ডানিয়েল লর্ড রোজারিও
একজন যুবক-যুবতীর জীবনে মা মারীয়ার ভূমিকা অপরিসীম। কারণ আমাদের জাগতিক মায়েদের মতোই কুমারী মারীয়া আমাদের স্বর্গীয় স্নেহে আগলে রাখেন। মা মারীয়া এমন একজন ব্যক্তি যিনি ইতিহাসের সময় ও ভৌগলিক স্থানকে অতিক্রম করেছেন। তিনি এখনো অগণিত মানুষকে অনুপ্রাণিত করছেন। মা মারীয়াকে নিয়ে এ পর্যন্ত অনেক কবিতা, গান , প্রবন্ধ ও বই রচনা হয়েছে। শিল্পীগণ তাঁকে নিয়ে অনেক ছবি এঁকেছেন। অনেক ব্যক্তি তার নাম ধারণ করেছেন। বিভিন্ন জায়গায় মা মারীয়ার নামে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মিত হয়েছে।কুমারী মারীয়া হলেন সমগ্র বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ নারী।
কুমারী মারীয়ার সংক্ষিপ্ত পরিচয়
কুমারী মারীয়া ছিলেন গালিলিয়া প্রদেশের নাজারেথ গ্রামের এক কৃষক বালা। তিনি চৌদ্দ বছর বয়সেই ঈশ্বর পুত্রের জননী হবার আহ্বান লাভ করেন । কুমারী মারীয়ার পিতা-মাতা সমন্ধে পবিত্র বাইবেলে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। তবে মণ্ডলী কর্তক অস্বীকৃত সাধু জেমসের মঙ্গলসমাচার অনুসারে মারীয়ার পিতার নাম যোয়াকিম এবং মাতার নাম আন্না বা হান্না বলে উল্লেখ করা হয়। মারীয়ার পিতা মাতা খুব ঈশ্বর ভীরু ও ধার্মিক ছিলেন। তিনি ছিলেন পিতামাতার বৃদ্ধ বয়সের একমাত্র সন্তান।
শৈশবে মারীয়ার পিতা-মাতা তাকে মন্দিরে উৎসর্গ করেন। মারীয়া এক সাধারণ পরিবারের মানুষ হলেও তিনি ছিলেন এক সুন্দর চরিত্রের মানুষ। মারীয়া ছিলেন গভীর বিশ্বাসী, ধ্যানময়ী ও প্রার্থনাশীল নারী। তাই অনেক ছবি বা মূর্তিতে তাঁকে প্রার্থনাশীল অবস্থায় দেখা যায়। মারীয়া ছিলেন বাধ্য ও অনুগত নারী, যা তিনি শিখেছিলেন তাঁর পিতা-মাতার কাছ থেকে। কুমারী মারীয়া এক আলোকিত নারী , যিনি তাঁর জীবনাদর্শ দিয়ে অগণিত মানুষকে আলোকিত করে চলেছেন ।
বর্তমান পরিস্থিতি ও অশান্তির কারণ
ইস্রায়েল-ফিলিস্তিন ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের উত্তাপ আজ সমস্ত পৃথিবীতে । গ্রামের যে চাষী যুদ্ধের কথা হয়তো জানেই না তাকেও যুদ্ধের অজুহাতে উচ্চমূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে গিয়ে উপায়ন্তর না পেয়ে গোপনে দীর্ঘশ্বাস ফেলতে হচ্ছে। যখন এ যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্ব উত্তাল ঠিক তখনই বাংলাদেশের নেতৃত্বে অনেক বড় পরিবর্তন আমরা লক্ষ্য করেছি। গত কয়েক মাসে আমরা খেয়াল করেছি কোটা আন্দোলনে অনেক যুবক-যুবতী প্রাণ হারিয়েছে। বাংলাদেশে বিগত কয়েকমাসে ঘটে যাওয়া ঘটনা ও পরিবর্তন আমাদের কারোরই অজানা নয়।
