গত ১০ নভেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, রোজ শুক্রবার মারিয়াবাদ ধর্মপল্লী, বোর্ণীতে পারিবারিক প্রার্থনা বিষয়ক সেমিনার ও অনুষ্ঠান করা হয়। রাজশাহী ধর্মপ্রদেশীয় রোজারী মিনিস্ট্রি’র পক্ষ থেকে ও ধর্মপল্লীর উদ্যোগে মা মারিয়া সংঘ ও বিভিন্ন গ্রামের মায়েদের নিয়ে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। মারিয়া সংঘ ও বিভিন্ন গ্রাম থেকে অংশগ্রহণকারী মায়েদের সংখ্যা ছিল ২৩৭ জন, স্বেচ্ছাসেবক ১০ জন , ফাদার ৩ জন এবং সিস্টার ৬ জনসহ মোট অংশগ্রহণকারী ছিল ২৫৬ জন।

দিনের কার্যক্রম শুরু হয় পবিত্র খ্রিস্টযাগের মধ্য দিয়ে । সহার্পিত খ্রিস্টযাগে পৌরহিত্য করেন ফাদার যোহন মিন্টু রায়। খ্রিস্টযাগে আরও উপস্থিত ছিলেন ফ্যামিলি রোজারী মিনিস্ট্রি’র পরিচালক ফাদার সুরেশ পিউরীফিকেশন ও সহকারী পুরোহিত ফাদার অনিল মারাণ্ডী। খ্রিস্টযাগের উপদেশে ফাদার, “মুক্তি পরিকল্পনায় মা মারিয়ার ভূমিকা ও জপমালা প্রার্থনার গুরুত্ব” তুলে ধরেন।

খ্রিস্টযাগের পর সকাল ১০:১৫ ঘটিকায় ছিল আসন গ্রহণ ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। শুভেচ্ছা বক্তব্যে পাল-পুরোহিত ফাদার সুশান্ত ডি’ কস্তার পক্ষে সহকারী পুরোহিত ফাদার যোহন মিন্টু রায় সকলকে শুভেচ্ছা-স্বাগতম জানান এবং দিনের তাৎপর্য তুলে ধরে দিনটিকে সার্থক-সুন্দর করতে সকলকে আহ্বান জানান।

ধর্মপল্লীর পালকীয় পরিষদের সেক্রেটারী মি: মিলন মার্টিন রড্রিক্স শুভেচ্ছা বক্তব্যে জপমালা প্রার্থনার গুরুত্ব তুলে ধরে দিনের কর্মসূচীর সাফল্য কামনা করেন।

মূলসুর : এসো জপমালা করি-কুমারী মারিয়ার আদর্শে জীবন গড়ি-এ মূলসুরের বিষয়ে সহভাগিতা করেন রোজারী মিনিস্ট্রি-এর রাজশাহী ধর্মপ্রদেশীয় পরিচালক ফাদার সুরেশ পিউরীফিকশেন। তিনি বাস্তব উদাহরণ দিয়ে জপমালা প্রার্থনা করতে সকলকে অনুপ্রাণিত করেন।

এরপর বাগবাচ্চা গ্রামের দল শিশু মারিয়া এবং শক্তিমতি কুমারী মারিয়া-কে নিয়ে দুটি চমৎকার জারিগান পরিবেশন করেন।

জলযোগের পর ফাদার যোহন মিন্টু রায় নিজ জীবন অভিজ্ঞতায় জপমালা প্রার্থনা, মা মারিয়ার দর্শন দান এবং জীবন সাক্ষ্য তুলে ধরেন। সিস্টার ক্লাউদিয়া কিস্পট্টা ও সিস্টার মারিয়া কিস্কু নিজ জীবন অভিজ্ঞতায় জপমালা প্রার্থনা ও জীবন সাক্ষ্য তুলে ধরেন।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মানগাছার আইরিন ডি কস্তা, সংগ্রামপুরের পরশী কস্তা, ছিটকীগাড়ী গ্রামের হেলন কস্তা তাদের জীবন ও পরিবারে রোজারীমালা প্রার্থনার গুরুত্ব ও মা মারিয়ার দয়া-আশির্বাদের ঘটনা তুলে ধরেন।

অংশকারী একজন বৃদ্ধা মা কারোলিনা কস্তা বলেন, “আমি অসুস্থ্য তাই গির্জায় আসতে পারি না। অনেক দিন পর আজকে সেমিনারে এসে আমার অনেক ভালো লাগছে। আমি মা মারিয়ার কাছে প্রার্থনা করছি ও প্রার্থনা করে যাবো কারণ আমার প্রার্থনা করতে ভালো লাগে।”

বাগবাচ্চা গ্রামের অংশগ্রহণকারী সাগরী গমেজ বলেন, “সেমিনার ও আলোচনা করে, মা মারিয়ার গান করে আমরা সত্যিই অনুপ্রাণিত হয়েছি। তবে আজ থেকে আমরা সকলে যেন পরিবারে পরিবারে জপমালা প্রার্থনা করি-আসুন এই প্রতিজ্ঞা নিয়ে বাড়ি ফিরে যাই।”

ফাদার যোহন মিন্টু রায় পাল-পুরোহিতের পক্ষে পারিবারিক প্রার্থনা বিষয়ক সেমিনার ও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। মধ্যাহ্ন ভোজের মধ্য দিয়ে উক্ত দিনের সেমিনার সমাপ্ত হয়।

রিপোর্টার : ফাদার যোহন মিন্টু রায় ও ফাদার অনিল মারাণ্ডী, বোর্ণী ধর্মপল্লী।

Please follow and like us: