” জপমালা হল একটা সিঁড়ির মত সেখানে মা মারিয়া আমাদের ধীরে ধীরে যিশুর একেবারে বুকের কাছে নিয়ে যায়, যেন যিশুর স্পর্শ ও ভালবাসার উষ্ণতায় আমরা এক নতুন সৃষ্টি হয়ে উঠি।”
গত ৩১ শে মে  মা মারীয়ার মাসের সমাপনী ও সাক্ষাৎকার পর্ব উপলক্ষে মুশরইল সাধু পিতরের ধর্মপল্লীতে বিশেষ রোজারিমালা প্রার্থনা ও খ্রিস্টযাগ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ধর্মপল্লীর ফাদার, সিস্টার ও সেমিনারিয়ানবৃন্দসহ প্রায় ২০০ জন খ্রিস্ট ভক্ত অংশগ্রহণ করেন।
মা- মারিয়ার মূর্তি সহযোগে আলোক শোভাযাত্রা ও রোজারিমালা প্রার্থনার মাধ্যমে দিনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। রোজারিমালা ও আলোক শোভাযাত্রা শেষে বিশেষ খ্রিস্টযাগ  উৎসর্গ করেন শ্রদ্ধেয় ফাদার  সুনীল দানিয়েল রোজারিও এবং তাকে সহায়তা করেন পাল পুরোহিত ফাদার প্রশান্ত আইন্দ।
খ্রিস্টযাগের উপদেশে ফাদার সুনীল দানিয়েল রোজারিও বলেন,” বছরে ১২ মাসের মধে পূর্নাঙ্গ একটি মাস মা মারিয়ার উদ্দেশ্য নিবেদন করা হয়। আর একটি মাস ধরে আমরা প্রার্থনা করেছি প্রতিটি পরিবারে ও পাড়ায় পাড়ায়। আজকে তার সমাপনী খ্রিস্টযাগ। মা-মারিয়াকে বিভিন্ন নামে সম্মোধন করা হয় যেমন: ঈশ্বরজননী,মানবতার মা,পরিবারের রানী ইত্যাদি। মা- মারিয়ার প্রতি ভক্তি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের ঐতিহ্য অনেক পুরানো ও সমৃদ্ধ। প্রাচীনকালে গ্রীকরা বসন্তকালে পোড়া দেবীর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভক্তি প্রদর্শন করত। পরে খ্রিস্টান ধর্মের নেতারা পোড়া দেবীর পরিবর্তে মা- মারিয়াকে স্থাপন করে ভক্তি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে শুরু করে। অষ্টাদশ শতাব্দীতে জেজুইট ফাদারগণ মে মাসে একটি বেদী তৈরি করে মা – মারিয়াকে রাখত আর ভক্তি প্রদর্শন করত। আরো অনেক ইতিহাস রয়েছে যার কারণে মা মারীয়ার প্রতি আমাদের এত শ্রদ্ধা ও ভক্তি। মা মারীয়ার অনেক গুণাবলীর মধ্যে তিনটি অন্যতম গুণ হলো নম্রতা, বাধ্যতা ও অনড় বিশ্বাস। আজ আমরা একইসাথে পালন করছি সাক্ষাৎকার পর্ব। আর  সাক্ষাৎকার পর্বটি গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ সাক্ষাৎকার পর্বের মূল শিক্ষাই হলো শুভ সংবাদ প্রচার করা।”
খ্রিস্টযাগের শেষে পালপুরোহিত ফাদার প্রশান্ত আইন্দ বলেন, ” আজ মা মারিয়ার মাসের সমাপনী ও সাক্ষাৎকার পর্ব উপলক্ষে খ্রিস্টযাগ ও উপদেশ বানীর জন্য ফাদার সুনীল দানিয়েলকে ধন্যবাদ জানাই। আপনারা যারা এ বিশেষ খ্রিস্টযাগে অংশ নিয়েছেন এবং গ্রামে প্রার্থনা করেছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ। শুধু মে মাসে নয় আসুন প্রতিদিন পরিবারে রোজারিমালা প্রার্থনা করি।”
পরিশেষে প্রতিটি পরিবার থেকে আনা মূর্তি ও বিস্কুট আশীর্বাদ ও বিতরণ করার মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে।
বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার : ডানিয়েল লর্ড রোজারিও
Please follow and like us: