সংবাদদাতা: বেনেডিক্ট তুষার বিশ্বাস
শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের আন্ধারকোঠা ধর্মপল্লীতে ভারত থেকে গাব্রিয়েল সম্প্রদায়ের দুইজন ব্রাদার যাকোব পাঞ্জিকারান ও রাজেশ বারলার এসেছেন। ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে এ লক্ষ্য পূরণের জন্য ব্রাদারগণ বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে তথা রাজশাহী ধর্মপ্রদেশে এসেছেন। রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের অন্তর্গত আন্ধারকোঠা ধর্মপল্লীকে তারা তাদের এ লক্ষ্য পুরণের জন্য বেছে নেন। এরই ধারাবাহিকতায় ৯ মার্চ গাব্রিয়েল ব্রাদার সম্প্রদায়ের দুইজন ব্রাদার ভারত থেকে আন্ধারকোঠাতে আসেন।
ব্রাদার দুইজনের আগমনকে ঘিরে ধর্মপল্লীতে একটি উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। রবিবার সকালবেলা ধর্মপল্লীর প্রধানগেটে মাল-পাহাড়িয়া কৃষ্টিতে পা ধোয়ানো, মাল্যদান ও বাদ্য-বাজনার মাধ্যমে উপস্থিত রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ধর্মপাল বিশপ জের্ভাস রোজারিও ও ব্রাদারদের বরণ করে নেয় ধর্মপল্লীর খ্রিস্টভক্তগণ। এরপর ‘বারা মালের নিমু, গোটেরি বারা’ গানের তালে তালে নৃত্যের মাধ্যমে সকলকে নিয়ে যাওয়া হয় গির্জায়। খ্রিস্টযাগে বিশপ জের্ভাস রোজারিও বলেন, দীক্ষাস্থানের মাধ্যমে আমরা যে বিশ্বাস লাভ করেছি তা যেন আমরা ভুলে না যাই। তিনি আরো বলেন, এই প্রায়শ্চিত্তকালে আমাদের প্রার্থনা, উপবাস এবং দানের কাজ করতে হবে। আমরা যখন ঈশ্বরের অবাধ্য হই তখন শয়তানের পূজা করি।
একজন ব্রাদার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, এইভাবে স্বাগতম জানানোর জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং আমি অত্যন্ত খুশি। আমি সবাইকে একটাই কথা বলতে চাই অন্ধকার দূর করার উত্তম পন্থা হলো শিক্ষা। শিক্ষার অনুপস্থিতিতে আমাদের মনের মধ্যে একটা অদৃশ্য ভয়ের সৃষ্টি হয় যা আমাদের সামনের পথে এগিয়ে যেতে বিশাল পাহাড় সমান বাঁধা সৃষ্টি করে। আর এই বাঁধার পাহাড় ভাঙ্গতে শিক্ষা খুবই প্রয়োজন। তোমাদের প্রত্যেকের মধ্যে কোনো না কোনো সম্ভাবনা আছে।
পাল পুরোহিত ফাদার প্রেমু রোজারিও উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্রতিনিয়তই ঈশ্বর বিভিন্নভাবে তাঁর ভালবাসার প্রকাশ করে যাচ্ছেন। আজকে আমরা আমাদের ধর্মপল্লীতে ব্রাদারদের পেয়েছি। ব্রাদারদের সম্প্রদায় এ পর্যন্ত বিশ্বের ৫৫টি দেশে তাদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তাই বলবো আমাদের ধর্মপ্রদেশ তথা আমাদের এ আন্ধারকোঠা ধর্মপল্লীর মানুষ অনেক ভাগ্যবান যে বাংলাদেশে প্রথম সেবাকেন্দ্র হিসেবে ব্রাদারগণ আমাদের বেছে নিয়েছেন।