধ্যদিয়ে পর্বদিনের সমাপ্তি ঘটে।
পর্ব উপলক্ষে খ্রিস্টযাগের পর আন্ধারকোঠা বিসিএসএম এর আয়োজনে ৮ টিমের একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়, এতে রানার্সআপ হয় আন্ধারকোঠা জুনিয়র এবং বিজয়ী হয় আন্ধারকোঠা সিনিয়র এবং বিকেলে একটি বিচিত্রা অনুষ্ঠানের আয়োজনের মধ্য দিয়ে ফুটবল খেলার বিজয়ী এবং রানার্সআপ দলকে পুরস্কার তুলে দেন ফাদার প্রেমু রোজারিও এবং বলেন , আমি অনেক আনন্দিত যে যুবক যুবতীরা এই ধরনের আয়োজন করেছে আমি তাদের আয়োজনকে সাধুবাদ জানাই, আশা করি আগামী বছরেও আমরা আরো আনন্দের সাথে আমাদের ধর্মপল্লীর পর্ব পালন করতে পারবো । 
বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার : বেনেডিক্ট তুষার বিশ্বাস
Please follow and like us: