ভূমিকা : গত ১৯ আগস্ট সিবিসিবি সেন্টারে “এশিয়ার বিশপ সম্মিলনী এবং বাংলাদেশ মণ্ডলি একসাথে পথ চলা” বাংলাদেশ ক্যাথলিক বিশপ সম্মিলনী আয়োজিত সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সেমিনারে প্রতিটি ধর্মপ্রদেশের আর্চ বিশপদ্বয় ও সকল বিশপগণ এবং প্রতিটি ধর্মপ্রদেশ থেকে পাঁচ জন করে ধর্মপ্রদেশীয় প্রতিনিধি ফাদার, ব্রাদার, সিস্টার, কাটেখ্রিস্ট এবং খ্রিস্টভক্তগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বিভিন্ন ধর্মসংঘের সুপিরিয়র জেনারেলগণ এই সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।
সেমিনারের উদ্দেশ্যসমূহ ছিল: ১. এফএবিসির ভিশন, মিশন, কাঠামো এবং কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে পরিচিত করা। ২. এফএবিসির সাথে বাংলাদেশ মণ্ডলির এক সাথে পথ চলার উল্লেখযোগ্য ঘটনাসমূহ তুলে ধরা। ৩. আগামী দিনের বাস্তবতায় এফএবিসি এবং বাংলাদেশ মণ্ডলির একসাথে পথ চলার নতুন পথের সন্ধান করা। উক্ত সেমিনারে বরিশাল ধর্মপ্রদেশের পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ ইম্মানুয়েল কানন রোজারিও যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তা নিম্নে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হলো- (৩য় অংশ)
৭. ১। প্রথম প্লেনারী এসেম্ব্লী অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২২-২৭ এপ্রিল ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে, তাইপেই, তাইওয়ানে। মূলভাব ছিল: “বর্তমান এশিয়ায় মঙ্গলবাণী প্রচার/ঘোষণা ”। এফএবিসি প্রকৃতপক্ষে এমন একটি স্থানীয় মণ্ডলি গড়ে তুলতে চেয়েছে যা স্থানীয় জনগণের মধ্যে দেহধারী, আদিবাসী জনগোষ্ঠির এবং সংস্কৃত্যায়িত, এবং যা জীবন্ত ঐতিহ্য, কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও ধর্মসমূহের সাথে চলমান ও প্রেমপূর্ণ সংলাপে নিয়োজিত (# ১ তাইপেই)। এই প্রথম এসেম্ব্লীতেই ত্রিমূখী সংলাপের ধারণাটি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়। মঙ্গলবাণী প্রচার ও নতুন ভাবধারায় মণ্ডলি হওয়ার উত্তম মাধ্যম হলো এই ত্রিমূখী সংলাপ। “কেননা, এশিয়াতে খ্রিস্টমণ্ডলির প্রকৃত পরিচয় আবিষ্কার করতে হলে তাকে অবশ্যই এই ত্রিমূখী সংলাপে নিয়োজিত থাকতে হবে: এশিয়ার জনগণের সাথে, বিশেষভাবে দীন-দরিদ্র জনগণের সাথে, বিভিন্ন কৃষ্টি-সংস্কৃতির সাথে এবং বিভিন্ন ধর্মের মানুষের সাথে সংলাপ” ফা: জেম্স ক্রুগার, এমএম। মঙ্গলসমাচারের মূল্যবোধ অনুসারে ন্যায্যতা, পবিত্রতা, প্রকৃত মানব উন্নয়ন ও মুক্তি অন্বেষণই হলো এশিয়াতে সামগ্রিকভাবে মঙ্গলবাণী প্রচারকে সার্থক করে তুলে। সফলভাবে মঙ্গলবাণী প্রচারের জন্য প্রয়োজন ধ্যান-প্রার্থনা, নিরুপনের সক্ষ্যমতা, প্রেরণকর্মে গঠনের নবায়ন, খাঁটি এশিয়ান ঐশতাত্বিক অনুধ্যান এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর উপযুক্ত ব্যবহার।
৭. ২। দ্বিতীয় প্লেনারী এসেম্ব্লী অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯-২৫ নভেম্বর ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে, কলিকাতা, ইন্ডিয়া। মূলভাব ছিল: “প্রার্থনা: এশিয়ার মাণ্ডলিক জীবন ”। বিশপগণ এশিয়াতে ক্রমবর্ধমান জাগতিকতা, বস্তুবাদ, ভোগবাদ, ইত্যাদি চ্যালেঞ্জগুলো অভিজ্ঞতা করেছেন। এই প্রেক্ষাপটে বিশপগণ বিশেষভাবে তরুণদের মাঝে ধ্যান ও অভ্যন্তরীণতার সমৃদ্ধিগুলো বর্তমান সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তিতে প্রয়োগের মাধ্যমে হস্তান্তর করতে চেয়েছেন। এই এসেম্ব্লীতে খ্রিস্টীয় প্রার্থনার উপর গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, “এশিয়াতে খ্রিস্টমণ্ডলির বিকাশের কেন্দ্রে রয়েছে খ্রিস্টীয় প্রার্থনা যা মণ্ডলিকে একটি গভীর প্রার্থনাশীল সমাজের দিকে নিয়ে যাচ্ছে যার চিন্তা-ধ্যান সন্নিবেশীত রয়েছে আমাদের সময় ও কৃষ্টি-সংস্কৃতির প্রেক্ষাপটে” (# ২, ১৯৭৮)। খ্রিস্টীয় প্রার্থনার মৌলিক উপাদানগুলোর হলো: পবিত্র ত্রিত্ব ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা, পবিত্র আত্মার শক্তিতে খ্রিস্ট যিশুর মধ্য দিয়ে পিতার হৃদয়ের সাথে আমাদের মিলন। খ্রিস্ট যিশুর সাথে এবং তাঁরই মধ্য দিয়ে প্রার্থনারত একটি সমাজের প্রার্থনা চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছায় পবিত্র খ্রিস্টপ্রসাদের মধ্যে যা হলো আত্মদান ও আত্মোৎসর্গের একটি প্রার্থনা। এই প্রার্থনার ফল ছড়িয়ে পড়ে দীন-দরিদ্র, অসুস্থ, অসহায় এবং ক্ষুদ্রতম ভাই-বোনদের মধ্যে। একটি সত্যিকার প্রার্থনাশীল সমাজ হওয়ার জন্য আমাদের দৈনন্দির জীবনে আমাদের খ্রিস্টীয় প্রার্থনার হৃদয়কে আরও গভীর, আরও তীব্র, পুনর্জীবিত ও পুননবীকৃত করা প্রয়োজন। প্রার্থনাই এশিয়ার জনগণের জন্য মঙ্গলবাণী প্রচারের, উন্নয়ন ও মুক্তি কাজে এবং খ্রিস্টীয় জীবন ও সাক্ষ্যদানে শক্তি। খ্রিস্টান সমাজের প্রার্থনা জীবনেন নবায়নের জন্য প্রয়োজন: সংস্কৃত্যায়ন, আন্ত:ধর্মীয় সংলাপ এবং যাজক ও সন্ন্যাস জীবন প্রার্থীদেরকে প্রার্থনায় গঠন দেওয়া একান্ত আবশ্যক। সেই সাথে সেবাকর্মের নবায়নের জন্য এশিয়াতে ক্ষুদ্র খ্রিস্টীয় সমাজ গঠন কার্যক্রমে অগ্রণী ভূমিকা রাখা প্রয়োজন।
৭. ৩। তৃতীয় প্লেনারী এসেম্ব্লী অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০-২৭ অক্টোবর ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে, ব্যংকক, থাইল্যাণ্ড । মূলভাব ছিল: “খ্রিস্টমণ্ডলি : এশিয়াতে খ্রিস্টবিশ্বাসের একটি মিলনসমাজ ”। এফএবিসি এর আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের ঠিক দশ বছর পরে এই তৃতীয় প্লেনারী অনুষ্ঠিত হলো। এশিয়াতে বিরাজমান চ্যালেঞ্জগুলোর কথা স্মরণ করে বিশপগণ অত্যন্ত গুরুত্বের সাথেই এই ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন যে, মণ্ডলি হলো বিশ্বাসীদের মিলন সমাজ। ঐশতাত্বিক অনুধ্যানের ফলশ্রুতিতে বলা হয় যে খ্রিস্টবিশ্বাসীদের এই মিলন পবিত্র ত্রিত্ব ঈশ্বরের মিলনেই স্থিত। বিশ্বাসীদের এই মিলন সমাজের উদ্দেশ্য হলো এশিয়াতে দৈনন্দিন জীবন বাস্তবতায় মঙ্গলসমাচারে শিষ্যত্ব যা পবিত্র আত্মার দ্বারা পরিচালিত এবং মণ্ডলির সাক্রামেন্তসমূহ দ্বারা পরিপুষ্ট। খ্রিস্ট সমাজই হলো প্রকৃত অংশগ্রহণকারী ও সহ-দায়িত্বশীল। তাই তারাই সংলাপ ও সেবার মধ্য দিয়ে অন্য ধর্মের ভাই-বোনদের কাছে পৌছতে পারে। মিলন সমাজ হিসেবে মণ্ডলি তার মিলন ও প্রেরণকাজ, অন্যান্য সমাজের সাথে সম্পর্কে, তার নিজ জীবন ও সত্ত্বায় বাস্তব করে তুলে। এই বিশ্বাসের মিলনই হলো এশিয়াতে অন্যান্য সমাজের মধ্যে মণ্ডলির একটি উল্যেখযোগ্য স্বতন্ত্র চিহ্ন। তাই স্থানীয় মণ্ডলি জনসমাবেশে সাক্ষ্যদান করে এবং প্রেরণকাজে সামনের দিকে এগিয়ে চলে। “এশিয়াতে খ্রিস্টমণ্ডলিকে বিশ্বাসীদের মিলন সমাজে সক্রিয় পবিত্র আত্মার কন্ঠস্বর অবশ্যই শুনতে হবে, যে মিলন সমাজ তাদের বিশ্বাস জীবনে যাপন ও অভিজ্ঞতা করে, তাদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ইতিহাসে সহভাগিতা ও উৎযাপন করে। মঙ্গলসমাচারের মিলন সমাজগুলোকে অবশ্যই এই সমস্ত সার্বজনীন তীর্থযাত্রার সহযাত্রী হতে হবে”। এফএবিসি নিজেদের বিফলতাগুলো স্বীকারের পাশাপাশি এশিয় মণ্ডলির জন্য মৌলিক দর্শন ও ভবিষ্যাৎ দিক-নির্দেশনা নির্ণয় করেছেন। এশিয় মণ্ডলির দর্শন হলো: নতুন ভাবধারায় মণ্ডলি হওয়া, আর্থাৎ এশিয় মণ্ডলি হওয়া যা বিশ্বাস ও প্রার্থনার মিলন সমাজ, কথায় ও কাজে প্রকৃত শিষ্য, অংশগ্রহণকারী, দীন-দরিদ্র, যুবাদের, প্রেরণধর্মী, সামাজিক রুপান্তরে নিয়োজিত এবং এশিয়ার জনগণের সাথে ঈশ্বরের রাজ্যের সহযাত্রিক মণ্ডলি। ত্রিমূখী সংলাপের মাধ্যমে নব ভাবধায়ায মঙ্গলবাণীর প্রচারই মণ্ডলির প্রেরণকাজ।
৭. ৪। চতুর্থ প্লেনারী এসেম্ব্লী অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৬-২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে, টোকিও, জাপান । মূলভাব ছিল: “এশিয়ার খ্রিস্টমণ্ডলিতে ও জগতে খ্রিস্টভক্তদের আহ্বান ও প্রেরণকাজ”। ইতিহাসে প্রতীয়মান হয় যে কোন কোন দেশে খ্রিস্টবিশ্বাসীগণ খ্রিস্টবিশ্বাস জীবিত রেখেছে। তাই মণ্ডলিতে ভক্তজনগণের অংশগ্রহণ বিষয়ক এই এসেম্ব্লীতে ভক্তজনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের সাক্ষ্য বহন করা হয়েছে। অনেক প্রতিকুলতার মাঝেও যুবসমাজ, খ্রিস্টভক্ত নারী-পুরুষ ও পরিবার এশিয়ার মণ্ডলিতে শিক্ষাক্ষেত্রে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, রাজনীতি ও ব্যবসা বানিজ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে। কেননা, দীক্ষাস্নানের ঐশকৃপাগুণে আমরা সকলেই খ্রিস্টের রাজকীয়, যাজকীয় ও প্রাবক্তিক ভূমিকা পালনের দায়িত্ব লাভ করেছি। তাই মঙ্গলবাণী প্রচারে এবং সামাজিক রুপান্তরের লক্ষ্যে খ্রিস্টভক্ত, সন্ন্যাসব্রতী ও যাজকসমাজ সবাইকেই একত্রে কাজ করে যেতে হবে। মণ্ডলির জন্য কাঠামোগত নবায়ন আনতে হবে যাতে সকলের মধ্যে মিলন, সহযোগিতা ও সহ-দায়িত্ববোধ বৃদ্ধি পায়। এশিয় মণ্ডলিতে ভক্তজনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করে বিশপগণ বলেছেন, “মানব জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনয়নের জন্য মণ্ডলিতে ভক্তজনগণের অনেক প্রয়োজন রয়েছে। তাদেরকে তাই আনন্দপূর্ণ ও সক্রিয় সহকর্মী হতে হবে”। এই জন্য প্রয়োজন পালকীয় কর্মপরিকল্পনা যার মধ্যে থাকনে খ্রিস্টভক্তদের বিভিন্ন ঐশানুগ্রহ অনুসারে সেবাকাজের ক্ষেত্র সৃষ্টি করা, খ্রিস্টভক্ত, সন্ন্যাসব্রতী ও যাজক সমাজের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করা, খ্রিস্টভক্তদের জন্য গঠন কার্যক্রম গ্রহন করা এবং খ্রিস্টভক্তদের জন্য খ্রিস্টকেন্দ্রীক, মণ্ডলিতাত্বক, বাইবেলীয় ও সাক্রামেন্তীয় আধ্যাত্মিকতা নিরুপন করা। তাহলেই এশিয়ার মণ্ডলি পরিপক্ক ও সকলের জন্যই আশার একটি চিহ্ন হয়ে উঠবে।
৭. ৫। পঞ্চম প্লেনারী এসেম্ব্লী অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৭-২৭ জুলাই ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে, ভেন্ডুং, ইন্দোনেশিয়া। মূলভাব ছিল: “১৯৯০ দশকে এশিয়ার মণ্ডলির জন্য উদীয়মান চ্যালেঞ্জসমূহ: সাড়া দেওয়ার আহ্বান”। এশিয়াতে রয়েছে অনেক চ্যালেঞ্জ এবং অনেক আশার চিহ্ন। একদিকে, সমাজে, দেশে এবং বিভিন্ন মহাদেশে দেখা যাচ্ছে অনেক বৈষয়িক উন্নয়ন এবং ইতিবাচক পরিবর্তন। এগুলো এশিয়ার সমাজগুলোকে প্রভাবিত করছে। অন্যদিকে, দেখা যায় অন্যায্যতা, সীমাহীন দরিদ্রতা, প্রাকৃতিক সম্পদের প্রতি সকলের প্রবেশাধিকারের অভাব, প্রকৃতি ধ্বংস, নারীদের প্রতি বৈষম্য, অনৈতিক কার্যকলাপ, দরিদ্রদের প্রতি শোষণ নিপীড়ন, ধর্ম-সমাজ ও শ্রেণীগত বৈষম্য। এসবের মধ্যেও আশার বিষয় হলো মানুষের মধ্যে একটি নতুন মচেতনতাবোধ জাগ্রত হচ্ছে। গণতন্ত্র, অংশগ্রহণ, মানবাধিকার, মানুষের মধ্যে সংহতি ও সম্প্রীতির বন্ধন সুদৃড় করার জন্য আন্ত:মাণ্ডলিক ও আন্ত:ধর্মীয় সংলাপের চেতনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সৃষ্টির ঐশতত্ব ও আধ্যাত্মিকতা গড়ে উঠছে। এসবের মধ্যেই প্রতীয়মান হয় যে, চ্যালেঞ্জের মধ্যেও পবিত্র আত্মা আশা সঞ্চার করছে। সমসাময়িক এশিয়াতে মঙ্গলবাণী প্রচারে মণ্ডলির প্রেরণকাজ সুন্দরভাবে চালিয়ে নেওয়ার জন্য সর্বাগ্রে যা প্রয়োজন তা হলো প্রেরণকর্মের ধারণা নবায়ন করা যা শুরু হবে যিশুর প্রতি আমাদের বিশ্বাসের নবায়ণের মধ্য দিয়ে। যিশুকে প্রচারই হলো মঙ্গলবাণী ঘোষণার কেন্দ্র এবং তা করতে হবে ফলপ্রসূ কাজের মধ্য দিয়ে। একাজে খ্রিস্টক্তদের সম্পৃক্ত করার জন্য তাদের জন্য উপযুক্ত শিক্ষা ও গঠনের ব্যবস্থা করা। এশিয়াতে মণ্ডলিকে হতে হবে নতুন প্রক্রিয়ায় বা ভাবধায়ায় মণ্ডলি, অর্থাৎ উন্নত জীবনের জন্যে সংগ্রাতে মণ্ডলি হবে এশিয়ার জনগণের সঙ্গী ও পার্টনার। প্রভুর ও মানবতার সেবক মণ্ডলি। এই নতুন প্রক্রিয়ায় মণ্ডলি হওয়ার জন্যে প্রয়োজন একটি গভীর আধ্যাত্মিকতা, অর্থাৎ খ্রিস্টে স্থিত হওয়ার এবং মঙ্গলসমাচারের শিক্ষা ও মূল্যবোধ দ্বারা পরিচালিত হওয়ার আধ্যাত্মিকতা। নতুন ভাবধারায় মণ্ডলি হওয়া মঙ্গলবাণী প্রচারের একটি সামগ্রিক ও অখন্ড পদ্ধতি অবলম্বনের আহ্বান জানায়। এই সমাবেশকে বলা যেতে পারে একটি পরিবর্তনের সময় / যুগের আগমনের সময়। “সম্ভবত এই পঞ্চম সমাবেশই এশিয়াতে প্রেরণকাজে ও মঙ্গলবাণী প্রচারে এফএবিসি এর দৃষ্টিভঙ্গিকে বাস্তবে রূপদান করে। পূর্ববর্তী সকল সমাবেশে গৃহীত উদ্বেগগুলোর সারসংক্ষেপ করে এবং সম্পূর্ণরুপে একটি নতুন ভাবধারার মণ্ডলি হওয়ার আহ্বান জানায়” – এডমণ্ড ছিয়া।