গণসামাজিক যোগাযোগের এই যুগে বিশ্বা আজ উত্তাল, অজান্তেই অনেক সংবাদ আমাদের নজরে আসে যা আমরা চাইলেই বাদ দিতে পারি না আর সেটার অদৃশ্য প্রভাব আমাদের জীবনে পড়ে। জগতের শুরু থেকেই অমাদের সন্মানের সাথে বেঁচে থাকতে সংগ্রাম করতে হচ্ছে। আমরা সবাই কোন না কোন কিছুর সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে চলছি। যুদ্ধ আমাদের জীবনে বিপর্যয় ব্যাতিত শান্তি বয়ে নিয়ে আসে না। কিন্তু আমাদের যুদ্ধ যদি হয় শয়তানের বিরুদ্ধে তবে সে যুদ্ধ হবে অনাকাঙ্খিত এবং সে যুদ্ধের অস্ত্র হবে ভালোবাসা ,প্রেম , সহযোগিতা ও সহভাগিতা। আর সে সকল অস্ত্রই আমরা পাই যিশুর কাছ থেকে ।
অশান্তি, অরাজকতা, যুদ্ধ-বিগ্রহের পিছনে আসল কারণ
বর্তমান সময়ে যুদ্ধ-বিগ্রহের বড় একটি কারণ হলো আমরা একে অন্যকে ক্ষমা করতে পারি না। আর যখনই আমরা ক্ষমা না করে কোন ব্যক্তির প্রতি রাগ ক্ষোভ পুষে রাখি তখনই যুদ্ধের সূত্রপাত হয় । কিন্তু যিশু বলেছেন, “সাতবার নয়, সত্তরগুণ সাতবার” ক্ষমা করতে হবে। ক্রুশবিদ্ধ যিশু বলেছিলেন, “হে পিতা ওদের ক্ষমা করে দাও, ওরা কী করছে তা জানে না।” আমি ক্ষমা করলে ঈশ্বরও আমাকে ক্ষমা করবেন। আমি বেঁধে রাখলে ঈশ্বরও বেঁধে রাখবেন। খ্রিস্টধর্ম হলো ক্ষমার ধর্ম। আমাদের ক্ষমার অনুশীলন শুরু হোক পরিবার থেকে। তাই পোপ ফ্রান্সিস ২০২৫ খ্রিস্টবর্ষের শান্তিবার্তার শিরোনাম বেছে নিয়েছেন ”আমাদের অপরাধ ক্ষমা করো, শান্তি দান করো।” ক্ষমার মধ্য দিয়ে অনেক বড় সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব।
বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে আমরা সকলেই অনেক আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গেছি। এখন আর আমাদের আবেগ কাজ করে না, আমরা অন্যের দুঃখে সমব্যাথী হতে পারি না। বর্তমান সময়ে আমরা শুধু নিজের এবং পরিবারের সুখকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি। কিন্তু যিশু বলেছেন, “তুমি যদি শুধু তোমার ভাইয়ের প্রতিই করলে, তাহলে আর কীই-বা করলে।” যিশু পৃথিবীতে এসেছিলেন সব মানুষের জন্যে। আমরাও সবাই আহুত হয়েছি সবার জন্যে।
ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে হলে আগে মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে হবে। মানুষের মধ্য দিয়েই আমরা ঈশ্বরের রাজ্যে পৌঁচ্ছতে পারি। সৃষ্টিকে না ভালোবেসে স্রষ্টাকে ভালোবাসা যায় না। “ঈশ্বর সব মানুষের জন্য দিনের আলো ফুটিয়ে তোলেন।” কোনো জাতিই ছোটো নয়। কবি বলেছেন, “গাহি সাম্যের গান, মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান।” যিশু বলেছেন, “অন্যকে নিজের মতো ভালোবাস।” ঈশ্বর মানুষকে মানুষ করেই সৃষ্টি করেছেন, জাতি হিসেবে নয়।
পৃথিবীতে খুন, ধর্ষণ, গুম, অন্যায়, অত্যাচার, ঘুষ, দুর্নীতি, শোষণ ও নির্যাতন হল শয়তানের হাতিয়ার; যেগুলো পৃথিবীর মানুষের কাছ থেকে আনন্দ কেড়ে নিয়েছে। এগুলোকে পুঁজি করে শয়তান তার রাজত্ব কায়েম করতে চাচ্ছে। এগুলো আমাদের অনেক প্রিয়। যিশু খ্রিস্ট আমার আপনার জন্য এ অশান্ত পৃথিবীতে জন্ম নিয়েছেন যেন কেউ কষ্টের মধ্যে না থাকে। মনে রাখতে হবে যে, যিশু এ অশান্ত পৃথিবীতে জন্ম নিতে আগ্রহী কারণ তিনি পৃথিবীর সকল পাপীকে নিজের মতো করে ভালোবেসেছেন। কোন কষ্ট ভোগ করা তখনই সম্ভব যখন কাউকে ভালবাসা যায় । তাই যিশুর জন্ম আমাকে আপনাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে অন্যকে ভালবাসতে। জার্মানির একজন নাগরিক বলেছেন, “যেখানে ভালোবাসা রয়েছে সেখানে আশ্চর্য কাজ সাধিত হবে ” ।
