“আমি তোমাদের সত্যি সত্যি বলছি,দরজা দিয়ে মেষের ঘেরিতে না ঢুকে যে লোক অন্য কোন পথ বেয়ে আসে, সে লোক চোর কিংবা দস্যু। কিন্তু দরজা দিয়েই যে ভেতরে ঢোকে সেই মেষগুলির পালক।”(যোহন ১০:১-২)
গত ২৬ শে এপ্রিল রোজ শুক্রবার মহাসমারোহে ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লীর প্রতিপালক উত্তম মেষপালক এর পর্ব পালন করা হয়। একইদিনে ধর্মপল্লীর ১৩১ জন ছেলে- মেয়েকে হস্তার্পণ সাক্রামেন্ত প্রদান করা হয়।কয়েক মাস আগে থেকে হস্তার্পণ প্রার্থীদের প্রস্তুতিস্বরূপ ধর্মশিক্ষা ক্লাস প্রদান করা হয়। দীর্ঘ প্রস্তুতির পর ২৬ শে এপ্রিল হস্তার্পণসাক্রামেন্ত গ্রহণের দিন সকাল থেকেই ছেলে- মেয়েদের কলকাকলীতে মুখর ছিল ধর্মপল্লী।
সকাল ৯.০০ টায় পর্বীয় খ্রিস্টযাগ অনুষ্ঠিত হয়।পর্বীয় খ্রিস্টযাগে প্রধান পৌরোহিত্য করেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ জের্ভাস রোজারিও। এছাড়াও সহার্পিত খ্রিস্টযাগে অংশ নেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ভিকার জেনারেল ও ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার ফাবিয়ান মারান্ডীসহ আরো ৫ জন যাজক। উল্লেখ্য পর্বীয় খ্রিস্টযাগে বিভিন্ন সম্প্রাদয়ের সিস্টার ও খ্রিস্টভক্তসহ প্রায় ৭০০ জন উপস্থিত ছিলেন।
পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ মহোদয় তার উপদেশ বাণীতে বলেন, পবিত্র বাইবেলে যিশু বলেছেন,’আমিই প্রকৃত মেষপালক। আমি আমার মেষদের চিনি আর তারও আমার পিছু পিছু চলে’। ‘ অর্থ্যাৎ যিশুই উত্তম মেষপালক। আমি আজকে অনেক খুশি কারণ আজ আমাদের এই ধর্মপল্লীর প্রতিপালক উত্তম মেষপালক এর পর্ব পালন করছি। যিশু খ্রিস্ট তার প্রত্যেকজন মেষ অর্থ্যাৎ আমাদের সবাইকে চিনেন ও জানেন। যিশু স্বর্গারোহণের পূর্বে আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, আমাদের অনাথ অবস্থায় রেখে যাবেন না। আর তাই পবিত্র আত্মাকে প্রেরণ করেছিলেন। সেই পবিত্র আত্মাকে পেয়ে শিষ্যরা সাহসী হয়ে উঠেছিল এবং ইহুদিদের বিরুদ্ধে কথা বলেছিল। ঠিক তেমনি আজকে যারা হস্তার্পণ সাক্রামেন্ত গ্রহণ করবে আজ থেকে তোমরা হয়ে উঠবে পরিপূর্ণ খ্রিস্টান। পবিত্র আত্মাকে লাভ করে তোমরা হয়ে উঠবে বলশালী। তোমাদের উচিত পবিত্র আত্মার প্রেরণায় পথ চলা ও সেই ভাবে জীবন-যাপন করা। তোমাদের সবাইকে অভিনন্দন।
উপদেশের পর বিশপ মহোদয় ১৩১ জন হস্তার্পণ প্রার্থীকে তৈললেপণের মাধ্যমে হস্তার্পণ সাক্রামেন্ত প্রদান করেন।
উত্তম মেষপালক ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত শ্রদ্ধেয় ফাদার ফাবিয়ান মারান্ডী সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘সকলকে পর্বীয় শুভেচ্ছা জানাই। আজ আমরা অত্যন্ত আনন্দের সাথে আমাদের ধর্মপল্লীর পর্ব ও হস্তার্পণ অনুষ্ঠান পালন করেছি। তাই আমি ধন্যবাদ জানাই পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ মহোদয়কে কারণ তিনি শত ব্যস্ততার মাঝেও আমাদের সময় দিয়েছেন।একইসাথে যারা হস্তার্পণ প্রার্থীদের ধর্মশিক্ষা দিয়েছেন এবং প্রস্তুত করেছেন আপনাদেরও ধন্যবাদ জানাই। তোমরা যারা হস্তার্পণ সাক্রামেন্ত গ্রহণ করেছো তোমাদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আবারো সবাইকে ধর্মপল্লীর পর্ব উপলক্ষে অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। সবাইকে ধন্যবাদ।
হস্তার্পণ গ্রহণকারী একজন তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন,” আজ হস্তার্পণ গ্রহণ করে আমার অনেক ভালো লাগছে কারণ আমি পবিত্র আত্মাকে লাভ করেছি।
পরিশেষে বিশপ মহোদয় ও ফাদারগণ হস্তার্পণ প্রার্থীদের হাতে স্মৃতিচিহ্ন কার্ড ও উপহারসামগ্রী প্রদান করেন ও ফটোসেশনে অংশ নেন।
বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার : ফাদার শ্যামল গমেজ