বর্তমান সময়ের অস্থিতিশীল পরিবেশ ও অশান্ত পৃথিবীতে মা-মারীয়া যেন শান্তির প্রবর্তক । আমরা যদি মা-মারীয়াকে নিয়ে একটু ধ্যান করি তাহলে আমাদের প্রতি তার বার্তাগুলো জানতে পারব। পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতে মা মারীয়া আমাদের যে বার্তা প্রদান করেন তা হলো-
দয়া ও ক্ষমার মানুষ হওয়ার আহ্বান
বর্তমান পৃথিবীতে অনেক মানুষ অভাব ও অনাহারে দিনযাপন করছে। তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসা ও দয়ার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে আমরা এক শান্তিপূর্ণ ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ গঠন করতে পারি। যুদ্ধ-বিগ্রহের বড় একটি কারণ হলো আমরা একে অন্যকে ক্ষমা করতে পারি না। আর যখনই আমরা ক্ষমা না করে কোন ব্যক্তির প্রতি রাগ ক্ষোভ পুষে রাখি তখনই যুদ্ধের সূত্রপাত হয় । তাই মা মারীয়া আমাদের আহ্বান করেন দয়া ও ক্ষমার মানুষ হয়ে উঠার জন্য।
ঈশ্বরের ক্ষমতার অদৃশ্য প্রকাশ
যিশুর দীনবেশে জন্মগ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে ঈশ্বর তাঁর ক্ষমতা দৃশ্যমান বড় বড় শাসন বা শক্তির মাধ্যমে প্রকাশ করেন না বরং তিনি আসেন এক শিশুর বেশে অতি সাধারণ পরিবারে জন্ম নিয়ে।
নতুন জীবন ও পুনর্জন্মের প্রবর্তণা
বর্তমান অশান্ত পৃথিবীতে পরিবর্তিত বাস্তবতায় যিশু আমাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন ‘আমিই পথ, আমিই সত্য, আমিই জীবন। আমাকে পথ কওর না গেলে কেউ পিতার কাছে যেতে পারে না।
ভালবাসার আহ্বান
পোপ ফ্রান্সিস তার সর্বজনীন পত্রে লিখেছেন, যিশু আমাদের ভালোবেসেছেন তাঁর সমস্ত হৃদয় দিয়ে তাই আমাদেরও উচিত বিধানের শ্রেষ্ঠ আদেশ অর্থাৎ প্রতিবেশীকে ভালবাসা।
শান্তি প্রতিষ্ঠা
বর্তমান সময়ে বিশ্বব্যাপী যে জিনিসটির বড় অভাব তা হলো শান্তি। আর শান্তিরাজ খ্রিস্ট তাঁর জন্মের মধ্য দিয়ে আমাদের বলছেন, এসো আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠায় সকলে একসাথে কাজ করি।
জপমালা প্রার্থনা ও যুবাদের সাড়া প্রদান
একজন যুবকের চলার পথে রয়েছে নানা পরীক্ষা প্রলোভন। যিশু বলেন “প্রার্থনা কর, যেন প্রলোভনে না পড়।” অনেকের মনে প্রশ্ন উঠতে পারে যিশু কেন অমাদের প্রলোভন জয় করতে প্রার্থনা করতে বলেন? এই প্রশ্নটিও করা যেতে পারে: অমাদের মধ্যে এমন কে আছে , যার জীবনে কোনদিনও প্রলোভন আসেনি? নিষ্পাপ শিশুদের ছাড়া এমন কোন মানুষই খুঁজে পাওয়া যাবে না, যার জীবনে কোন প্রলোভন আসেনি । প্রলোভন আমাদের জীবনেরই একটি বাস্তবতা। কিন্তু আসলে কি করলে প্রলোভন জয় করা যায়?
প্রার্থনা হলো প্রলোভন জয় করার সবচেয়ে বড় শক্তি। অর্থবিত্ত বা সম্পত্তি দিয়ে কখনো প্রলোভন জয় করা যায় না । বুদ্ধির তীক্ষ্ণতা বা ক্ষমতা দিয়েও প্রলোভন জয় করা যায় না। প্রার্থনা হলো প্রলোভন জয় করার সবচেয়ে বড় শক্তি, যা আমাদেরকে ঈশ্বরের উপস্থিতিতে নিয়ে যায় এবং আমাদেরকে প্রলোভন জয় করতে শক্তি দান করে।
মহাত্মা গান্ধী বলেন, “আমি পণ্ডিত ব্যক্তি হতে চাই না, কিন্তু প্রার্থনার মানুষ হতে চাই।” মহাত্মা গান্ধী ধ্যানী ও প্রার্থনাশীল মানুষ ছিলেন বলেই যিশুর মত জীবনের অনেক প্রলোভন জয় করে সাধু মানুষ হতে পেরেছিলেন।
কিশোররত্ন সাধু ডমিনিক সাভিও বলতেন, “আমি সাধু হতে চাই”। তাঁর পরিবারের প্রার্থনা জীবন থেকেই তিনি এত সুন্দর স্বপ্ন দেখতে পেরেছিলেন। তিনি প্রতিদিন সবার আগে গির্জায় যেতেন । প্রার্থনার শক্তিতে ও ঐশ করুণায় বলীয়ান হয়ে তিনি শপথ করেছিলেন, “আমি মরবো, তবুও পাপ করবো না। পাপ করার চেয়ে মৃত্যু ভালো।
বর্তমানে পরিবারগুলোতে অনেক সমস্যা বিদ্যমান । আর বেশিরভাগ সমস্যার মূলে যুবক-যুবতীরা । পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও সমাজব্যবস্থার কারণে যুব সমাজ বর্তমানে বিপথে যাচ্ছে যার ফলে পরিবারে নানাবিধ সমস্যা দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও পরিবারে দারিদ্রতা, বেকারত্ব, বিবাহ-বিচ্ছেদ, অবৈধ বিবাহ, বহু বিবাহ, অনৈতিক জীবন, ব্যক্তিগত ধ্যান প্রার্থনার অভাব, পারিবারিক প্রার্থনায় শিথিলতা ও গির্জা প্রার্থনায় অনিহা বিদ্যমান । এসব সমস্যা সমাধানে যুব সমাজের জন্য প্রার্থনা একটি বড় শক্তি।
মা মারীয়ার গুণাবলী ও যুবাদের করণীয়
মারীয়া ছিলেন সহজ, সরল, আদর্শ ও বিনম্র নারী। তিনি বাধ্য ও বিনয়ী নারী। তাই যুবজীবনেও উচিত মা মারীয়ার ন্যায় সহজ-সরল ও বাধ্যতার জীবন গঠন। মা মারীয়া ছিলেন অনুগতা ও প্রার্থনাশীল নারী। আমাদের জীবনের সকল সমস্যার সমাধান হলো প্রার্থনা। তাই আমাদের প্রতিনিয়ত প্রার্থনার মানুষ হয়ে উঠতে হবে।
মারীয়া ধ্যানময়ী এবং ঐশবাণী ধারণকারিণী ও বাহিকা নারী। আমাদেরও প্রতিনিয়ত ঈশ্বর আহ্বান করেন তার বাণী প্রচার করতে তাই আমাদের হয়ে উঠতে হবে মঙ্গলবাণীর একনিষ্ঠ প্রচারক। তিনি অমলোদ্ভবা, নিষ্কলঙ্কা ও আদিপাপ বর্জিতা। আমরা কেউ আদিপাপ বর্জিতা না কিন্তু আমাদেরও চেষ্টা করতে হবে জগতের মোহ-মায়া হতে নিজেকে বিরত রাখা।
মা মারীয়া যিশুর প্রথম অলৌকিক কর্মেও সহায্যকারিণী। আমাদেরও চেষ্টা করতে হবে খ্রিস্টের বাণী অন্যের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে যিশুর একনিষ্ঠ সেবক হয়ে উঠা। যিশুর প্রচার জীবনে মারীয়া বিনম্রা ও বিশ্বস্ত নারী। আমাদেরও প্রত্যেককে বিনম্রচিত্তে যিশুর বাণী ধারণ ও বহন করতে হবে। মারীয়া ছিলেন বন্ধুসুলভ ও সুসর্ম্পকের অধিকারী তাই মায়ের গুণে গুণান্বিতা হয়ে আমাদেরকেও সকলের সাথে সুসম্পর্ক রক্ষার্থে কাজ করতে হবে ।
জপমালা প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা
যিশুর মা মারীয়া মানব মুক্তির ইতিহাসে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। মা- মারীয়ার জীবনী আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করে সঠিক ও নির্ভুল জীবন যাপন করতে। জপমালা প্রার্থনার সাথে একাত্ম হয়ে পোপগণ মারীয়াকে মণ্ডলীতে গুরুত্ব দিয়েছেন। পোপ দশম লিও (১৫১৩-১৫২১) ১৫২০ খ্রিস্টাব্দে অক্টোবর মাসকে ‘জপমালার মাস’ হিসেবে ঘোষণা দেন। পোপ ত্রয়োদশ লিও জপমালা প্রার্থনা বিষয়ে বলেন, “যে সমস্ত মন্দতা সমাজকে আক্রান্ত করে তা প্রতিহত করার জন্য জপমালা হলো একটি কার্যকর উপায়।”
কার্ডিনাল সাধু হেনরী নিউম্যান তাঁর জীবন থেকে বলেন,“ জপমালা প্রার্থনার চেয়ে আনন্দদায়ক আর কিছু নেই।” এছাড়াও যারা প্রতিনিয়ত জপমালা প্রার্থনা করে, মা মারীয়া তাদের ১৫টি প্রতিজ্ঞা পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাই ভক্তিভরে ও শ্রদ্ধা সহকারে যতবার আমরা রোজারিমালা আবৃত্তি করি ততবারই মণ্ডলীর সাথে একাত্ম হই এবং ঐশানুগ্রহ লাভের প্রীতিভাজন হয়ে উঠি। তাই আমাদের যুবা জীবনে মা মারীয়ার জপমালা প্রার্থনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এর মধ্য দিয়েই আমরা পরম পিতার প্রিয় সন্তান হয়ে উঠতে পারি।
তথ্যসূত্র
১। কস্তা, এস. দিলীপ: প্রণাম মারীয়া: দয়াময়ী মাতা, প্রতিবেশী প্রকাশনী, ঢাকা।
২। সাপ্তাহিক প্রতিবেশী, সংখ্যা ৫, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ।
পূর্বপ্রকাশ: ঐশানুগ্রহ, নবাইবটতলা রক্ষাকারিণী মারীয়ার পর্বোৎসব, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